বিশেষ্য পদ কাকে বলে

বিশেষ্য পদ কাকে বলে? বিশেষ্য পদ হল একটি বাক্যের অংশ যা বর্ণিত বিষয়কে বিশেষভাবে বর্ণনা করে। এটি কোন ব্যক্তি, জিনিস, স্থান, অবস্থা বা বস্তুর গুণগত বৈশিষ্ট্য ব্যক্ত করে। যেমন, “সুন্দর ফুল”, “সহজ প্রশ্ন”, “সাদা মেঘ”, “শীতল পানি” ইত্যাদি।

বিশেষ্য

যে পদের দ্বারা কোন ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, অবস্থা, কার্য, সমষ্টি ও গুণ ইত্যাদির নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলে।

বিশেষ্য পদের সংজ্ঞা হলো: যে পদের দ্বারা ব্যাক্তি, জাতি,বস্তু,গুণ,কার্য ইত্যাদির নাম প্রকাশিত হয়,তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়।

বিশেষ্য পদ কাকে বলে

যেমন- 

1. জগদীশচন্দ্র বসু বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ছিলেন। 

2. কয়লা একটি প্রধান খনিজ সম্পদ। 

3. সিংহল ভারতের দক্ষিণে অবস্থিত। 

4. বাঘের সংখ্যা ক্রমশঃ কমে আসছে।

5. বার্ধক্য খুবই কষ্টদায়ক। 

6. দেশ ভ্রমণ মানুষকে খুবই আনন্দ দেয়। 

7. সেবা মানুষের পরম ধর্ম।

উপরের বাক্যগুলিতে ‘জগদীশচন্দ্র’, ‘কয়লা’, ‘সিংহল’, ‘বাঘ’, ‘বার্ধক্য’, ‘দেশ’, ‘ভ্ৰমণ’ এবং ‘সেবা’ প্রভৃতি পদগুলি যথাক্রমে মানুষ, বস্তু, জাতি, অবস্থা, কার্য, সংখ্যা এবং গুণ ইত্যাদির নাম বোঝাচ্ছে বলেই এরা প্রত্যেকে বিশেষ্য পদ। 

আরও কয়েকটি বিশেষ্য পদের উদাহরণ হলঃ

  1. সুন্দর – যে কিছু চমৎকার এবং আকর্ষণীয় সেটি বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন, “সুন্দর ছেলে”, “সুন্দর ফুল”, “সুন্দর নদী”।
  2. বড় – যে কিছু বৃহত্তর বা বড় আকারে সেটি বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন, “বড় ঘর”, “বড় মানুষ”, “বড় বাঘ”।
  3. লাল – যে কিছু লাল রঙের বা লাল রঙবিশিষ্ট সেটি বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন, “লাল গোলাপ”, “লাল চাদর”, “লাল আবহাওয়া”।
  4. মিষ্টি – যে কিছু মিষ্টি বা স্বাদযুক্ত সেটি বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন, “মিষ্টি কথা”, “মিষ্টি মিষ্টি মধুর স্বাদ”, “মিষ্টি মিষ্টি পায়েস”।
  5. খারাপ – যে কিছু খারাপ বা মন্দ সেটি বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন, “খারাপ খবর”, “খারাপ মানুষ”, “খারাপ ফল”।

বিশেষণ কাকে বলে

বিশেষ্য পদ কত প্রকার ও কি কি?

৬ প্রকার। যথাঃ-

1/ সজ্ঞা বা নাম বাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোন ব্যক্তি, প্রাণী,স্থান,নদী,সমুদ্র,পর্বত, গ্রন্থ, ভৌগোলিক স্থান ইত্যাদির নির্দিষ্ট নাম বোঝায়, তাকে সজ্ঞা বা নাম বাচক বিশেষ্য বলে। যেমন –

ব্যক্তির নামঃ ইফাদ, আসিফ, ওমর।

প্রাণীর নামঃ গরু,ছাগল,মহিষ।

স্থানের নামঃ শেরপুর,ঢাকা,ময়মনসিংহ।

নদ-নদীর নামঃ ব্রাহ্মপুত্র, বুড়িগঙ্গা,যমুনা।

সমুদ্রের নামঃ বঙ্গোপসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর।

পাহাড় – পর্বতের নামঃ হিমালয়, আরব সাগর।

গ্রন্থের নামঃ গীতাঞ্জলি, অগ্নিবীণা, বিশ্বনবী।

2/ জাতিবাচক বিশেষ্য

যে পদ দ্বারা কোন একজাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন – মানুষ, গরু,পাখি,গাছ,নদী,ইংরেজ ইত্যাদি।

3/ বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য

যে পদ দ্বারা কোন উপাদানবাচক পদার্থের নাম বোঝায় তাকে বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন – বই, খাতা, কলম, থালা, বাটি, চাল, চিনি, লবণ ইত্যাদি।

4/ সমষ্টিবাচক বিশেষ্য

যে পদ দ্বারা একজাতীয় ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীর সমষ্টি বোঝাশ, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন – জনতা, সমিতি,দল, পাল, মালা, সারি, মাহফিল, ঝাঁক , বহর ইত্যাদি।

5/ ভাববাচক / ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য

যে পদ দ্বারা ক্রিয়ার ভাব বা কাজের নাম বোঝায়, তাকে ভাববাচক বা ক্রিয়াবাচকবিশেষ্য বলে। যেমন – ভোজন, দর্শন, গমন, করা, দেখা, শোনা ইত্যাদি।

6/ গুণবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোন বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বোঝায়, তাকে গুণবাচকবিশেষ্য বলে। যেমন – সৌরভ, স্বাস্থ্য, যৌবন, সুখ, দুঃখ, তারুণ্য, তিক্ততা ইত্যাদি।

Leave a Comment