#maxvalue.media update - 11-04-24 google.com, pub-1380520198379494, DIRECT, f08c47fec0942fa0 #maxvalue.media update end - 11-04-24 কোষ কাকে বলে? উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য?

কোষ কাকে বলে? উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য?

কোষ কাকে বলে ? সকল সজীব ক্রিয়া-কলাপের একক এবং কোনরূপ মাধ্যম ছাড়াই যে নিজের প্রতিকৃতি তৈরি করতে পারে তাকে বলা হয় কোষ।  

মূলত এই আর্টিকেলে কোষ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত ভাবে আরও অনেক কিছু জানবো । তার পাশাপাশি কোষের কাজ, কোষের গঠন, কোষের প্রকারভেদ এবং উদ্ভিদকোষ ও প্রাণীকোষ মধ্যে পার্থক্যসমূহ জানার চেষ্টা করব। 

তার আগে চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক

 কোষ

১৯৬৯ সালে লোই এবং সিকেভিজ নামক দুইজন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথমবারের মতো কোষ আবিষ্কার করেন এবং কোষের সংজ্ঞা প্রদান করেন। 

এই সংজ্ঞা মতে, কোষ হলো জীবের দেহ গঠনের একক এবং তারা কোন ধরনের মাধ্যম ছাড়াই সকল জীবজ ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করতে পারে। এগুলো মূলত আকারে খুবই ক্ষুদ্র এবং বেশ কয়েক ধরনের উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয় ।

কোষের বেশ কয়েক ধরনের কোষ উপাদান থাকে যেগুলো আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব ।

এতক্ষণে আমরা জানলাম কোষ কাকে বলে, এবার আমরা জানবো কোষের প্রকারভেদ। 

কোষের প্রকার

১) উদ্ভিদ কোষ

সজীব উদ্ভিদ যে কোষ দ্বারা গঠিত হয় তাকে উদ্ভিদকোষ বলা হয়। উদ্ভিদ কোষের গঠন তুলনামূলক জটিল এবং প্রাণী কোষের সাথে এই কোষের বেশ কিছু বৈসাদৃশ্য রয়েছে ।

মূলত কোষের এই ধরনের বৈসাদৃশ্য গুলো খেয়াল রেখেই কোষের প্রকারভেদ সম্পন্ন হয় ।

২) প্রাণী কোষ

জীবিত প্রাণীর দেহ যে কোষ দ্বারা গঠিত হয় তাকে প্রাণীকোষ বলা হয় । প্রাণী কোষের গঠনও বেশী জটিল । সাধারণত এই ধরনের কোষ দ্বারা গঠিত কোন জীবকে অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই কোষ দ্বারা গঠিত টিস্যুতন্ত্রের গঠন বেশ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। 

মূলত প্রাণীকোষ ও উদ্ভিদকোষ কাকে বলা হয় এগুলো তাদের কোষে উপস্থিত উপাদানসমূহের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও থাকে কিছু গঠনগত ভিন্নতা। 

উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য:

কোষ কাকে বলে

উদ্ভিদ কৌশল প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য নিম্নে বর্ণনা করা হলো। 

  • উদ্ভিদকোষ আকারে তুলনামূলক অনেক বড় হলেও প্রাণী কোষ সেই অনুপাতের ছোট হয় ।
  • উদ্ভিদ কোষের প্রাচীর বিভিন্ন ধরনের জড় বস্তু দ্বারা গঠিত। বলে রাখা ভালো কোষ প্রাচীর উদ্ভিদ কোষের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। তবে প্রাণী কোষে কোন ধরনের কোষ প্রাচীর থাকে না, যদি থেকেও থাকে তবে তা নিম্নবর্গ প্রাণীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। 
  • উদ্ভিদ দেহে কোষগহবর লক্ষ্য করা যায় তবে প্রাণীদেহে কোন ধরনের কোষগহ্বর লক্ষ্য করা যায় না। তবে যদি প্রাণীদেহে কোষগোহবর দু একটা থেকেও থাকে তবে তা আকৃতিতে বেশ ছোট । এবং অত্যাধুনিক মাইক্রোস্কোপ যন্ত্র ছাড়া তা দেখা সম্ভব নয় । এ সকল কোষগহবরের মধ্যে মূলত বিভিন্ন ধরনের জৈব এসিড,লবণপানি,ক্ষার সংরক্ষিত থাকে এবং উদ্ভিদ পরবর্তীতে তার চাহিদা মোতাবেক ব্যবহার করে। 
  • প্রাণীদেহে গলজি বস্তু থাকলে উদ্ভিদ দেহে গলজি বস্তু থাকে না। গলজি বস্তু মূলত সেই উপাদান যেটিতে কোষের বিভিন্ন অংশের পানি নিঃসরণের কাজ ঘটে থাকে। এছাড়াও অনেক সময় গলজি বস্তু প্রোটিন সংশ্লেষণের কাজ করে। অনেক বিপাকিয় কার্যক্রমের সাথেও জড়িত থাকে গলজি বস্তু ।

পার্থক্য

  • প্রাণীকোষে নিউক্লিয়াস একদম কেন্দ্রে অবস্থান করলেও উদ্ভিদকোষে নিউক্লিয়াসের অবস্থানটি কষগহবরের আশপাশে কোথাও হয়ে থাকে। উদ্ভিদ কোষের নিউক্লিয়াস প্রাণী কোষের চেয়ে তুলনামূলক আকারে বড় হয় ।
  • প্রাণীকোষে লাইসোজোম নামের একটি কোষ উপাদান রয়েছে যা উদ্ভিদ কোষে অনুপস্থিত। এই লাইসোজোম মূলত প্রাণী কোষ কে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে থাকে । লাইসোজোমকে মূলত একটি শক্তিশালী পর্দা দ্বারা আবৃত রাখা হয় যাতে এর ভেতরকার রোগ জীবাণু হজমকারি তরল বাইরে বের হয়ে আসতো না পারে। শরীরে যদি কোন কারনে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়ে থাকে তাহলে এই পর্দা গুলো ফেটে যায়। এবং ধীরে ধীরে কোষ রোগ জীবাণুর দখলে চলে যায়। এক পর্যায়ে কোষের মৃত্যু ঘটে ।
  • তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হল প্লাস্টিড। প্লাস্টিড হলো এমন এক ধরনের কোষ অঙ্গানু যা কেবলমাত্র উদ্ভিদকোষে পাওয়া যায়। এটির মাধ্যমে মূলত উদ্ভিদ তার খাদ্য তৈরি করতে পারে । এছাড়াও খাদ্য সংরক্ষণ, এবং উদ্ভিদ দেহকে বর্ণময় করতে কাজ করে প্লাস্টিড। 

প্লাস্টিডকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। ক্লোরোপ্লাস্ট,ক্রোমোপ্লাস্ট এবং লিউকোপ্লাস্ট ।

আমরা কোষ কাকে বলে তা জেনেছি । প্রাণী কোষের এবং উদ্ভিদ কোষের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে জেনেছি । এবার আমরা যাতে চলেছি কোষের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান মাইটোকনড্রিয়া সম্পর্কে যেটিকে কোষের শক্তি ঘর বলা হয়ে থাকে ।

মাইট্রোকন্ডিয়া কাকে বলে ?

কোষ কাকে বলে

মাইট্রোকনড্রিয়া হলো বিস্তর বিশিষ্ট একটি কোষ উপাদান যেটি কোষের শক্তি উৎপাদনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । চলুন জেনে নেওয়া যাক মাইটোকনড্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত। 

মাইটোকনড্রিয়া কাকে বলে?মাইটোকন্ডিয়া কিভাবে কাজ করে?

মাইটোকনড্রিয়া কাকে বলে তা আমরা জেনেছি । ১৮৯৮ সালে বেন্ডা নামের একজন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম বারের মতো এই কোষ অঙ্গাণুটি আবিষ্কার করেন ।

মাইটোকনড্রিয়া কোষের পাওয়ার হাউস বলা হয় কেন?

মূলত আমাদের দেহে শ্বসনের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনের মোট চারটি ধাপ রয়েছে । যার মধ্যে দুই নম্বর এবং চার নম্বর ধাপটি মাইটোকন্ডিয়াতে সংঘটিত হয়। 

এই দুইটি ধাপের মধ্যে একটি হলো ক্র্যাবস চক্র এবং আরেকটি হলো ইলেকট্রন প্রবাহ তন্ত্র ।

ক্রেবস চক্রে প্রচুর পরিমাণে শক্তি উৎপন্ন হয় । এবং ইলেকট্রন প্রবাহ তন্ত্র শ্বসন প্রক্রিয়ার যে সকল উপজাত উৎপন্ন হয়েছিল সেগুলো শক্তিশালী ইলেকট্রন ও শক্তিতে পরিণত হয়।

কোষ বিভাজন কি ও কত প্রকার?

যে প্রক্রিয়ায় কোষ তার প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে তাকে কোষবিভাজন বলা হয় । কোষ বিভাজন মূলত একটি সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া হলেও একই সময়ে একই সাথে বেশ কয়েকটি কোষবিভাজিত হয় বলে প্রাণীদেহ দ্রুত বৃদ্ধি পায় ।

কোষবিভাজন মূলত দুই প্রকার। মিয়োসিস কোষ বিভাজন এবং মাইটোসিস কোষ বিভাজন। 

মাইটোসিসকোষ বিভাজন: যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া জীবের দেহ কোষে হয়ে থাকে তাকে মাইটোসিসকোষ বিভাজন বলা হয় । এবং যেমন তাকে আমরা সবাই জানি যে মাইটোসিস কোষ বিভাজনে উৎপন্ন কোষে নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃ কোষের অনুরূপ হয়ে থাকে ।

মিয়োসিস কোষ

যৌনজনন অথবা জন:ক্রম দেখা যায় এমন কোষের কোষ বিভাজনকে মিয়োসিস কোষবিভাজন বলা হয়। প্রাণী এবং উদ্ভিদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মিয়োসিস কোষবিভাজনের গুরুত্ব অপরিসীম । মূলত এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি নতুন প্রাণীদের সৃষ্টি হতে পারে ।

মূলত এখানে মাতৃ কোষ বিভাজিত হয়ে দুইটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে। এবং এই অপত্য কোষগুলো ক্রোমোজোম সংখ্যা মূলত মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে থাকে । তবে পরবর্তীতে যখন এই দুইটি অপত্য কোষ একত্রিত হয়ে একটি জাইগট তৈরি করে, যেখানে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান হয়ে থাকে । 

জনন কোষ

যে সকল কোষ সরাসরি জনন কার্যে অংশগ্রহণ করে থাকে সেই সকল কোষগুলোকে বলা হয় জননকোষ । জননকোষ কে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে । যার মধ্যে একটি পুং জনন কোষ এবং অপরটি স্ত্রী জনন কোষ । 

পৌঁছানোর কোষ এবং স্ত্রীর জনন কোষের মিলনের মূলত জাইগট সৃষ্টি হয়। এবং এ জায়গাটি ধীরে ধীরে বিভাজিত হয়ে হয়ে একটি নতুন প্রাণের আবির্ভাব ঘটে । 

পুং জননকোষ গুলোর অর্ধেক এক্স ক্রোমোজোম সমৃদ্ধ এবং বাকি অর্ধেক ওয়াই ক্রোমোজোম সমৃদ্ধ হয়ে থাকে । তবে স্ত্রী জননকোষ সবকটি এক্স ক্রোমোজোম বিশিষ্ট হয় । যেহেতু উভয় পক্ষ থেকে যেকোনো একটি কোষ জনন কার্যে অংশগ্রহণ করে, কাজেই পুং জননকোষের ওপর নির্ভর করে জাইগোটের লিঙ্গ নির্ধারিত হয়ে থাকে। যদিও সম্প্রতি সময়ে বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক যুক্তি দ্বারা এটিকে অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করা হয়েছে। তবুও এখন অব্দি এটি সবার কাছে স্বীকৃত ।

আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় ছিল কোষ কাকে বলে এবং এ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যাদি। আর্টিকেলের মাধ্যমে পাঠক কিঞ্চিত উপকৃত হলে সেটি আমাদের অনেক বড় সার্থকতা।

আয়নিক বন্ধন কাকে বলে? সমযোজী বন্ধন কাকে বলে?

প্লবতা কাকে বলে? প্যাসকেলের সূত্র । চাপ কি?

কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম যা আপনার অবশ্যই জানা প্রয়োজন!

Leave a Comment