চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম | চুক্তিনামা লেখার নিয়ম

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে, চুক্তিপত্রের ব্যবহার বহুলাংশে বেড়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়াতে প্রায় সব ধরনের লেনদেন জনিত ব্যাপারে চুক্তিপত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। জমি ক্রয়, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন, রিকুজেশান বিভিন্ন ক্ষেত্রে চুক্তিপত্রের ব্যবহার জীবনকে করে তুলেছে সহজ ও স্বচ্ছ।

অনিশ্চয়তা কমিয়ে পারস্পারিক নির্ভরতার ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে।এছাড়া,আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অথবা যেকোন সমঝোতায় চুক্তিপত্র ব্যবহার করার ফলে উভয় পক্ষই দায়বদ্ধ থাকেন। এক্ষেত্রে কেউ প্রতারণার শিকার হলে, অপর পক্ষের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের সুযোগ থাকে। লেনদেন পরবর্তী সময়ে তাই যেকোন ধরনের হয়রানি ও প্রতারণামূলক ঘটনা এড়াতে চুক্তি পত্রের জুড়ি নেই। আর এই কারনেই চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে অবগত থাকা বর্তমান সময়ের জন্য জরুরি বিষয়।

চুক্তিপত্র কি

চুক্তিপত্র মূলত এমন একটি লিখিত ব্যবস্থা যেখানে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির সম্মতিতে কোন বিষয়ে আরোপিত শর্তে উভয়পক্ষ দায়বদ্ধ থাকেন।

চুক্তি এবং চুক্তিপত্র নিয়ে ১৮৭২ সালে আইন প্রণয়ন করা হয় এবং সেই আইনে বলা হয়, একজন সুস্থ, স্বাভাবিক মস্তিষ্কের অধিকারী ব্যক্তি এবং অবশ্যই আইনের দৃষ্টিতে সাবালক হতে হবে শর্তে আরোপিত হয়ে যদি অন্য কোন একই শর্তে আরোপিত ব্যক্তির সঙ্গে কোনো বস্তু অর্থের বিনিময়ে কিংবা কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বস্তুর বিনিময়ে আদান প্রদানের জন্য লিখিতভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোন নতুন উদ্যোগের শামিল হয়, সেই পুরা প্রক্রিয়াকে চুক্তি বলে। এবং চুক্তির জন্য উভয়পক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত শর্তবলীর লিপিকেই চুক্তিপত্র হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়ে থাকে।

চুক্তিপত্রের প্রয়োজনীয়তা

  • সৃষ্টির শুরু থেকেই,মানুষের মধ্যে বিনিময় প্রথার প্রচলন হয়েছে।সামাজিক জীব হওয়ায় মানুষ একে অপরের উপর নিবিড়ভাবে নির্ভরশীল।লেনদেন তাই এখানে নৈমত্তিক বিষয়। লেনদেনের বিষয় চুক্তিপত্র করা থাকলে তা সুনিশ্চয়তা প্রদান করে।ভবিষ্যতে যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সহজ হয়।
  • চুক্তিপত্র থাকলে উভয়পক্ষ ই দায়বদ্ধ থাকে।ফলে যেকোন পক্ষ ই সুষ্ঠুভাবে শর্তসমূহ পালন করেন।
  • যেহেতু সাক্ষীসমূহের উপস্থিতিতে চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয় তাই উভয়পক্ষ সামাজিকভাবেও দায়বদ্ধ থাকেন।
  • সর্বনিম্ন ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র করা হয় তাই যেকোন শর্তভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের সুযোগ থাকে।

সম্পর্কিত আর্টিকেল ;-

ইসলাম ধর্মে চুক্তিপত্রের গুরত্ব ও বিধান

আশ্চর্যের ব্যাপার হল, ইসলাম ধর্মে চুক্তিপত্র সম্পর্কিত একটি আকাট্য দলিল নাজিল হয়েছে। লেনদেন পরবর্তী অনাকাংখিত পরিস্থিতি এড়াতে লেনদেন করার পূর্বে উপযুক্ত স্বাক্ষীর উপস্থিতে চুক্তিপত্র সম্পাদনের জন্য কোরআনে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋনের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না। আল্লাহ তাকে যেমন শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া। এবং ঋন গ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং সে যেন স্বীয় পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও বেশ কম না করে।

অতঃপর ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ হয় কিংবা দূর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লিখাবে। দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন ডাকা হয়, তখন সাক্ষীদের অস্বীকার করা উচিত নয়।

তোমরা এটা লিখতে অলসতা করোনা, তা ছোট হোক কিংবা বড়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এ লিপিবদ্ধ করণ আল্লাহর কাছে সুবিচারকে অধিক কায়েম রাখে, সাক্ষ্যকে অধিক সুসংহত রাখে এবং তোমাদের সন্দেহে পতিত না হওয়ার পক্ষে অধিক উপযুক্ত। কিন্তু যদি কারবার নগদ হয়, পরস্পর হাতে হাতে আদান-প্রদান কর, তবে তা না লিখলে তোমাদের প্রতি কোন অভিযোগ নেই। তোমরা ক্রয়-বিক্র য়ের সময় সাক্ষী রাখ। কোন লেখক ও সাক্ষীকে ক্ষতিগ্রস্ত করো না। যদি তোমরা এরূপ কর, তবে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহকে ভয় কর তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন। [ সুরা বাকারা ২:২৮২ ]

চুক্তিপত্র ব্যবহারের ক্ষেত্র

যেহেতু, মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক অনেকাংশে উন্নত হয়েছে তাই বলা যায় সম্প্রসারিত হয়েছে লেনদেনের ক্ষেত্র ও।এবং লেনদেনকে নিরাপদ করতে চুক্তিপত্র অত্যন্ত কার্যকর।আসুন জেনে নিই কি কি ক্ষেত্রে চুক্তিপত্রের ব্যবহার করা যায়ঃ

যেকোন ধরনের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে
যেকোন সম্পদ (বস্তু বা জমি)ক্রয় বিক্রয়,লীজ কিংবা ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে
ব্যবসায়িক কাজে অংশীদারি চুক্তিপত্র
সামাজিক বিষয়ে অঙ্গীকার মূলক চুক্তিপত্র
দ্রব্য আমদানি বা রপ্তানির ক্ষেত্রে

চুক্তিতে আবদ্ধ হবার সাধারণ শর্ত

চুক্তিপত্র তৈরী করার জন্য ১৯৭২ সালে প্রণীত আইন অনুযায়ী সুস্থ,সাবালক,ও স্বাভাবিক ব্যক্তির কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সাথে লেনদেনের ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া চুক্তিপত্র কার্যকর হবার জন্য নিম্নোক্ত সাধারন শর্তসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ঃ

  • চুক্তি সম্পাদনকারী উভয় ব্যক্তিকে অবশ্যই আইনের দৃষ্টিতে ১৮ উর্ধ্ব, সুস্থ মস্তিস্ক সম্পন্ন ব্যক্তি হতে হবে।
  • প্রত্যেক চুক্তিতে অবশ্যই একজন অপর একজনকে প্রস্তাব প্রদান করবে এবং অপর ব্যক্তি উক্ত প্রস্তাব গ্রহণে সম্মতি জ্ঞাপন করে কোন কিছু প্রতিদান করতে হবে।
  • প্রতিদান ছাড়া কোন চুক্তি ই কার্যকর হবে না।
  • সর্বনিম্ন ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করতে হবে।নচেৎ,পরবর্তীতে প্রয়োজনে আইনি সহযোগীতা পাওয়া যাবে না।

চুক্তি পত্র লেখার নিয়ম বা চুক্তি নামা লেখার নিয়ম

চুক্তিপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটি স্পষ্ট যে,একটি পরিপূর্ণ চুক্তিপত্র বড় রকমের আর্থিক দূর্যোগ হতে মানুষকে রক্ষা করে।তাই যতোটা পারা যায় ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রাতি বিষয় সমূহের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।

  • চুক্তিপত্রে যাদের সাথে যে বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হবেন তা সুস্পষ্টভাবে অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে।এছাড়া উক্ত ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে পরিষ্কার ভাবে চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকা জরুরি।কোন ফাঁক ফোকর থাকলে তা ভবিষ্যতের ভোগান্তির কারন হতে পারে।
  • চুক্তিপত্রে অবশ্যই চুক্তিসম্পাদনকারীদের পূর্ণ পরিচয় ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।আর যদি কোপ্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হোন,তবে সে প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
  • চুক্তিতে আরোপিত শর্ত উল্লেখপূর্বক চুক্তিসম্পাদনের তারিখ থাকতে হবে।যদি চুক্তিপত্রটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য হয়ে থাকে তবে অবশ্যই চুক্তি শুরুর তারিখ ও শেষ হবার সময় সীমা সম্পর্কে পরিষ্কার ভাবে লিখিত থাকতে হবে।
  • ব্যবসায়িক অংশীদারত্বের বিষয়ে চুক্তি হলে কার পূঁজির অংশ ও লভ্যাংশ কতো হবে সেটা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে।ব্যবসা ও লাভের বন্টন প্রভৃতির বিষয়ে উল্লেখ করতে হবে।কোন কারনে ঝামেলার সৃষ্টি হলে তা মীমাংসার পথ সম্পর্কেও চুক্তিতে লিখতে হবে।যা মানতে চুক্তিসম্পাদনকারী প্রতি ব্যক্তি বাধ্য থাকবেন।
  • বর্তমানে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন না করে বিরোধ নিষ্পত্তিতে আলোচনামূলক মীমাংসাকে উৎসাহিত করা হয়,তাই চুক্তিপত্রে এ সম্পর্কিত একটি শর্ত আরোপ করা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, সালিস আইন ২০০১ এর মাধ্যমে নিষ্পত্তির বিধানটি চুক্তিনামার রাখা যেতে পারে।
  • চুক্তিসম্পাদনকারী ব্যক্তিগণের প্রত্যেকে সাক্ষর আবশ্যিকভাবে চুক্তিনামায় নিতে হবে।তবে অবশ্যই ব্যক্তিকে আইনত সাবালক ও সুস্থ, স্বাভাবিক মস্তিষ্কের হতে হবে।নাবালক,পাগল,দেশদ্রোহী,মন্ত্রী,রাষ্ট্রপতি,দেউলিয়া ব্যক্তি,বিদেশী শত্রু প্রভৃতি ব্যক্তির সাথে চুক্তিনামা গ্রহনযোগ্য হবে না।

সম্পর্কিত আর্টিকেল ;-

চুক্তি পত্র লেখার নিয়ম
চুক্তি পত্র লেখার নিয়ম

টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম নমুনা

অংশীদারী চুক্তিপত্র দলিল

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

অত্র চুক্তি নামা দলিল অদ্য ১০/০৪/২০১৩ ইং তারিখে নিম্ন লিখিত পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সম্পাদিত হইল।

মোঃ রবিউল আলম, জন্মতারিখ-০১/০৫/১৯৬৮ ইং,
পিতা-মৃত মোঃ আবদুর রউফ মিয়া, মাতা-নাজমা বেগম,
ঠিকানাঃ১০/৫ স্টাফ কোয়ার্টার রোড,কেরানীপাড়া,রংপুর।
জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-ব্যবসা।—— ১ম পক্ষ।

মোহনলাল রায়
পিতা-মৃত কানাই লাল রায়, সাকিন-৩৬ যুগীনগর লেন, ওয়ারী, থানা-সূত্রাপুর, জেলা-ঢাকা, জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-সনাতন, পেশা-ব্যবসা।—— ২য় পক্ষ।

পরম করুনাময় মহান আল্লাহ তা’আলার নামে শুরু করছি।অত্র অংশীদারী চুক্তিপত্র দলিলের আইনানুগ বয়ান আরম্ভ করিতেছি। যেহেতু আমরা সকল পক্ষগণ পরস্পর পরস্পরকে দীর্ঘ দিন যাবত চিনি ও জানি। এমতাবস্থায় আমরা সকল পক্ষগণ একত্রে ব্যবসা পরিচালনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় আমরা উপরোক্ত পক্ষদ্বয় একমত হইয়া আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরসনকল্পে অদ্য হাজিরান মজলিশে স্বাক্ষীগণের মোকাবেলায় এই মর্মে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিম্ন লিখিত শর্তাবলীর উপর আস্থা রাখিয়া ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরসনকল্পে আমরা ১ম ও ২য় পক্ষদ্বয় অত্র ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিলে আবদ্ধ হইলাম।শর্তাবলীঃ

  • ১।নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য,খাদ্যদ্রব্য,ভোগ্যপণ্য প্রভৃতি বিক্রয়ের বিপণী সুপণ্য ডিপার্টমেন্টাল স্টোর- প্লটনং-৩৭,রংপুর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট,রংপুরে বিদ্যমান ব্যবসাটি এখন হইতে যৌথভাবে পরিচালিত হবে।
  • ২। অত্র দলিল সহি সম্পাদনার তারিখ হইতে অত্র অংশীদারী ব্যবসার মেয়াদ শুরু হইবে এবং আইনানুগ রুপে অবসান না হওয়া পর্যন্ত অত্র ব্যবসা চলিবে।
  • ৩। ব্যবসার মূল অফিস ঢাকা শহরের অবস্থিত থাকিবে, যাহার ঠিকানাঃ-১০২ দয়াগঞ্জ, সূত্রাপুর, জেলা-ঢাকা এবং অন্যান্য স্থানে উভয় পক্ষের লিখিত অনুমোদন লইয়া শাখা অফিস খোলা যাইবে।
  • ৪। (ক) ব্যবসার অংশীদারগণের পুঁজি ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা তন্মধ্যে ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে বিয়োগ করিবে এবং অংশীদারদের মালিকানার অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে থাকিবে।

(খ) ব্যবসার এককালীন পুঁজি ছাড়াও যে কোন সময় ব্যবসার উন্নতির জন্য পুঁজির পরিমাণ হ্রাস বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

  • ৫। আর অংশীদারী ব্যবসার লাভ ক্ষতির অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে বন্টন করা হইবে।
  • ৬। প্রত্যেক (১) মাসে অন্তর অন্তর অত্র ব্যবসার লাভ ক্ষতির হিসাব প্রস্তুুত করা হইবে অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে হিস্যা পক্ষগণের উপর ন্যস্ত হইবে তবে প্রতি মাসে লাভের শতকরা অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে অত্র ব্যবসা রির্জাভ ফান্ডে জমা থাকিবে।
  • ৭। আনুপাতিক ভিত্তিতে উভয় পক্ষ ব্যবসা সংক্রান্ত দায়দায়িত্ব পালন করিবে, তবে উভয় পক্ষের সর্বসম্মতিক্রমে জনাব মোঃ সামসুল আলম ব্যবস্থাপনা অংশীদার হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন। তিনি সভায় সভাপতিত্ত্ব করবেন এবং তাঁর স্বাক্ষরে ব্যাংক বিসিকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চিঠিপত্র এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজে ব্যবস্থাপনা অংশীদার জনাব মোঃ সামসুল আলমকে বিসিক ঢাকা (কেরাণীগঞ্জ) শিল্প নগরীতে প্লট ক্রয় বিক্রয়ের সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হলো এবং তাকে দলিল সম্পাদনের ক্ষমতা দেয়া হইল।
  • ৮। এই চুক্তিনামায় যে কোন পরিবর্তন, পরিবর্ধন করিবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে উভয় পক্ষের সর্বসম্মতিক্রমে উহা সম্পন্ন হইবে।
  • ৯। কেবলমাত্র উভয় পক্ষের সম্মতিতে এই চুক্তিনামা বাতিল বা ব্যবসা বন্ধ ঘোষনা করা যাইবে।
  • ১০। ব্যবসা চলাকালিন সময়ে আল্লাহ না করুন যদি কোন পক্ষের কেউ মৃত্যুবরন করেন তাহা হইলে মৃত্যুব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ মৃত্যুবরনকারী অংশীদারের অংশ ভোগ করিবেন এবং ঐ অংশের অংশীদার হিসাবে গন্য হইবেন ও সকল প্রকার দায়দায়িত্ব পালন করিবেন।

এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে ,সুস্থ শরীরে অন্যের বিনা প্ররোচনায় আমার উল্লেখিত পক্ষগন নিম্মে উল্লেখিত স্বাক্ষীগণের সম্মুখে নিজ নিজ স্বাক্ষর করিয়া অত্র অংশীদারী দলিল সম্পাদন করিলাম ।অত্র দলিল কম্পোজকৃত এবং স্বাক্ষী ( ৩ ) জন বটে।স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর ও ঠিকানাঃ-

১।

২।

৩।

১ম পক্ষের স্বাক্ষর২।
——————
২য় পক্ষের স্বাক্ষরমুসাবিদাকারক (হাসিব)
সুপণ্য লিমিটেড অফিস,রংপুর
সনদ নং-১৪**

সম্পর্কিত আর্টিকেল ;-

দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র নমুনা

“দোকান ঘর ভাড়া নেবার জন্য চুক্তিপত্র”

১ম পক্ষঃ মালিক পক্ষঃ ২য় পক্ষঃ ভাড়াটিয়াঃ
মোঃআসাদুজ্জামান লিটন(৩৩) মোঃ সাইদার রহমান (৩৭)
পিতা-মোঃ খুরশিদুজ্জামান খাজাহ পিতা- মৃতঃ নূর আলম
সাং-সুটিপাড়া ( চৌধুরী পাড়া) সাং-ডাকবাংলা রোড( নীল প্রতিভা পাড়া)
থানা ও জেলা-নীলফামারী জেলা-নীলফামারী

আমি ১ম পক্ষ আমার নিম্ন তফশীল বর্ণিত বিত্তান্তের উপর নির্মিত দোকান ঘর ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব করিলে ২য় পক্ষ তাহা ভাড়া নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করে। নগদ ৩০০০০০ (তিন লক্ষ) টাকা জামানতের বিনিময়ে নিম্ন বর্নিত শর্ত সাপেক্ষে দোকান ঘরটি ২য় পক্ষকে ভাড়া প্রদান করিলাম

শর্ত গুলি নিম্নরুপঃ

  • ১। জামানত স্বরুপ ৩০০০০০(তিন লক্ষ টাকা) টাকা যাহা ফেরত যোগ্য।
  • ২। প্রতি ইংরেজি মাসের ০৩হইতে ৮ তারিখের মধ্যে ভাড়া পরিশোধ যোগ্য।
  • ৩। গোডাউন ঘর তিনটি ৫ বছরের জন্য ২য় পক্ষের নিকট ভাড়া দেওয়া হল।
  • ৪। ১ম পক্ষ চুক্তি কালীন সময়ে কাহারো নিকট দোকন ঘরটি ভাড়া প্রদান করিতে পারবে না।
  • ৫। ২য় পক্ষ ১ম পক্ষকে প্রতি মাসে …..২০০০০……../- টাকা করে ভাড়া প্রদান করিবে।
  • ৬/বিদ্যুৎ সংযোগ সহ বিদ্যুৎ বিল ২য় পক্ষ বহন করিবে।
  • ৭। ২য় পক্ষ কোন অবৈধ ব্যবসা করিতে পারিবে না।
  • ৮। বিগত ২০/০৩/১৮ইং তারিখের সম্পদিত চুক্তি পত্রে ত্রুটি থাকায় অদ্যকার ০২/০৮/১৮ইং তারিখে নতুন করিয়া চুক্তি সম্পাদন করা হইল। তজ্জন্য চুক্তি শুরুর তারিখ ২০/০৩/১৮ইং বলবৎ থাকিবে।
  • ৯। ৫বছর পর দোকন ঘরটির ভাড়া বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। ১ম পক্ষ এবং ২য় পক্ষ সমঝোতায় ব্যর্থ হইলে ২য় পক্ষ জামানত ফেরত লইতে পারিবেন।
    উভয় পক্ষের সম্মত্তিক্রমে অত্র চুক্তি পত্রটি স্ব-স্থানে ও স্ব-জ্ঞানে ১ম এবং ২য় পক্ষ নিম্ন স্বাক্ষরকারী স্বাক্ষীগনের উপস্থিতিতে স্বাক্ষর করিলেন। 

স্বাক্ষীগনের স্বাক্ষরঃ ১ম পক্ষের স্বাক্ষরঃ-

                                                ২য় পক্ষের স্বাক্ষরঃ

অঙ্গীকার নামা চুক্তিপত্রের নমুনা

আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী……রেজওয়ানা আরেফিন………পিতা মোঃরশিদুজ্জামান………………. মাতা……নাসরিন আক্তার……….পেশা……শিক্ষার্থী…ঠিকানা রংপুর সদর…….. বয়স……২১…..ধর্ম……ইসলাম….জাতীয়তা…বাংলাদেশী…….জাতীয় পরিচয়পত্র নং……………… ৬৭৮৯৭

এ মর্মে অঙ্গীকার পূর্বক ঘোষণা করছি যে,
১.আমি অদ্য মাসের ১ তারিখ হইতে বস্ত্রবিপণণ কেন্দ্রে মাঠ পর্যায়ের কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হইয়াছি ৬ মাসের জন্য।এমতাবস্থায় চুক্তির সময়সীমা অতিক্রান্ত হবার পূর্বে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করিবো না।
২.বর্তমান প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় সততার সাথে সেবা প্রদান করিবো।
৩.মাসিক ৩০০০০ টাকা পারিশ্রমিকে কাজ করবো বলে সম্মত হইয়াছি।
কোন আইনি জটিলতায় বিষয় থাকলে সেটি উল্লেখ করতে হবে (শর্তাবলী ভিতর থাকলে প্রয়োজন ক্ষেত্রে)

আমি ঘোষণা করছি যে, আমি সম্পূর্ণ স্বজানে, সুস্থ মস্তিষ্কে এবং কারো কেন প্ররোচনা ব্যতীত এ অঙ্গিকার নামায় সাক্ষর করিলাম।

তারিখঃ (বাম পাশে)
সাক্ষর, , (ডান পাশে)
মোবাইল নম্বরঃ
ইমেইলঃ

ফ্লাট বন্ধকীর চুক্তিপত্রের নমুনা

নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা।
……………….বন্ধকী দাতা

নাম:………….., পিতা:…………………ঠিকানা:………………. জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা।
……………..বন্ধকী গ্রহীতা

পরম করুনাময় মহান আল্লাহ তায়ালার নাম, স্মরণ করিয়া অস্থায়ী ফ্ল্যাট বন্ধকীর চুক্তিপত্র দলিলের আইনানুগ বয়ান আরম্ভ করিলাম। যেহেতু আমি বন্ধকী দাতা মোঃ জাকির হো আমার ওয়ারিশ সূত্রে মালিক ও দখলকার নিয়ত থাকিয়া ৬১, মধ্য মাদারটেকস্থিত ভবনের ৩য় তলার উত্তর-পশ্চিম কর্ণারের একটি ফ্ল্যাট আপনি বন্ধকী গ্রহীতা বর্ণিত নি¤œ শর্ত মোতাবেক আপনি বন্ধকী গ্রহীতা বন্ধক নিতে সম্মত হওয়ায় আমরা উভয় পক্ষ নি¤œ লিখিত স্বাক্ষীদের মোকাবেলায় আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে বর্ণিত ফ্ল্যাটটির জন্য ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা ধার্য করা হইল। আমি বন্ধকী দাতা আপনি বন্ধকী গ্রহীতা এর নিকট উক্ত টাকা নগদ বুঝিয়া পাইয়া ও নিয়া অস্থায়ী ভাবে ফ্ল্যাটটি বন্ধক রাখার ব্যাপারে চুক্তিতে আবদ্ধ হইলাম।

শর্ত সমূহঃ

  • ১। অত্র বন্ধকী চুক্তিপত্রের মেয়াদ ১ বছর ৬ মাস। উক্ত সময়ের মধ্যে বন্ধকীদাতা বন্ধকী গ্রহিতার উক্ত ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা পরিশোধ করিয়া ফ্ল্যাট বুঝিয়া নিতে পারিবেন। বন্ধক গ্রহীতা বন্ধক দাতার নিকট হইতে উক্ত টাকা বুঝিয়া পাওয়ার পর ফ্ল্যাটি ছাড়িয়া দিতে বাধ্য থাকিবেন। তবে উল্লেখ্য থাকে চুক্তি সম্পাদনের তারিখ হইতে ৬ মাসের পূর্বে কোন ভাবেই বন্ধকী দাতা টাকা পরিশোধ করিয়া বন্ধকী গ্রহিতার নিকট হইতে ফ্ল্যাট বুঝিয়া নিতে পারিবেন না।
  • ২। বন্ধক দাতা কর্তৃক গ্রহণকৃত বন্ধক গ্রহীতার নিকট হইতে বর্ণিত পরিমান টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধক গ্রহীতা উল্লেখিত ফ্ল্যাট বাসাটি নিজে বসবাস করিবেন বা অন্যের নিকট ভাড়া দিতে পারিবেন। বন্ধক গ্রহীতা বন্ধক দাতাকে কোন প্রকার ভাড়া পরিশোধ করিবেন না কিংবা বন্ধকদাতা উক্ত ফ্ল্যাটের জন্য কোন প্রকার ভাড়া দাবী করিতে পারিবেন না।
  • ৩। গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল বন্ধক গ্রহিতা নিজ দায়িত্বে পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবেন।
  • ৪। যদিও বা বন্ধক গ্রহীতার অধিকার রয়েছে উক্ত টাকার প্রয়োজন হলে বন্ধকদাতাকে ৩ (তিন) মাসের নোটিশে পরিশোধ করিতে বলা।
  • ৫। বন্ধক চলাকালীন সময় বন্ধক গ্রহীতা ফ্ল্যাটটিতে বৈধভাবে বসবাস করিতে পারিবেন।
  • ৬। বন্ধক গ্রহীতা যে অবস্থায় ফ্ল্যাটটি বুঝিয়া নিয়াছেন, সেই অবস্থায় বন্ধক দাতার নিকট বুঝিয়া দিতে বাধ্য থাকিবেন।৭। অত্র বন্ধকী দলিল ০১/০২/২০২১ইং তারিখ হইতে কার্যকরি হইবে।

ফ্ল্যাট-এর পরিচয়ঃ

৬১, মধ্য মাদারটেকস্থ বিল্ডিং-এর তিন তলার উত্তর পশ্চিম পাশের আনুমানিক ৬১২ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ২ রুম, ১টি ডাইনিং, ১টি বাথরুম এবং ১টি কিচেন।

এতদ্বার্থে, স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ্য শরীরে ও সরলমনে অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র বন্ধকী দলিল পাঠ করিয়া ও করাইয়া ইহার মর্ম অবগত হইয়া এবং শর্ত সমূহ মানিয়া অত্র চুক্তিপত্র দলিল সম্পাদন করিলাম। ইতি তাং-০৪/০১/২০২১ইং
স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর
১।
২।
৩।
বন্ধক দাতার স্বাক্ষর ও তারিখ বন্ধক গ্রহীতার স্বাক্ষর ও তারিখ

চুক্তি পত্রের ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা

যদি উপরে উল্লেখিত নিয়মে চুক্তিপত্র করে কেউ যদি চুক্তি বরখেলাপ বা শর্ত ভঙ্গ করে তবে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী আপনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন (মামলা করার নিয়ম, প্রকারভেদ, প্রত্যাহার সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য)। বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা ও ৪০৬ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবার ব্যবস্থা রয়েছে। আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করাও সহজ হয়। টাকা ধার নিয়ে বা বাকিতে মাল নিয়ে টাকা পরিশোধ না করা, জমি বিক্রয়ের নামে টাকা নিয়ে জাল কাগজ প্রদান প্রভৃতি প্রতারণা।

আর এই প্রতারণার শাস্তির বিধান রয়েছে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায়। এ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি প্রতারণা করে এবং প্রতারণার কারণে প্রতারিত ব্যক্তিকে কোনো সম্পত্তি দিতে বাধ্য করে তাহলে প্রতারণাকারীকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় প্রকার দণ্ড দেওয়া যেতে পারে। দণ্ডবিধির ৪০৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বিশ্বাস ভঙ্গ করে কোন আর্থিক ক্ষতি ছাড়া তাহলে তাকে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করা যাবে বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। এই বিধি থাকায়,লেনদেনের দলিল বা চুক্তিনামা থাকলে কেউ প্রতারণা করার সাহস পাবে না।

চুক্তি পত্রের নমুনা pdf

আমাদের সর্বশেষ আপডেট

Leave a Comment