5 Euro free crypto casino

  1. No Deposit Free Spins In Uk: The slot has a generous return to play percentage of 97%.
  2. Free Game Slot Uk - Right now you can play wherever you want with your smartphone or tablet.
  3. Real Australia Online Casinos: Large amounts of money and time have been placed into such events.

Poker online with friends app

New Casino Free Spins No Deposit
The green ones reveal low, high, and Wild symbols and the golden ones reveal high and Wild symbols.
Nextbet Casino Bonus Codes 2025
Opening an account takes a few steps.
The main difference between online casinos is their availability.

What is a poker toss

Canada Casino Games Online Play Online Casino Games Now
Some of the casino games available for you to play include Fruity Bonanza, Wild Rover, Slingo Cascade, Slingo Xing Yun Xian, Slingo Fluffy Favourites, Casanova, Friends, Dragons Kingdom, and more.
Free Spins Btc Casino
Bobby is a tiny low level online casino, focused primarily on US and Australian markets.
Online Casino Bonus In Canada

রাষ্ট্রবিজ্ঞান কি? রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি | রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির সম্পর্ক

রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল সমাজবিজ্ঞান। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Political Science. এটি গ্রীক শব্দ Polis থেকে এসেছে। এর অর্থ নগর।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা ও ধারণা তার আলােচনা ক্ষেত্রের পরিধির দ্বারাই নির্ধারিত হয়। অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানের ন্যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানও হল গতিশীল শাস্ত্র। মানুষের সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার পরিধিও পরিমার্জিত এবং পরিবর্তিত হয়েছে। তার ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্বন্ধে ধারণারও বিবর্তন ঘটেছে। এই কারণে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভিন্ন সংজ্ঞার সৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণ অর্থে বিজ্ঞান বলতে বােঝায়, বিশেষ জ্ঞান। সুতরাং যে শাস্ত্র পাঠ করলে রাষ্ট্র সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান পাওয়া যায়, তাকে বলা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অর্থাৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার মূল বিষয়বস্তু হল রাষ্ট্র। রাষ্ট্র সম্পর্কে আলােচনা বলতে বােঝায়—রাষ্ট্রের উৎপত্তি, গতি এবং প্রকৃতি বিষয়ে আলােচনা। সেদিক থেকে বলা যায়, যে শাস্ত্রের মূল বিষয়বস্তু হল রাষ্ট্র—তারই নাম রাষ্ট্রবিজ্ঞান।

সম্পর্কিত আর্টিকেল ;- জীববিজ্ঞান কি? জীববিজ্ঞান কাকে বলে?

গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতিঃ

রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল দেশীয়, আন্তর্জাতিক এবং তুলনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে রাজনীতি এবং ক্ষমতার অধ্যয়ন। এটি রাজনৈতিক ধারনা, মতাদর্শ, প্রতিষ্ঠান, নীতি, প্রক্রিয়া এবং আচরণ, সেইসাথে গোষ্ঠী, শ্রেণী, সরকার, কূটনীতি, আইন, কৌশল এবং যুদ্ধ বোঝার অন্তর্ভুক্ত।
রাজনীতির শিক্ষাগত অধ্যয়নকে রাজনীতিবিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কাজ হলো রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি পটভূমি নাগরিকত্ব এবং রাজনৈতিক কর্মের পাশাপাশি সরকার, আইন, ব্যবসা, মিডিয়া বা পাবলিক সার্ভিসে ভবিষ্যত কর্মজীবনের জন্য মূল্যবান।

ভূমিকাঃ যেকোনাে বিষয় অধ্যয়ন করতে হলে তার বিজ্ঞানভিত্তিক সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। এজন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিজ্ঞানভিত্তিক আলােচনা করার জন্যও কতিপয় সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। সেসব পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সঠিকভাবে অনুধাবন ও ব্যাপক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভবপর হয়। এ পদ্ধতিগুলাের প্রকারভেদে বিভিন্ন রূপ হতে পারে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নে অনুসৃত পদ্ধতিসমূহঃ কোন বিষয়ের বৈজ্ঞানিক আলােচনার জন্য সাধারণত যেমন একক সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির অবলম্বন করা হয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তেমনি একক সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির অবিলম্বন করা যায় না- কারণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান হিসেবে পুরোপুরি পুর্নাঙ্গ নয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি অসম্পূর্ণ বিজ্ঞান বলে এর সমস্যার প্রকারভেদের ভিন্নতা অনুসারে বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে এর পঠন ও অনুসন্ধান করতে হয়। তন্মধ্যে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলােই সমধিক উল্লেখযােগ্যঃ

(১) পর্যবেক্ষণ ও মূল পদ্ধতিঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলােচনার ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্র খুবই সীমিত, কাজেই কোনাে বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিই গ্রহণীয়। বিভিন্ন দেশের শাসন পদ্ধতি, এর পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারের অনুসৃত নীতির ফলাফল।

(২) তুলনামূলক পদ্ধতিঃ বিভিন্ন রাষ্ট্রে এদের সংগঠন, নীতি ও কার্যাবলীর তুলনামূলক আলােচনা করে কোনটি উত্তম তা নির্ণয় করা যায়। যেমনঃ গণতন্ত্র ও একনায়কত্বের তুলনামূলক আলােচনা করে কোনটি উত্তম এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে এরিস্টটল ১৫৮ টি দেশের শাসনব্যবস্থার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে তার আদর্শ রাষ্ট্রের চিত্র অংকন করেছিলেন।

(৩) ঐতিহাসিক পদ্ধতিঃ এই পদ্ধতির সাহায্যে অতীতের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর সঙ্গে বর্তমান ঘটনাসমূহের তুলনামূলক পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে প্রয়ােগের জন্য একটি সিদ্ধান্তে আসা যায়। ইতিহাসের সাহায্যে অতীতকে সম্যকরূপে উপলব্ধি করতে না পারলে বর্তমানের মূল্যায়ন করা যায়।

(৪) পরিসংখ্যানমূলক পদ্ধতিঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিসংখ্যানমূলক পদ্ধতিও অনুসরণ করে। বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের সরকার ও গবেষণা সংস্থা পরিসংখ্যানমূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ভােট দান পদ্ধতি, জনমতের প্রাধান্য, আর্থিক অবস্থা প্রভৃতি বিষয়ের পর্যালােচনায় এ পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকর।

(৫) সাক্ষাৎকার পদ্ধতিঃ বর্তমানকালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণার ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এ পদ্ধতি অনুযায়ী গবেষণার যেকোনাে ক্ষেত্রে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত জনসাধারণের কাছ থেকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন ;- দর্শন কাকে বলে?

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনা করার জন্য কোন পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি প্রযােজ্য তা সঠিকভাবে নির্ণয় করা কঠিন। কারণ কোনাে একটি ঘটনার সাথে ওতপ্রােতভাবে অনেকগুলাে ঘটনা জড়িত থাকে, তাই বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে এদের বিশ্লেষণ করতে হয়।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধিঃ

রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল সামাজিক বিজ্ঞান। এই কারণে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনাক্ষেত্রের পরিধি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেনি, যুগ ও সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিবর্তিত হয়েছে। তাই, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার পরিধিকে ‘সতত পরিবর্তনশীল” বলে আখ্যা দেওয়া হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােনাক্ষেত্রকে কয়েকটি ভাগ ভাগ করে আলোচনা করা যেতে পারে। যেমন一

[1] রাষ্ট্র, সরকার, আইন এবং বিচারব্যবস্থা: প্রখ্যাত গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, মানুষ ভালােভাবে বাঁচতে চায়। মানুষের এই প্রয়ােজন পূরণের উদ্দেশ্যেই রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে। মানুষের জীবন রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। ফলে রাষ্ট্রই হল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রধান আলােচ্য বিষয়। কিন্তু রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয় সরকারের মাধ্যমে। রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যপূরণের জন্য সরকার আইন প্রণয়ন ও প্রয়ােগ করে। আইনের ব্যাখ্যা করা ও আইনভঙ্গকারীদের শাস্তিবিধানের জন্য বিচারব্যবস্থার প্রয়ােজনীয়তা রয়েছে। কাজেই রাষ্ট্রের সঙ্গে সরকার, আইন এবং বিচারব্যবস্থা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

[2] রাজনৈতিক মতবাদ: রাজনৈতিক চিন্তা এবং মতবাদ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার একটি ঐতিহ্যশালী দিক। প্লেটো, অ্যারিস্ট, ম্যাকিয়াভেলি, হবস, লক, রুশাে, জন স্টুয়ার্ট মিল, কার্ল মার্কস ও অন্যান্য দার্শনিক যে চিন্তাভাবনা ব্যক্ত করেছেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তার গুরুত্ব অপরিসীম।

আরো জানুন;- পরাগায়ন কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?

[3] আন্তঃবিষয় আলােচনা: রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞানের একটি শাখা। তা সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা জানি, আন্তঃবিষয় আলােচনা একে অপরকে সমৃদ্ধ করে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় আন্তঃবিষয় সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে।

[4] প্রতিনিধিত্ব, রাজনৈতিক দল ও জনমত: জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তে পরােক্ষ বা প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্রের প্রবর্তন ঘটেছে। পরােক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে দলব্যবস্থা ওতপ্রােতভাবে জড়িত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনমতও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। কারণ, ক্ষমতায় কোন্দল আসীন হবে তা জনমতই নির্ধারণ করে। কাজেই প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা, রাজনৈতিক দল এবং জনমত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় স্থান করে নিয়েছে।

[5] আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে কোনাে দেশই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। প্রত্যেকটি রাষ্ট্রকেই নিজস্ব প্রয়ােজনে কোনাে-না-কোনাে রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি মেনেই এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসেবে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নামও উল্লেখ করতে হয়। সুতরাং, রাষ্ট্রবিজ্ঞান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আইন ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলােচনা করে।

[6] মূল্যমান: রবসন, গ্রিভস প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের বক্তব্য হল রাষ্ট্রবিজ্ঞান কেবল কী আছে অর্থাৎ সমসাময়িক বিষয়গুলি নিয়েই কেবল আলােচনা করে না, কী হওয়া উচিত সে বিষয়েও আলােচনা করে। একারণেই বলা যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনা মূল্যমান-নিরপেক্ষ নয়।

[7] তুলনামূলক রাজনীতি: রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা জনকল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছেন। এ কাজে তাদেরকে অতীত, বর্তমান এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে আলােচনা করতে হয়। সুতরাং, তুলনামূলক রাজনীতির আলােচনাও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় স্থান করে নিয়েছে।

[8] আচরণবাদীদের অভিমত: বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে গ্রাহাম ওয়াক্স, আর্থার বেন্টলে, চার্লস মেরিয়াম, এইচ লাসওয়েল প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্যক্তি ও গােষ্ঠীর আচরণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার ক্ষেত্রে আধুনিকতা নিয়ে আসেন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও সংখ্যায়নের প্রয়ােগ ঘটিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনাকে এঁরা মূল্যমান-নিরপেক্ষ করে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন। এঁদের চিন্তাধারাই আচরণবাদ নামে পরিচিত।

[9] মার্কসবাদীদের অভিমত: মার্কসবাদীদের অভিমত অনুযায়ী, সমাজের চরিত্র নির্ধারিত হয় উৎপাদন ব্যবস্থার দ্বারা। শ্রেণিবিভক্ত সমাজব্যবস্থায় মালিক শ্রেণি শােষণ ও শাসনকে অব্যাহত রাখার জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা নিজেদের অনুকূলে রাখার চেষ্টা করে। অন্যদিকে, শ্রমিক শ্রেণি শােষণ থেকে মুক্তির জন্য বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ফলে শ্রেণিসংগ্রাম, বিপ্লব, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।

[10] বিশ্বায়ন: বর্তমানে বিশ্বায়নের প্রভাবকে কোনাে রাষ্ট্রই অস্বীকার করতে পারে না। বিশ্বায়নের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বে বাণিজ্যের সম্প্রসারণের চেষ্টা চলছে। কাজেই বিশ্বায়ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় স্থান করে নিয়েছে।

উপসংহার: অধ্যাপক ল্যাঙ্কি বলেছেন “সংগঠিত রাষ্ট্রের পরিপ্রেক্ষিতে মানবজীবনের আলােচনাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান। আমরা আলােচ্য বিষয় থেকে মানবজীবনকে প্রভাবিত করে, এমন কোনাে কিছুই বাদ দিতে পারি না।” বস্তুত, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনা কোনাে সুনির্দিষ্ট সূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। যে সমাজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান তার রসদ সংগ্রহ করে, তা অত্যন্ত গতিশীল ও পরিবর্তনশীল। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনাক্ষেত্রের পরিধি অপরিবর্তিত থাকা সম্ভব নয়।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মধ্যকার সম্পর্কঃ

রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মধ্যকার সম্পর্কঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি সমাজবিজ্ঞানের দু’টি শাখা। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে সুগভীর সম্পর্ক। নিম্নে উভয়ের সম্পর্কের কিছু দিক নিয়ে আলােচনা করা হলাে-

(১) তাত্ত্বিক সম্পর্কঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির মধ্যে অনেক তাত্ত্বিক সম্পর্ক রয়েছে। অনেক অর্থনৈতিক মতবাদের ওপর ভিত্তি করে অনেক রাজনৈতিক মতবাদ গড়ে ওঠেছে। অর্থনৈতিক তত্ত্বের গবেষণা ও বিশ্লেষণের জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাহায্য নিতে হয়। আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ণের জন্য অর্থনৈতিক নানা তত্ত্বের সাহায্য নিতে হয়।

(২) একই পরিবারভুক্তঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি উভয়ই সমাজবিজ্ঞানের দু’টি আলাদা শাখা। অর্থনীতি ছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিপূর্ণতা কল্পনা করা যায় না। মােটকথা অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান উভয়ই একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি নিয়ে আলােচনা করে।

(৩) পরস্পর পরিপূরকঃ রাষ্ট্রের যাবতীয় সমস্যা সমাধান, উন্নতি ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে আলােচনা করে আর অর্থনীতি আলোচনা করে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সমস্যা ও সমাধান নিয়ে।

(৪) রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নঃ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রথমে প্রয়ােজন জনসচেতনতা, কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠা ও সততা। আর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনা থেকে এসব বাইরে নয়। এদিকে বাণিজ্য চুক্তি, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক, ভূমি ও কর ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি রাষ্ট্র ও সরকারই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

(৫) উভয়ের সহাবস্থানঃ কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি সহাবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। যেমন- পররাষ্ট্রনীতি, শিল্পনীতি, বাণিজ্যনীতি ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় আইনের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়। এগুলাের নীতি প্রণয়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে অর্থনীতির তত্ত্ব-উপাত্ত যেমন দরকার, তেমনি রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, স্থিতিশীলতা, জনসচেতনতা ইত্যাদিও ব্যাপক পরিসরে দরকার।

নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলােচনা করেন। জোটনিরপেক্ষতা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলাের অস্তিত্বের সহায়ক। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান যৌথনিরাপত্তার সংস্থা জাতিপুঞ্জ এবং জাতিসংঘের কার্যক্রম নিয়ে আলােচনা করে।

(১১) অন্যান্য বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন (Discipline) বা বিষয়ের সাথে তার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিয়ে আলােচনা করে থাকে। যার ফলে উভয়ের মধ্যকার সম্পর্কের সুস্পষ্টরূপ প্রতিফলিত হয়।

(১২) অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত কর্মপন্থায় সমন্বয়ঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্রব্যবস্থার অতীতকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে বর্তমান ব্যবস্থাকে সূদৃঢ় করে। একইভাবে বর্তমান ব্যবস্থাকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভবিষ্যত রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে বাস্তবভিত্তিক ধারণা প্রদান করে।

(১৩) স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তজাতিক বিষয় সম্পর্কে ধারণাঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান স্থানীয় বিষয় যেমন- ইউনিয়ন পরিষদ, গ্রাম সরকার ইত্যাদির গঠন কাঠামােসহ সার্বিক আলােচনার মাধ্যমে জাতীয় ব্যবস্থাকে শক্ত ভিত্তি দান করে। আবার জাতীয় বিষয়- সরকার, দল ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ইত্যাদির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বরূপ উদঘাটন করে। আন্তর্জাতিক প্রাতষ্ঠান, যেমন- জাতি সংঘ, ইউনিসেফ, কমনওয়েলথ, ADB, IDB ইত্যাদি সার্বিক বিষয়ের ওপর আলােচনা করে থাকে।

(১৪) রাজনৈতিক অধিকারঃ রাষ্ট্র হচ্ছে একজন নাগরিকের সকল প্রকারের অধিকারের উৎস। একজন নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের প্রতি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং ব্যক্তির প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্বকে স্পষ্ট করে তােলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাজনৈতিক অধিকারের দলিলস্বরূপ।

(১৫) আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতিঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্রের মধ্যে অবস্থিত আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান যেমন- নির্বাচন ব্যবস্থা, রাজনৈতিক দল, চাপ সৃষ্টিকারী গােষ্টী ইত্যাদি এবং অনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান, যেমন- শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, দুদক, টি.আই.টি ইত্যাদি নিয়ে আলােচনার মাধ্যমে এর স্বরূপ উদ্ঘাটন করে থাকে।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি

মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গ্যাব্রিয়েল অ্যালমন্ড তার গ্রন্থে রাজনৈতিক সংস্কৃতি শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। তার মতে, ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি হলো রাজনৈতিক ব্যবস্থার সদস্যদের রাজনীতি সম্পর্কে মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গির রূপ ও প্রতিকৃতি।’ অর্থাৎ কোনো দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সে দেশের জনগণ কীভাবে গ্রহণ করছে সেটার ধরনই হলো রাজনৈতিক সংস্কৃতি। রাজনৈতিক সংস্কৃতির মাধ্যমে একটি সমাজের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে। একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার গতি প্রকৃতি দেখে সে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। কোনো অঞ্চলের মানুষ রাজনৈতিক বিষয়ে কী চিন্তা করে তা রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যদিয়েই প্রকাশিত হয়।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবিঃ

রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি। এটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার নির্ধারক। সাধারণ অর্থে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলতে রাষ্ট্রের নাগরিকদের রাজনৈতিক জীবনধারা সম্পর্কে তাদের মনোভাব, বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে বোঝানো হয়। রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কে সমাজের মানুষের মনোভাব, বিশ্বাস, অনুভূতি এবং মূল্যবোধের সমন্বয়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতি গঠিত হয়। তাই বলা যায়, রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।

রাজনৈতিক সংস্কৃতির মূল উপাদান কয়টি এবং কি কি
রাজনৈতিক সংস্কৃতির মূল উপাদান হচ্ছে ৬টি, যথাঃ-

রাজনৈতিক মূল্যবোধ (political values): প্রতিটি দেশের মানুষের কিছু রাজনৈতিক মূল্যবোধ রয়েছে। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ। সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচন।
রাজনৈতিক বিশ্বাস (political beliefs): রাজনৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তি হল রাজনৈতিক নৈতিকতা এবং রাজনৈতিক বিশ্বাস এর হল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা। একটি দেশের আর্থ-অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানের জন্য একাধিক দলীয় ব্যবস্থা দায়ী।
মানসিক মনোভাব (emotional attitudes): প্রভাবিত রাজনৈতিক মতাদর্শ, অতীত সরকারের নীতি, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো আবেগপ্রবণ বা মানসিক মনোভাবের উদাহরণ।
জ্ঞানীয় অভিযোজন (cognitive orientation): রাজনৈতিক সমস্যা, ঘটনা, রাজনৈতিক কার্যকলাপ এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণের কাছে থাকা তথ্যের পরিমাণ এবং তথ্যের প্রকার।
কার্যকর অভিযোজন (effective orientation): রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও আগ্রহের পরিমাণ। রাজনৈতিক ইভেন্টে অংশগ্রহণ। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্রের সাথে সংযুক্তি।
মূল্যায়নমূলক অভিযোজন (evaluative orientation): প্রতিটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার কিছু উদ্দেশ্য থাকে এবং এটি কিছু কার্য সম্পাদন করে। রাজনৈতিক ব্যবস্থার অর্জন ও ব্যর্থতাকে মানুষ মূল্যায়ন করার চেষ্টা করে।

সর্বশেষ আপডেট

Leave a Comment


Math Captcha
+ 8 = 12