পদ কাকে বলে? পদ কয় প্রকার? পদ সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলা ব্যকরণ থেকে পদ কাকে বলে (Pod Kake bole) পদ কত প্রকার? পদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে খুব সহজেই আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন। আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরেছি। আশা করছি এটি আপনাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে। তাই অবশ্যই আর্টিকেল টি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

পদ হলো ভাষার সবচেয়ে ছোট একক ইউনিট যা অর্থ ব্যক্ত করে। পদগুলি সাধারণত নাম, ক্রিয়া, বিশেষণ, কার্যকর প্রত্যয়, সংজ্ঞা প্রত্যয় ইত্যাদি হতে পারে। একটি পদ নিম্নলিখিত হতে পারে:

পদ

  • বাংলা (নাম)
  • খাওয়া (ক্রিয়া)
  • সুন্দর (বিশেষণ)
  • করি (কার্যকর প্রত্যয়)
  • সেই (সংজ্ঞা প্রত্যয়)

উপরের পদগুলি ব্যবহৃত হলে নিম্নোক্ত বাক্য গঠিত হতে পারে:

বাংলা ভাষা সুন্দর। (বাংলা এখানে নাম, সুন্দর এবং বিশেষণ) আমি খাওয়া করি। (খাওয়া এখানে ক্রিয়া) সেই বইটি সুন্দর। (সেই এখানে সংজ্ঞা প্রত্যয়)

পদ কাকে বলে? উত্তর: শব্দ বা ধাতু বিভক্তিযুক্ত হয়ে বাক্যে স্থানলাভের যোগ্যতা পেলে, বিভক্তিযুক্ত সেই শন্দ বা ধাতুকে পদ বলা হয়। যেমন, রাম ভাত খায়। রাম হল সর্বনামপদ, ভাত হল বিশেষ্যপদ এবং খায় হল ক্রিয়াপদ।

পদের সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা হলো: বাক্যের অন্তর্গত প্রত্যেকটি অর্থবোধক শব্দকে পদ বলে।

পদ সম্পর্কে বিস্তারিত

অন্যভাবে আলোচনা করে দেখানো হল, যখন কোনো শব্দ বা ধাতু বিভক্তিযুক্ত হয়ে বাক্য গঠন করে, তখন সেই শব্দ বা ধাতুকে পদ বলা হয়। একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো হল: ‘বালকরা স্কুলে পড়ে’ এই বাক্যের মধ্যে ‘বালক’ শব্দটির সাথে “রা”, ‘স্কুল’ শব্দটির সাথে “”, এবং ‘পড়’ ধাতুর সাথে “” যুক্ত হয়ে বাক্যটিকে অর্থপূর্ণ বাক্যে পরিণত করেছে। এখানে “রা”, “এ”, “এ” হলো এক একটি বিভক্তি। এই বিভক্তি সমূহ শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে শব্দগুলিকে পদে রূপান্তর করেছে।

পরিশেষে আশা করা যায় যে পদ কাকে বলে? বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝতে পারছেন। এছাড়া বুঝতে সমস্যা হলে  নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কমেন্ট করে সমস্যাটি জানানোর অনুরোধ রইলো। আর যদি Pod Kake bole এটি ভালো ভাবে বুঝে থাকেন তা হলেও মন্তব্য করতে পারেন।

পদ কাকে বলে

উপসর্গ কাকে বলে

পদের প্রকারভেদ / কয় প্রকার

বাংলা ব্যাকরণে পদ পাচ প্রকার। এগুলো হলো-

১/ বিশেষ্য

২/ বিশেষন

৩/ সর্বনাম

৪/ অব্যয়

৫/ ক্রিয়া

বিশেষ্য পদ

যে শব্দে কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, সমষ্টি, কর্ম, ভাব, কাল গুণ, অবস্থা বুঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়। বিশেষ ভাবে বলা হয় বলে একে বিশেষ্যপদ বলে। বিশেষ্য কথার অর্থ হল কোনো কিছুর নাম। উদাহরণ: মানুষ, রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর, বেদ, আকাশ, নজরুল, কলকাতা, হিমালয়, গঙ্গা, পদ্মা, মেঘনা, অগ্নিবীণা, সভা, সংঘ, সোনা, রূপা ইত্যাদি।

কিছু উদাহরণ হলঃ

  1. লাল ফুল – এখানে “লাল” বিশেষ্যপদ, যা ফুলের রঙ বোঝায়।
  2. উঁচু মানুষ – এখানে “উঁচু” বিশেষ্যপদ, যা মানুষের উচ্চতা বোঝায়।
  3. মিঠা আম – এখানে “মিঠা” বিশেষ্যপদ, যা আমের স্বাদ বোঝায়।
  4. চটপটি চাইনিজ খাবার – এখানে “চটপটি” বিশেষ্যপদ, যা খাবারের স্বাদ বোঝায়।
  5. স্বপ্নময় জীবন – এখানে “স্বপ্নময়” বিশেষ্যপদ, যা জীবনের স্বপ্নসঙ্গীন হওয়া নির্দেশ করে।

বিশেষণ পদ

যে পদ দ্বারা বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ,অবস্থা, সংখ্যা,পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে। যেমন – নীল আকাশ।, দক্ষ কারিগর।,বেলে মাটি।

কিছু উদাহরণ হলঃ

  1. সুন্দর মেঘ – এখানে “সুন্দর” বিশেষণপদ, যা মেঘের সৌন্দর্য বর্ণনা করে।
  2. বড় হাতি – এখানে “বড়” বিশেষণপদ, যা হাতির আকার বর্ণনা করে।
  3. সাদা গায়ের মসুল – এখানে “সাদা” বিশেষণপদ, যা গায়ের মসুলের রঙ বর্ণনা করে।
  4. খাটি মিষ্টি আচার – এখানে “খাটি মিষ্টি” বিশেষণপদ, যা আচারের স্বাদ বর্ণনা করে।
  5. সুস্থ জীবন – এখানে “সুস্থ” বিশেষণপদ, যা জীবনের স্বাস্থ্যকর হওয়া নির্দেশ করে।

সর্বনাম পদ

বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমন – আমি, আমরা, ঐ,কেহ,অন্য,পর ইত্যাদি।

কিছু উদাহরণ হলঃ

  1. তিনি আসছেন। (এখানে “তিনি” হল সর্বনামপদ, যা কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করে তার নাম বলে না।)
  2. আমি সেখানে থাকবো। (এখানে “আমি” হল সর্বনামপদ, যা ব্যক্তিকে নির্দেশ করে তার নাম বলে না।)
  3. এটি আমার। (এখানে “এটি” হল সর্বনামপদ, যা কোন বস্তুকে নির্দেশ করে তার নাম বলে না।)
  4. সে খুব ভালো করছে। (এখানে “সে” হল সর্বনামপদ, যা কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করে তার নাম বলে না।)
  5. আমরা সবাই খুশি। (এখানে “আমরা” হল সর্বনামপদ, যা একটি গোষ্ঠীকে নির্দেশ করে তাদে

অব্যয় পদ

যে পদ সর্বদা অপরিবর্তনীয় থেকে কখনো বাক্যের শোভাবর্ধন করে,কখনো একাধিক পদের, বাক্যাংশের বা বাক্যের সংযোগ বা বিয়োগ সম্বদ্ধ ঘটায়, তাকে অব্যয় পদ বলে। যেমন – আর, আবার, ও, এবং,কিন্তু ইত্যাদি।

কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলঃ

তিনি সব সময় খুশি। (এখানে “সব সময়” হল অব্যয়পদ, যা কোন ক্রিয়ার সময় বলে না কিন্তু তার সময়সূচী নির্দেশ করে।)
তার স্বভাব সর্বদা সে যেমন ছিল তেমনই থাকবে। (এখানে “সর্বদা” হল অব্যয়পদ, যা কোন ক্রিয়ার সময় বলে না কিন্তু সমস্ত সময় নির্দেশ করে।)
আমি খানা খাই না। (এখানে “না” হল অব্যয়পদ, যা কোন ক্রিয়ার অবস্থা নির্দেশ করে না কিন্তু অবস্থার প্রতিটি ধারণাকে নিষ্ক্রিয় করে।)
সে পরিশ্রমী ও দক্ষ। (এখানে “ও” হল অব্যয়পদ, যা দুটি বিষয়কে যুক্ত করে।)

ক্রিয়া পদ

যার দ্বারা কোন কার্য সম্পাদন করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়া বলে। যেমন – খাই, যাই,খান ইত্যাদি।

কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলঃ

  1. লিখা, পড়া, গান গাওয়া, খাওয়া, পান করা, ঘুম ভাঙ্গা।
  2. চলা, আসা, যাওয়া, এসে বসা, উঠা, পড়া।
  3. জুতা পছন্দ করা, মজা করা, ফটো তোলা, ভিডিও দেখা, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা।
  4. কাজ করা, দুধ স্বাদ করা, চা বানানো, বাসা সাজানো, দুপুর খাবার তৈরি করা।
  5. বলা, লাফ দেওয়া, গালাগালি করা, বিতর্ক করা, দোষ দেওয়া।

তাহলে আজ এখানেই শেষ করছি। পদ কাকে বলে (Pod Kake bole) কত প্রকার? সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্টে প্রশ্ন করুন অথবা আমাদের ফেইসবুক পেইজে মেসেজ দিন। আমরা উত্তর দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আর আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

Leave a Comment