ব্যাসার্ধ কাকে বলে?

জ্যামিতিতে বৃত্ত,ব্যাস,ব্যাসার্ধ বেশ পরিচিত এবং একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ কিছু টার্ম। যথাযথ ভাবে এ বিষয় গুলো না জানা থাকলে জ্যামিতিক সমস্যা সমাধানে জটিলতা হতে পারে। ছোট বড় সকল শিক্ষার্থী সহ চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষার্থীদের জন্য এসব প্রাথমিক বিষয়ে পরিষ্কার জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

তাই আজ কথা বলবো ব্যাসার্ধ কাকে বলে ও এর বিস্তারিত নিয়ে। তবে,ব্যাসার্ধ কাকে বলে তা জেনে আসবার পূর্বে বৃত্ত কি তা জানা প্রয়োজন।

বৃত্ত কি?

একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে সর্বদা সমান দূরত্ব বজায় রেখে অন্য একটি বিন্দু তার চারদিকে একবার ঘুরে এলে যে ক্ষেত্র তৈরি হয় তাকে বৃত্ত বলে।

অন্যভাবে বললে, একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে সর্বদা সমান দূরত্ব বজায় রেখে যে বক্ররেখা ঘুরে আসে তাকে বৃত্ত বলে।

আরো পড়ুন ;-পরাগায়ন কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?

লক্ষ্যণীয়

১।একই সরল রেখায় অবস্থিত নয় এমন তিনটি বিন্দু দিয়ে একটি ও কেবল মাত্র বৃত্ত আঁকা যায়।

২। একই সরল রেখায় অবস্থিত এমন তিনটি বিন্দুর মধ্যে দিয়ে কোন বৃত্ত আঁকা সম্ভব নয়।

৩। দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দু দিয়ে অসংখ্য বৃত্ত আঁকা যায়।

এখন ব্যাসার্ধ সংক্রান্ত আলোচনায় ফেরা যাক,

ব্যাসার্ধ কাকে বলে?

চিরায়ত জ্যামিতিতে কোন বৃত্ত বা গোলকের কেন্দ্র  থেকে এর পরিধি পর্যন্ত অঙ্কিত যে কোন রেখাংশই ঐ বৃত্ত বা গোলকের ব্যাসার্ধ, আরো আধুনিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যাকে বৃত্ত বা গোলকের কেন্দ্র বলা হয়। একে বৃত্ত বা গোলকের পরিধির মধ্যকার দূরত্বও বলা হয়। গ্রীকdʌɪˈamɪtə (diameter) এর বাংলা পরিভাষা হিসেবে  সংস্কৃত ব্যস এবং ল্যাটিনˈ (radius) এর বাংলা পরিভাষা হিসেবে ব্যাসার্ধ শব্দটি নেওয়া হয়েছে। ল্যাটিন ভাষায় ˈreɪdɪəs শব্দের অর্থ রশ্মি, যষ্ঠি, অর, রথের চাকার স্পোক। ব্যাসার্ধকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশের ক্ষেত্রে সাধারণত  r চলকটি ব্যবহার করা হয় এবং  ব্যস dকে ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।

অতএব,d=2r

r=d/2

যদি কোন বস্তুর কেন্দ্র না থাকে তবে একে পরিলিখিত বৃত্ত বা পরিলিখিত গোলকের ব্যাসার্ধ তথা পরিব্যাসার্ধ বলা যায়। উভয় ক্ষেত্রেই ব্যাসার্ধ কোন ব্যাসের অর্ধাংশকে বোঝানো ছাড়াও আরো বেশি কিছু নির্দেশ করতে পারে যেখানে সচরাচর একে একটি আকৃতির যেকোন দুটি বিন্দুর মধ্যকার সর্বোচ্চ দূরত্ব হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সাধারণভাবে কোন জ্যামিতিক আকৃতির মধ্যে আবদ্ধ বৃহত্তম বৃত্ত বা গোলকের ব্যাসার্ধই ঐ জ্যামিতিক কাঠামোটির অন্তঃব্যাসার্ধ। একটি বলয়, নল বা অন্য কোন ফাঁপা বস্তুর গহ্বরের ব্যাসার্ধ হল এর অভ্যন্তরীণ ব্যাসার্ধ।

কোন সুষম বহুভুজের ব্যাসার্ধ এর পরিব্যাসার্ধের মতই। একটি বহুভুজের কেন্দ্র থেকে এর যেকোন বাহুর মধ্যবিন্দু পর্যন্ত অঙ্কিত রেখাংশকে এ্যাপথেম বলা হয়। সুষম বহুভুজের অন্তঃব্যাসার্ধকেও অ্যাপথেম বলা হয়ে থাকে। গ্রাফ তত্ত্বে কোন লেখ বা গ্রাফের ব্যাসার্ধ হল u থেকে গ্রাফের যে কোন শীর্ষবিন্দুর সর্বোচ্চ দূরত্বের সকল u শীর্ষবিন্দুসমূহের মধ্যে সর্বনিম্ন দূরত্ব(?)।


পরিসীমা বা পরিধি যুক্ত বৃত্তের ব্যাসার্ধ হল

r=C/2π

আরো জানুন ;-জৈব যৌগ কাকে বলে?

স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় ব্যসার্ধের ব্যবহার

কার্তেসীয়, মেরু, গোলীয়, বেলনাকার সহ অন্যান্য স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় ব্যাসার্ধের আবশ্যিক প্রয়োগ রয়েছে।

কার্তেসীয় স্থানাঙ্ক

মেরু স্থানাঙ্ক

মেরু স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা এক ধরনের দ্বিমাত্রিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা যেখানে কোন সমতলের প্রতিটি বিন্দুকে একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে এর দূরত্ব এবং একটি দিক নির্দিষ্ট থেকে কোণের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয়।

কার্তেসীয় ব্যবস্থার উৎসের সাথে তুলনীয় নির্দিষ্ট বিন্দুকে মেরু বলা হয় এবং মেরু থেকে নির্দিষ্ট দিকে অঙ্কিত রশ্মিকে মেরু অক্ষ বলে। মেরু থেকে অঙ্কিত দূরত্ব হল অরীয় বা রেডিয়াল স্থানাঙ্ক বা ব্যাসার্ধ এবং কোণটি হল কৌণিক স্থানাঙ্কমেরু কোণ বা দিগংশ

বেলনাকার স্থানাঙ্ক

বেলনাকার স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় একটি পছন্দ মাফিক (পূর্ব নির্ধারিত) প্রসঙ্গ অক্ষ এবং এই অক্ষটির লম্বদিকে একটি পছন্দ মাফিক (পূর্ব নির্ধারিত) প্রসঙ্গ তল থাকে। বেলনাকার স্থানাঙ্ক ব্যবস্থার উৎস এমন একটি বিন্দু যেখানে সকল তিন স্থানাঙ্ককে শূন্য ধরা যেতে পারে। এই ব্যবস্থা হল প্রসঙ্গ তল এবং অক্ষের অন্তচ্ছেদ।

সম্পর্কিত;- আয়নিক বন্ধন কাকে বলে? সমযোজী বন্ধন কাকে বলে?

আমাদের সর্বশেষ আপডেট

Leave a Comment