সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে বিষয়টি জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলে নানা বিধ বিষয় সম্পর্কে জেনে থাকি কিন্তু আমাদের জানার কোনো শেষ নেই। niyoti.com ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন প্রশ্নের উক্তর খুঁজে পাবেন, যা জেনে অনেক উপকৃত হতে পারেন। আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরেছি। আশা করছি এটি আপনাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে।
সমবাহু ত্রিভুজ
সমবাহু ত্রিভুজ হল একটি ত্রিভুজ যার তিনটি সমদূরী বাহু আছে এবং সমান কোণ রয়েছে দুটি বাহুর মধ্যবর্তীকে। অর্থাৎ, সমবাহু ত্রিভুজের তিনটি বাহু একই দৈর্ঘ্য হতে হবে এবং দুটি বাহুর মধ্যবর্তী কোণ সমান হতে হবে। সমবাহুত্রিভুজ একটি সাধারণ ত্রিভুজের একটি বিশেষ ধরন।
সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে: যে ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান হয় তাকে সমবাহু ত্রিভুজ বলে। অর্থাৎ তিনটি সমান বাহু দ্বারা গঠিত ত্রিভুজ।
তাই এভাবেও বলা যেতে পারে সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে , যে ত্রিভুজের কোণগুলি পরস্পরের সমান হয়, তাকে সমবাহু ত্রিভুজ বলে।
সমবাহু ত্রিভুজের ছোট সংজ্ঞা হলো – যে ত্রিভুজের তিনিটি বাহু সমান তা সমবাহু ত্রিভুজ।
চিত্র
পরিশেষে বলা যায় যে সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝতে পারছেন । এছাড়া বুঝতে সমস্যা হলে নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কমেন্ট করে সমস্যাটি জানানোর অনুরোধ রইলো। আর যদি সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে এটি ভালো ভাবে বুঝে থাকেন তা হলেও মন্তব্য করতে পারেন।
সমবাহু ত্রিভুজের বৈশিষ্ট্য
( i ) এর প্রতিটি বাহু সমান ।
( ii ) প্রতিটি কোণ সমান ।
( iii ) প্রতিটি কোণের মান 60° ।
( iv ) তিনটি মধ্যমার দৈর্ঘ্য সমান ।
( v ) প্রতিটি কোণের সমদ্বিখণ্ডক বিপরীত বাহুর ওপর লম্ব ।
( vi ) প্রতিটি মধ্যমা শীর্ষবিন্দুগুলিকে সমদ্বিখণ্ডক করে ।
( vii ) এই ত্রিভুজের পরিকেন্দ্র , অন্তঃকেন্দ্র , ভরকেন্দ্র ও লম্ববিন্দু চারটি একই বিন্দু ।
( viii ) মধ্যমা ও উচ্চতা একই রেখাংশ ।
সমবাহু ত্রিভুজ আরো কিছু বৈশিষ্ট্য
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক হলে, ক্ষেত্রফল = √34 a2 বর্গ একক।
- মধ্যমা তিনটি পরস্পর যে বিন্দুতে ছেদ করে তাকে ভরকেন্দ্র (centroid) বলে।
- ভরকেন্দ্র থেকে বাহু তিনটির উপর অঙ্কিত লম্বত্রয় পরস্পর সমান।
- পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ R একক এবং শীর্ষ থেকে ভুমির উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য h একক হলে, R = 2h3.
- শীর্ষত্রয় থেকে বিপরীত বাহুত্রয়ের উপর অঙ্কিত লম্ব তিনটি পরস্পর সমান।
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক এবং পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ R একক হলে, R = a√3
- শীর্ষত্রয় থেকে বিপরীত বাহুর উপর অঙ্কিত লম্বত্রয় পরস্পর যে বিন্দুতে ছেদ করে তাকে লম্বকেন্দ্র (orthocenter) বলে।
- বাহুগুলোর দৈর্ঘ্য জানা থাকলে এর মধ্যমাগুলোর দৈর্ঘ্য জানা যায়।
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক, অন্তঃবৃত্তের ব্যাসার্ধ r একক এবং পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ R একক হলে,
r = √36 a
বা, r = √36 √3 R
বা, r = (√3)26 R
বা, r = 36 R
∴ r = R2
- অন্তঃকেন্দ্র, পরিকেন্দ্র, ভরকেন্দ্র ও লম্বকেন্দ্র একই বিন্দু।
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক হলে, পরিসীমা = 3a একক।
- ক্ষেত্রফল ও তার পরিসীমার উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের অনুপাত = 1 : 12 √3.
- শীর্ষকোণগুলোর সমদ্বিখণ্ডকত্রয় পরস্পর যে বিন্দুতে ছেদ করে তাকে অন্তঃকেন্দ্র (incenter) বলে।
- পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ R একক এবং অর্ধপরিসীমা s একক হলে,
s = 3√32 R - একটি বাহু জানা থাকলে এর ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা যায়।
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক এবং শীর্ষ থেকে ভুমির উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য h একক হলে
h = √32 a. - যেকোন বাহুর মধ্যমা সংশ্লিষ্ট ঐ বাহুর উপর লম্ব।
- একটি সুষম ত্রিভুজ।
সমকোণী ত্রিভুজ কাকে বলে | বিস্তারিত
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক হলে, ক্ষেত্রফল = 12 a2 sin60° বর্গ একক।
- যে তিনটি বহিঃবৃত্ত অঙ্কণ করা যায়, তারা (বৃত্ত তিনটি) পরস্পর সর্বসম।
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক এবং সমান সমান দৈর্ঘ্যের মধ্যমা d একক হলে, 3a2 = 4d2.
- যেকোন বাহুর লম্বসমদ্বিখণ্ডক ত্রিভুজটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভূজে বিভক্ত করে।
- ক্ষেত্রফল ও তার অন্তঃবৃত্তের ক্ষেত্রফলের অনুপাত = 3√3 : π.
- বাহুগুলোর লম্বসমদ্বিখণ্ডকত্রয় পরস্পর যে বিন্দুতে ছেদ করে তাকে পরিকেন্দ্র (circumcenter) বলে।
- লম্বতিনটির দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান।
- ভরকেন্দ্র মধ্যমাকে শীর্ষ থেকে ভূমির দিকে 2:1 অনুপাতে বিভক্ত করে।
- পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ R একক এবং ক্ষেত্রফল A বর্গ একক হলে, A = 3√34 R2
- শীর্ষ থেকে বিপরীত বাহুর উপর অঙ্কিত লম্ব ঐ বিপরীতবাহুকে বা ভূমিকে সমদ্বিখণ্ডিত করে।
- কোণগুলোর সমদ্বিখণ্ডকত্রয়, বাহুগুলোর লম্বসমদ্বিখণ্ডকত্রয়, মধ্যমাত্রয় এবং লম্বত্রয় মূলত একই রেখাংশ।
- যেকোন এক বাহুর উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রকে √34 দ্বারা গুণ করলে সমবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়।
- পরিকেন্দ্র থেকে শীর্ষবিন্দুগুলোর দুরত্ব পরস্পর সমান।
- অভ্যন্তরস্থ যেকোন বিন্দু হতে বাহু তিনটির উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য d,e ও f একক এবং লম্বের দৈর্ঘ্য h একক হলে, d + e + f = h.
- যেকোন মধ্যমা ত্রিভুজটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভূজে বিভক্ত করে।
- শীর্ষ থেকে ভুমির উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য h একক এবং ক্ষেত্রফল A বর্গ একক হলে, A = h2√3.
- শীর্ষকোণগুলোর সমদ্বিখণ্ডক তিনটির দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান।
- লম্বের দৈর্ঘ্য h একক হলে, ভরকেন্দ্র থেকে যেকোন বাহুর উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য h3 একক।
- অন্তঃকেন্দ্র থেকে বাহুগুলোর উপর অঙ্কিত লম্বতিনটির দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান।
- অন্তঃবৃত্তের ব্যাসার্ধ r একক এবং শীর্ষ থেকে ভুমির উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য h একক হলে, r = h3.
- বাহুর দৈর্ঘ্য a একক এবং শীর্ষ থেকে ভুমির উপর অঙ্কিত লম্বের দৈর্ঘ্য h একক হলে, a : h = 2 : √3.
সমবাহু ত্রিভুজের পরিসীমার সূত্র
মনে করি, △ABC এর AB = BC = AC = a একক।
সুতরাং পরিসীমা P হলে,
P = (a + a + a) একক
∴ P = 3a একক
সমবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল
মনে করি, △ ABC এর AB = BC = AC = a
A বিন্দু থেকে BC এর উপর AD লম্ব অঙ্কণ করি। অর্থাৎ AD⊥BC আঁকি।
∴ BD = 12 BC
∴ BD = a2
সমকোণী △ABD হতে লিখা যায়,
AD2 = AB2 – BD2
বা, AD2 = a2 – a24
বা, AD2 = 4a2 – a24
বা, h2 = 3a24
বা, h = √3a2√4
বা, h = √32 a
∴ △ABC = 12 BC . h
বা, △ABC = 12 a . √32 a
∴ △ABC = √34 a2
সমবাহু ত্রিভুজের বাহুর দৈর্ঘ্য a একক এবং ক্ষেত্রফল A হলে
A = √34 a2 বর্গ একক।
সূচীপত্র