Crypto Casino bonus slots free download

  1. Free Bingo And Slots Ireland: We have chosen a few titles of every genre, which we believe could be of interest to you.
  2. Gacor66 Casino Bonus Codes 2025 - You don't have to worry, if the question is can you play in South Africa, the answer is yes.
  3. No Deposit Whitehat Casino: In addition to winning the regular prizes, the option is there to guide you in gathering more creative material for your castles.

Rivers cryptocurrency casino in Gold Coast

World Casino Review And Free Chips Bonus
Its possible trigger the Book of Atem WowPot jackpot with your Betsafe Free Spins.
Free Roulette Bonus No Deposit New Zealand
If theres still a tie, a penalty kick shootout is held.
The Book of Duat is both the wild and the bonus symbol landing three or more of these will reward you with both a payout and free spins.

Outside betting strategy roulette

Online Casino Deposit 20
Whether youre interacting with the Demo, or Real-Money play on this slot machine, youll feel immersed into gameplay thats been fine tuned for your enjoyment.
European Roulette Wheel Strategy
Tretter struggled with injuries, missing 17 games in his first three seasons.
Best Online Casino Slots Machine

মাছ চাষ পদ্ধতি [A টু Z সম্পূর্ণ গাইডলাইন ]

মাছ হচ্ছে প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস। কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং পুষ্টি সরবরাহে মৎস্য সম্পদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মাছ চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, যেমন- একই পুকুরে নানা জাতের মাছ চাষ করা যায়, খাল ও ডোবায় মাছ চাষ করা যায়, আবার চৌবাচ্চায়ও মাছের চাষ করা যায়। সাধারণত মাছের জন্য পুকুরে খাবার উৎপাদনই হচ্ছে মাছ চাষ। এটি কৃষির মতোই একটি চাষাবাদ পদ্ধতি। আবার কোনো নির্দিষ্ট জলাশয়ে/জলসীমায় পরিকল্পিত উপায়ে স্বল্প পুঁজি, অল্প সময় ও লাগসই প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছের উৎপাদনকে মাছ চাষ বলে। মূলত বিভিন্ন নিয়ম মেনে প্রাকৃতিক উৎপাদনের চেয়ে অধিক মাছ উৎপাদনই মাছ চাষ।

মাছ চাষ

চাষ উপযোগী মাছের গুণাগুণ ও উপকারিতা

আমাদের দেশের স্বাদু পানিতে ২৬০টিরও বেশি প্রজাতির মাছ আছে। এছাড়া খাড়ি অঞ্চলে ও লোনা পানিতে কয়েক শত প্রজাতির মাছ আছে। তবে চাষযোগ্য মাছগুলো হলো- রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, সিলভারকার্প, মিররকার্প, গ্রাসকার্প, কমনকার্প, বিগহেড, রাজপুঁটি, নাইলোটিকা, বিদেশি মাগুর, থাই পাঙ্গাশ প্রভৃতি। এসব মাছের কিছু গুণাগুণ আছে। গুনাগুনগুলো হলো।

  • এসব মাছ খুব দ্রুত বাড়ে;
  • খাদ্য ও জায়গার জন্য একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে না;
  • পুকুরে বেশি সংখ্যায় চাষ করা যায়; 
  • পানির সব স্তর থেকে খাবার গ্রহণ করে, তাই পুকুরের পরিবেশ ভালো থাকে;
  • এসব মাছ খেতে খুব সুস্বাদু;
  • বাজারে এসব মাছের প্রচুর চাহিদা আছে;
  • সহজে রোগাক্রান্ত হয় না।

বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষের জন্য পুকুরকে প্রস্তুত করে নেয়াই ভালো। কারণ একটি পুকুর মাছ চাষের উপযুক্ত না হলে এবং পুকুর প্রস্তুত না করে চাষ শুরু করে দিলে বিনিয়োগ ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। ঝুঁকি এড়াতে এবং লভ্যাংশ নিশ্চিত করতেই বৈজ্ঞানিক কৌশল অনুসরণ করে পুকুর প্রস্তুত করতে হবে।

আরে পড়ুন ;- ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি [ A টু Z সম্পূর্ণ গাইডলাইন ]

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুতি

১. পুকুরের পাড় ও তলা মেরামত করা

২. পাড়ের ঝোপ জঙ্গল পরিষ্কার করা

৩. জলজ আগাছা পরিষ্কার করা

৪. রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ দূর করা;

৫. পুকুর শুকানো

৬. বার বার জাল টানা;

৭.ওষুধ প্রয়োগ- রোটেনন। পরিমাণ ২৫-৩০ গ্রাম/শতাংশ/ফুট। এর বিষক্রিয়ার মেয়াদ ৭-১০ দিন। প্রয়োগের সময় রোদ্রজ্জ্বল দিনে।

৮. ফসটক্সিন/কুইফস/সেলফস ৩ গ্রাম/শতাংশ/ ফুট। মেয়াদ এবং সময় পূর্বের মত

৯. চুন প্রয়োগ: কারণ/কাজ/উপকারিতা সাধারণত ১ কেজি চুন/শতাংশ প্রয়োগ করতে যদি PH এর মান ৭ এর আশেপাশে থাকে। বছরে সাধারণত ২ বার চুন প্রয়োগ করতে হয়। একবার পুকুর তৈরির সময়, দ্বিতীয় বার শীতের শুরুতে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে।

চুন প্রয়োগের উপকারিতা ও সাবধানতা

  • পানি পরিষ্কার করা/ঘোলাটে ভাব দূর করা
  • pH নিয়ন্ত্রণ করে
  • রোগ জীবাণু ধ্বংস করে
  • মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • বিষাক্ত গ্যাস দূর করে
  • শ্যাওলা নিয়ন্ত্রণ করে।

আরে পড়ুন;- লাউ চাষ পদ্ধতি [A টু Z সম্পূর্ণ গাইডলাইন ]

পুকুরে চুন প্রয়োগের পদ্ধতি

চুন কখনও প্লাস্টিকের কিছুতে গোলানো যাবে না; পুকুরে মাছ থাকা অবস্থায় চুন গোলানোর ২ দিন পর পুকুরে দিতে হয়; গোলানোর সময় এবং দেয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন নাকে মুখে ঢুকে না যায়; পানি নাড়া চাড়া করে দিতে হবে; সার প্রয়োগ : সার প্রয়োগ প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক; জৈব সার/প্রাকৃতিক যা কিনা প্রাণীকণা তৈরি করে। গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, কম্পোস্ট; অজৈব বা রাসায়নিক বা কৃত্রিম সার ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি যা উদ্ভিদ কণা তৈরি করে।

নতুন পুকুরের ক্ষেত্রে সার প্রয়োগ মাত্রা

১. প্রতি শতাংশে গোবর ৫-৭ কেজি অথবা ২. হাঁস মুরগির বিষ্ঠা ৫-৬ কেজি অথবা ৩. কম্পোস্ট ১০-১২ কেজি এবং ইউরিয়া ১০০-১৫০ গ্রাম টিএসপি ৫০-৭৫ গ্রাম।

পুকুর প্রস্তুতির আনুমানিক মোট সময়

  • পাড় ও তলা+ঝোপ জঙ্গল পরিষ্কার = ২ দিন রাক্ষুসে মাছ পরিষ্কার = ৩ দিন (৭-১০ দিন পর্যন্ত বিষক্রিয়া থাকে)।
  • চুন প্রয়োগ = ৩-৫ দিন; * সার প্রয়োগ = ৭ দিন; এরপর পোনা ছাড়া হবে। গড়ে মোট ১৭ দিন (২+৩+৫+৭)
  • পুকুরে চাষযোগ্য মাছের বৈশিষ্ট্য- দ্রুতবর্ধনশীল; রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি; বাজার চাহিদা বেশি।

পুকুর নির্বাচন পদ্ধতি 

 ১. পুকুরটি খোলামেলা জায়গায় এবং বাড়ির আশপাশে হতে হবে।

২. মাটির গুণাগুণ পুকুরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দো-আঁশ, এঁটেল দো-আঁশ ও এঁটেল মাটি পুকুরের জন্য ভালো।

৩. পুকুরের আয়তন কমপক্ষে ১০ শতাংশ হতে হবে। ৩০ শতাংশ থেকে ১ একর আকারের পুকুর মাছ চাষের জন্য বেশি উপযোগী।

৪. পুকুরের গভীরতা ২-৩ মিটার রাখতে হবে।

৫. পুকুর পাড়ে বড় গাছ বা ঝোপ-ঝাড় থাকা যাবে না।

পুকুর প্রস্তুত করণ

পোনা মাছ ছাড়ার আগে পুকুর তৈরি করে নিতে হবে। সাধারণত পুরনো পুকুরই তৈরি করে নেয়া হয়। পুকুর প্রস্তুতির কাজটি পর্যায়ক্রমে করতে হবে:

 ১ম ধাপ : জলজ আগাছা-কচুরিপানা, কলমিলতা, হেলেঞ্চা শেকড়সহ তুলে ফেলতে হবে;

 ২য় ধাপ : শোল, গজার, বোয়াল, টাকি রাক্ষুসে মাছ এবং অবাঞ্ছিত মাছ মলা, ঢেলা, চান্দা, পুঁটি সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে;

 ৩য় ধাপ : এরপর প্রতি শতকে ১ কেজি হারে চুন পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। পুকুরে পানি থাকলে ড্রামে বা বালতিতে গুলে ঠা-া করে পুরো পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে;

৪র্থ ধাপ : মাটি ও পানির গুণাগুণ বিবেচনায় রেখে চুন দেয়ার এক সপ্তাহ পর জৈবসার দিতে হবে;

৫ম ধাপ : পুকুর শুকনা হলে পুকুরে সার, চুন, গোবর সব ছিটিয়ে দিয়ে লাঙল দিয়ে চাষ করে পানি ঢুকাতে হবে;

৬ষ্ঠ ধাপ : পোনা মজুদের আগে পুকুরে ক্ষতিকর পোকামাকড় থাকলে তা মেরে ফেলতে হবে;

৭ম ধাপ : পুকুরে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মালে পোনা মজুদ করতে হবে। মৃত্যুর হার যেন কম থাকে সেজন্য পোনার আকার ৮-১২ সেন্টিমিটার হতে হবে।

 ৮ম ধাপ : এর পর নিয়মমতো পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যেমন:

১. পোনা হাড়িতে বা পলিথিন ব্যাগে আনা হলে, পলিথিন ব্যাগটির মুখ খোলার আগে পুকুরের পানিতে ২০-৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে;

২. তারপর ব্যাগের মুখ খুলে অল্প করে ব্যাগের পানি পুকুরে এবং পুকুরের পানি ব্যাগে ভরতে হবে।

৩. ব্যাগের পানি ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা যখন সমান হবে তখন পাত্র বা ব্যাগের মুখ আধা পানিতে ডুবিয়ে কাত করে সব পোনা পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। সকাল ও বিকালই পোনা ছাড়ার ভালো সময়।

 ৯ম ধাপ : দিনে দুইবার অর্থাৎ সকাল ১০টায় এবং বিকাল ৩টায় খৈল, কুঁড়া, ভুসি ইত্যাদি সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।

আরো পড়ুন ;- পেঁপে চাষ পদ্ধতি [A টু Z সম্পূর্ণ গাইডলাইন ]

পুকুরে মাছ চাষে সতর্কতা

১. রোগ প্রতিরোধী মাছের চাষ করতে হবে।

২. সঠিক সংখ্যায় পোনা মজুদ করতে হবে।

৩. পোনা ছাড়ার আগে পোনা রোগে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং পুকুরে যাতে আগাছা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৫. প্রতি ৩-৪ বছর পরপর পুকুর শুকিয়ে ফেলতে হবে।

বাণিজ্যিকভাবে চাষযোগ্য মাছ

দেশি কার্প- রুই, কাতলা, মৃগেল, কালি বাউশ; বিদেশি কার্প- গ্রাস কার্প, সিল্ভার কার্প, কার্পিও, মিরর কার্প, বিগহেড কার্প ছাড়াও পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, সরপুঁটি/রাজপুঁটি, কৈ, চিংড়ি এসব।

বিভিন্ন স্তরের মাছ একসাথে চাষের আনুপাতিক হার

উপরের স্তর ৪০%; মধ্য স্তর ২৫%; নিম্ন স্তর ২৫%; সর্বস্তর ১০% মোট ১০০%। সাধারণত শতাংশ প্রতি ১৫০টি পোনা ছাড়া যায়। এ হিসাবে ৩০ শতাংশের একটি পুকুরে মোট ৪৫০০টি পোনা ছাড়া যাবে। এবং উপরের স্তরের মাছ থাকবে {(৪০×৪৫০০)/১০০}=১৮০০টি পোনা

পুকুরে মাছ চাষ

১. সনাতন পদ্ধতির মাছ চাষ : এ পদ্ধতিতে পুকুরের কোনো ব্যবস্থাপনা ছাড়াই মাটি ও পানির উর্বরতায় পানিতে যে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয় মাছ তাই খেয়ে জীবন ধারণ করে। এক্ষেত্রে আলাদা কোনো পরিচর্যা নিতে হয় না।

২. আধা-নিবিড় পদ্ধতির মাছ চাষ : এ পদ্ধতিতে নিয়মমতো পুকুর প্রস্তুত করে আংশিক সার ও খাদ্য সরবরাহ করে মাছের খাদ্য উৎপন্ন করতে হয়। পুকুরের বিভিন্ন স্তরে উৎপাদিত খাদ্যের সঠিক ব্যবহারের দিকে লক্ষ্য রেখে মাছের পোনা ছাড়তে হয়।

৩. নিবিড় পদ্ধতির মাছ চাষ : অল্প জায়গায়, অল্প সময়ে বেশি উৎপাদনের জন্য সার ব্যবহার করে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হয়।

৪. কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ : পুকুরের বিভিন্ন স্তরে উৎপন্ন খাবার সম্পূর্ণ ব্যবহার করার জন্য রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, বিগহেড, সিলভারকার্প, কমনকার্পসহ প্রজাতির মাছ একত্রে চাষ করা যায়।

মাছের প্রক্রিয়াজাতকরণ

১. মাছ প্রক্রিয়াজাতের সময় হাত দিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করা যাবে না; মাছ ধরার পর মাছের আকৃতি অনুযায়ী আলাদা করে ফেলতে হবে; বাক্সে বা পাত্রে বরফ দিয়ে স্তরে স্তরে মাছ সাজাতে হবে।

মাছ চাষে যেসব দিক খেয়াল রাখতে হবে

পরিচর্যা করতে হবে

বর্ষার শেষে পুকুরের পানিতে লাল বা সবুজ সর পরলে তা তুলে ফেলতে হবে; পানির সবুজভাব কমে গেলে অবশ্যই পরিমাণমতো সার দিতে হবে; মাঝে মাঝে জাল টেনে মাছের অবস্থা দেখতে হবে; পুকুরে জাল টেনে মাছের ব্যায়াম করাতে হবে।

মিশ্রচাষে জাত নির্বাচনে দক্ষ হতে হবে

মিশ্রচাষ বলতে একই সাথে অনেক জাতের মাছ চাষ করাকে বুঝানো হয়ে থাকে। মিশ্রচাষের ক্ষেত্রেও কিছু  নিয়ম কানুন রয়েছে। পুকুরে পানির স্তরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে । সব স্তরে একই রকমের মাছ থাকে না। আর এ কারনেই মিশ্রচাষে প্রজাতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপরের স্তর, মধ্যস্তর ও নিম্নস্তরের বিষয়টি বিবেচনা করেই প্রতেকটি স্তর সঠিক ভাবে ব্যবহারের জন্য মাছের প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে।

অনেক সময় দেখা যায় চাষীরা কোন একটি স্তরের মাছ অধিক ছাড়ে অথচ অন্য স্তরের উপযোগী মাছ ছাড়েন না, যার ফলে চাষী ভাল ফলাফল পান না । তাছাড়া একই স্তরের অধিক বসবাস কারি মাছ নিজেদের মধ্যে  প্রতিযোগিতা আরাম্ভ করে । তাই প্রতিটি স্তরের ব্যবহার করার জন্য আনুপাতিক হারে মাছ ছাড়তে হবে।

পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয় এমন প্রজাতির মাছ এড়িয়ে  যাওয়াই ভালো। যেমন নিচের স্তরের বিশেষ করে মৃগেল, মিররকার্প, কার্পিও এই ধরনের মাছ। পোনা ছাড়ার সময় পুকুরে আনুপাতিক হারেই পোনা ছাড়তে হবে। একই সাথে মৃগেল ও গলদা চিংড়ি ছাড়া যাবেনা মৃগেল ও গলদা চিংড়ি ছাড়া হলে গলদা চিংড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আবার মিশ্রচাষে রাক্ষুসে সভাবের মাছ ছাড়া যাবেনা, রাক্ষুসে মাছ ছাড়া হলে অন্য মাছ খেয়ে সাবাড় করে ফেলবে। তাই রাক্ষুসে মাছ না ছাড়াই ভালো।

পানির গুনাগুন রক্ষার উপায় জানা দরকার

পানি ছাড়া মাছ বেচে থাকতে পারেনা তাই পানির গুনাগুন রক্ষা করাটা জরুরি। অথচ দেখা যায় অনেক মৎস চাষী পানির গুনাগুন রক্ষায় সচেষ্ট নন। মাছ চাষ করতে গেলে পানির যে স্থিতিমাপ রয়েছে তা জানতে হবে। পানির  স্থিতিমাপ দক্ষতার সাথে রক্ষা করতে পারলে মাছ চাষকালীন সময়ে নানান সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

পানির পিএইচ, ক্ষারত্ব, দ্রবীভুত অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া প্রভৃতির আদর্শ মাত্রা রয়েছে। পানির এ মাত্রা অতিক্রম করলে বা অস্বাভাবিক ভাবে কমবেমি হলেই বিপত্তি। মৎস চাষিরা পানি মাপা মেশিনের(Test Kit) মাধমে  উপরোক্ত মাত্রা পরিমাপ করে পানির গুনাগুন জানতে পারেন এবং অভিজ্ঞ মৎস চাষিরা করনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। আর এ কারনেই প্রতেক চাষীদের একটি করে টেস্ট কিট রাখা অতি জরুরী।

মানসম্মত খাবার দেয়া আবশ্যক

মানসম্মত খাবার প্রদান করা লাভজনক মাছ চাষের জন্য অন্যতম প্রধান শর্ত। খাদ্য সরবরাহে ৭০% এর বেশি খরচ হয়ে থাকে মাছ চাষে। অভিজ্ঞ মাছ চাষীরা নিজেরা খাবার তৈরি করে মাছকে দিয়ে থাকেন অন্য দিকে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির খাবার পাওয়া যায়।

মাছকে খাবার যে উৎস থেকে সরবরাহ করেন না কেন তা অবশ্যই গুনগত মানসম্পন্ন হতে হবে। খাবার সঠিক পুষ্টিমান সম্পন্ন এবং মাছের বয়স ও আকার অনুযায়ী সরবরাহ করতে হবে তা নাহলে একজন মৎস চাষী ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। এ ব্যপারে প্রতেক মৎস চাষীর সচেতন হওয়া দরকার। পরীক্ষাগারে খাদ্য পরীক্ষার মাধ্যমে খাদ্যের  সঠিক পুষ্টিমান সমন্ধে জানা যায়।

পরিমিত হারে খাবার দিতে হবে

মাছকে কম খাবার খেতে দিলে যেমন প্রত্যাশিত উৎপাদন পাওয়া যায় না । তেমনি বেশি করে খাবার খেতে দিলে একজন চাষী অধিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এতে করে খাবার ও অর্থ  দুইটাই অপচয় হয়ে থাকে এবং পানি দূষিত হয়ে মাছ মারা যেতে পারে।

অধিকাংশ মৎস চাষীগণ এই ভুলটি করে থাকেন। সাধারণত তারা জানেন না কি পরিমানে মাছের পোনা আছে তাই খাদ্য সরবরাহের হিসাবে গরমিল থেকে যায়। মাছ চাষী সঠিক মাত্রায় খাবার সরবরাহ করতে পারে না । আর এ জন্যই মাছের গড় ওজন, সংখ্যা  ও পানির গুনাগুন জেনে সঠিক পরিমানে খাবার সরবরাহ করা দরকার।

নিয়মিত খাবার দেয়ার বিকল্প নেই

মাছ চাষে কাঙ্ক্ষীত সাফল্য না পাবার কারণ অনেক চাষী নিয়মিত খাবার সরবরাহ না করে মাঝে মাঝে ও অনিয়মিতভাবে খাবার দিয়ে থাকেন। আর এভাবে খাবার দিলে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা সম্ভব নয়।

আবার অনেক চাষী তাদের ইচ্ছামত অসময়ে খাবার দিয়ে থাকেন যার কারণে মাছের সুষম বৃদ্ধি হয়না এবং অনেক ক্ষেত্রে খাবারের অপচয় হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময় অর্থাভাবে চাষী চাষের মাঝামাঝি সময়ে খাবার দিতে ব্যর্থ হয় যার করণে চাষী লাভবান হতে পারেনা । অনেক চাষী মাছ খাদ্য খাচ্ছে কিনা  তা লক্ষ্য করেন না।

নিয়মিত ওজন পরীক্ষা করতে হবে

মৎস চাষীকে খাবারের পরিমাণ নির্ধারনের জন্য ১০/১৫ দিন পর পর মাছের গড় ওজন নেয়া আবশ্যক। তা না হলে একজন চাষী কোন সময়ই খাবারের পরিমান নির্ধারণ করতে পারবে না। নিয়মিত মাছের ওজন না নিলে একজন চাষী বুঝতে পারেন না যে কি পরিমানে মাছের বৃদ্ধি হচ্ছে, সেটা সন্তোষজনক নাকি হতাশাব্যঞ্জক। তাই একজন চাষীকে ১০/১৫ দিন পরপর মাছের গড় ওজন নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী  পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

স্বাস্থ্য পরিচর্যায় উদাসীন হওয়া যাবেনা

একজন মৎস চাষী পুকুরে পোনা ছেড়ে এবং খাবার সরবরাহ করার পর তার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না । চাষীর বড় কাজ হল মাছের স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষন করা। মাছের দেহে অস্বাভাবিক লক্ষণ বা ক্ষত হলে সাথে সাথে একজন মৎস বিশেষজ্ঞ বা মৎস কর্মকর্তার শরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করা জরুরী এতে মাছ চাষী ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে থাকে। বাজারে নানা ধরনের ঔষধপত্র এবং পুষ্টি পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, চাষীগণ এ গুলো ব্যবহার করে স্বাস্থসম্মত চাষ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সুবিধা পেতে পারেন।

অতিরিক্ত সার প্রদান থেকে দূরে থাকতে হবে

পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনে জৈব ও অজৈব সারের মাছ চাষে ভুমিকা অনেক । কিন্তু দেখা যায় কেবল মাত্র সার প্রয়োগের মাধ্যমে অনেক চাষী মাছ চাষ করতে চান। তাদের ধারণা সার প্রয়োগ করলে আর কোন প্রকার সম্পূরক খাবার দিতে হবেনা। আর এ ধারনা থেকেই তারা পুকুরে অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করে বিপদ ডেকে আনে। পানিতে প্লাংকটন বুম বেশি হয়ে যায় ও সমস্যার সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে পুকুরের পানি নষ্ট হয় এবং পুকুরে গ্যাস তৈরি হয় ও মাছ মারা যায়। কেবল মাত্র প্রয়োজন হলেই সার প্রয়োগ করা উচিত অন্যথায় সার দেওয়া ঠিক নয়।

পোলট্টি লিটার বা বিষ্ঠা ব্যবহার অনুচিৎ

অনেক চাষী মনে করেন পোল্ট্রির বিষ্ঠাতে খাদ্য মান রয়েছে, আর এ চিন্তা থেকেই তারা পোল্ট্রি লিটারকেই কেবল মাত্র মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু পোল্ট্রি লিটার ব্যবহারের কারণে মৎস চাষীগণ নানান ধরনের সমস্যার স্মুখিন হয়ে থাকেন। পোল্ট্রি লিটারে অনেক সময় কাঠের গুড়া ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা মাছ  খেয়ে পুষ্ঠ হয় না এবং তা থেকে বদহজম হয়ে মাছের পেট ফুলে মারা যায়।

একইভাবে লিটারে শুধু তুষ থাকার কারনে একই সমস্যা হয়ে থাকে। অধিক পরিমানে পোল্ট্রি লিটার পানির গুনাগুন নষ্ট করে। পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের কারণে অনেক মাছ মারা যায় এবং পানির গুনাগুন রক্ষা করতে গিয়ে ঔষধপত্র কিনতে হয় এতে করে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়ে থাকে। পোল্ট্রি লিটারের মাধ্যমে মাছে এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া যায় যেটা স্বাস্থসম্মত নয়। অনেক উন্নত দেশে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে আমাদের দেশেও এন্টিবায়োটিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর একারণে চাষীদেরকে সস্তায় লাভের মানসিকতা  পরিহার করে পোল্ট্রি লিটার মাছ চাষে ব্যবহার  থেকে ফিরে আসতে হবে।

সঠিক নির্দেশনায় ঔষধপত্র ব্যবহার

র্তমানে আধুনিক মাছ চাষে নানান সমস্যা সমাধানের জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি পণ্য এবং ঔষধপত্র পাওয়া যায়। নানা কোম্পানী নানা পণ্য বাজার জাত করছেন আমাদের দেশেও । অনেক সময় চাষী সস্তায় এসব পণ্য  ক্রয় করে প্রতারিত হয়ে থাকেন। আবার অনেক সময় সঠিক ব্যবহার বিধি না জানার ফলে সঠিক মাত্রায় ব্যাবহার না করার কারণে চাষী সুফল পাচ্ছে না । এ কারনেই চাষীর উচিত সঠিক মাত্রা এবং প্রয়োগ বিধি অবশ্যই মেনে চলা ও মাছ চাষের উন্নত কলাকৌশল জানা। তাহলে চাষী সুফল পাবেন।

একাধারে একই পুকুরে মাছ ধরা যাবে না

অনেক চাষীই এই ভুলটি করে থাকেন একই পুকুর থেকে কয়েকদিন একাধারে মাছ ধরেন। এতে করে একজন চাষী ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। কারণ পরপর কয়েকদিন জাল টানার কারনে মাছ আঘাত পাপ্ত হয় এবং খাদ্য গ্রহন বন্ধ করে দেয়। এতে মাছের ওজন  কমে যায় এবং আঘাত জনিত কারনে কিছু সংখ্যক মাছ মারা যেতে পারে। এ কারণে একটানা কয়েক দিন মাছ না ধরে বিরতি দিয়ে মাঝে মাঝে মাছ ধরা উচিত।

আহরিত মাছ পরিবহনে সমস্যা

একজন মাছ চাষী সঠিক ভাবে বাজারজাত করতে না পারলে শেষ দিকে এসে ক্ষতি গ্রস্থ হতে পারে। যেসব মাছ জীবিত অবস্থায় পরিবহন করা হয় সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে অধিক সময় ধরে পরিবহন বা অন্য কেনো ত্রুটির কারণে  মারা যায়। মাছ পরিবহণের আগে কিছু সময় হাপায় রাখা উচিত। মাছ ধরার ৮/১০ ঘন্টা আগে থেকে খাবার দেওয়া বন্ধ করতে হবে তাহলে ধৃত মাছ অধিক সময় জীবিত থাকে। মাছ চাষীরা মাছ চাষের সময় একটু সতর্ক হলে এবং চাষ করার সময় প্রতিটি ধাপে দক্ষতার পরিচয় দিলে ক্ষতির হাত থেকে বা লোকসান থেকে  রক্ষা পেয়ে নিশ্চিত লাভবান হবেন। 

একজন মাছ চাষী যদি উপরের বিষয় গুলো ভালভাবে মেনে চলে তাহলে সে কখনও ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। তাই এজন মৎস চাষীকে মাছ চাষের উন্নত কলাকৌশল সম্পর্কে জানতে হবে।

Leave a Comment


Math Captcha
21 + = 29