আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য সুষম খাদ্য তালিকা এ বিষয়টি জানা আবশ্যক। সুস্থ থাকার প্রধান নিয়ামক সুষম খাবার। খাবারে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন ও খনিজ লবণ পরিমাণমতো থাকলে সেই খাবারকে সুষম খাবার বলা হয়। খাবার শুধু সুষম হলেই চলবে না, খেতে হবে সময়মতো।দিনে তিনবার—সকাল, দুপুর ও রাতে পরিমাণমতো খাবার খেতে হবে।
সুষম খাদ্য তালিকা | সুষম খাদ্যের উপাদান
খাদ্যের সহায়ক উপাদান তিনটি দিক বিবেচনা করে, শাক – সবজি , ফলমূল , আমিষ , স্নেহ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যকে সাহাপানাের আনা মাধ্যমে তৈরি কাল্পনিক পিরামিডই হলাে সুষম খাদ্য পিরামিড । এই পিরামিডের মাধ্যমে একজন কিশাের বা কিশােরী , প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষ বা মহিলার সুষম খাদ্য তালিকা বাছাই করা হয় ।
সুষম খাদ্যের উপাদান ৬ টি। এগুলো হলো : শর্করা বা শ্বেতসার, আমিষ বা প্রোটিন, ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ, খনিজ লবণ, ফ্যাট বা চর্বি বা পানি। খাদ্যের এই উপাদান গুলো যেসব খাদ্য বিদ্যমান থাকে সেসব খাদ্য সুষম খাদ্য
আমিষ: মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বাদাম, কলিজা ও বীজজাতীয় খাবার আমিষের প্রধান উৎস। প্রাণিজ আমিষের উৎস মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি।
শর্করা: সাধারণত ভাত, রুটি, চিড়া, মুড়ি, খই, ওটস, নুডলস, আলু, পাস্তা জাতীয় খাবার শর্করার প্রধান উৎস। শর্করাজাতীয় খাবারের মধ্যে বিশেষত জটিল শর্করা, যেমন গমের আটার রুটি, লাল চাল, ওটস—ইত্যাদি।
ভিটামিন ও খনিজ লবণ: শাক-সবজি ও ফলমূল ভিটামিন ও খনিজ লবণের প্রধান উৎস। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে এই দুটি খাদ্য উপাদানই আমাদের জন্য খুব জরুরি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, দেশীয় ফলকে প্রাধান্য দেয়া জরুরি।
স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাবার: তেল, ঘি, মাখন স্নেহ বা চর্বিজাতীয় খাবার। বিশেষত হেলদি ফ্যাট, যেমন: অলিভ, সরিষা, সানফ্লাওয়ার বা বাদামের তেলকে প্রতিদিনের খাবারের মাঝে প্রাধান্য দেয়া প্রয়োজন।
পানি: শারীরিক ও মানসিক কার্যক্রমকে নির্বিঘ্ন রাখতে দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিৎ।
দুধ ও দুধজাতীয় খাবার: দুধ, দই, ছানা, পনির দেহের ক্যালসিয়াম, ফসফরাস সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদানের পাশাপাশি ও আমিষের চাহিদাকেও পূরণ করে থাকে।
আরো পড়ুন – সুষম খাদ্য কাকে বলে | সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্য
নিম্ন লিখিতো নিয়ম মেনে একটি সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি করতে হবে। যথা-
- প্রথমত খাদ্যের বিভিন্ন উপাদানগুলো ব্যক্তিবিশেষের বয়স, কর্ম ও শারীরিক অবস্থাভেদে যে বিভিন্ন ধরনের হয় সেদিকে লক্ষ রেখে খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করা।
- দৈহিক প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্যের ক্যালরি তাপ শক্তির পরিমাণ নিশ্চিতকরণ।
- খাদ্যে দেহ গঠনের ও ক্ষয়পূরণের উপযোগী আমিষ সরবরাহ করা।
- খাদ্যে যথোপযুক্ত ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানির উপস্থিতি।
- বিভিন্ন খাদ্যের পুষ্টিমান ও খাদ্যের শ্রেণিবিভাগ সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন। প্রথমে খাদ্যের মূল বিভাগগুলো থেকে খাদ্য বাছাই করা। খাদ্য বাছাইয়ে বৈচিত্র্য থাকা।
- খাদ্য তালিকা প্রস্তুতির সময় খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে সচেতন থাকা।
- ব্যক্তি ও পরিবারের আর্থিক সঙ্গতির দিক ভেবে খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করা।
- ঋতু ও আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করা।