আমরা সকলে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জেনে থাকি কিন্তু আমাদের জানার কোনো শেষ নেই। গুণনীয়ক কাকে বলে বিষয়টি আমাদের সবার জন্য জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। niyoti.com ওয়েবসাইটে আপনি নানাবিধ প্রশ্নের উক্তর খুঁজে পাবেন, যা জেনে অনেক উপকৃত হতে পারেন। আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরেছি। আশা করছি এটি আপনাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে।
গুণনীয়ক
কোন সংখ্যা, যে সকল সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য ঐ সকল সখ্যাকে সেই সংখ্যার গুণনীয়ক বলে। মোট কথা গুণনীয়কের মানে ভাগ করা।
যেমনঃ ১২ এর গুণনীয়ক হলোঃ ১,২,৩,৪,৬,১২। এই ছয়টি সংখ্যা দিয়ে ১২ কে নিঃশেষে ভাগ করা যায় তাই এরা ১২ এর গুণনীয়ক
গুণনীয়ক হল এমন একটি সংখ্যা যা একটি গুণনের ফলের একটি উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ এমন সংখ্যা যা দুই বা ততোধিক সংখ্যাকে গুণ করলে তাদের গুণফলের একটি উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুন ;- গুনিতক কাকে বলে? উদাহরণ সহ
কিছু সংখ্যার গুণনীয়কের উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
১। ৭ কে ১ ও ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ থাকে না।
সুতরাং ৭ এর গুণনীয়ক হলো:- ১,৭।
২। ১৫ কে ১,৩ ,৫ ও ১৫ দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ থাকে বনা।
সুতরাং ১৫ এর গুণনীয়ক হলো:- ১,৩, ৫, ১৫।
৩। ১৮ কে ১,২,৩,৬,৯, ও ১৮ দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ থাকে না।
সুতরাং ১৮ এর গুণনীয়ক হলো:- ১, ৩, ৬, ৯, ১৮।
গুণনীয়কের প্রকারভেদ
১, প্রকৃত
২, মৌলিক
৩, যৌগিক বা কৃত্রিম
প্রকৃত গুণনীয়কের সংজ্ঞা
কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার ক্ষেত্রে 1 এবং ঐ সংখ্যা ছাড়া বাকী সব গুননীয়ক গুলিতেপ্রকৃত গুণনীয়ক বলে। যেমনঃ 12 এর গুণনীয়ক গুলি হল1, 2, 3, 4, 6 এবং 12। অতএব, 12 এর প্রকৃত গুণনীয়ক গুলি হল 2, 3, 4 এবং 6।
মৌলিক গুণনীয়কের সংজ্ঞা
কোনো স্বাভাবিক সংখ্যার ক্ষেত্রে 1 এবং ঐ সংখ্যা ছাড়া অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হয় না, তাকে মৌলিক গুণনীয়ক বলে।
যেমনঃ 5 সংখ্যাটি 1 ও 5 ছাড়া অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হয় না। সুতরাং, 5 একটি মৌলিক গুণনীয়ক।
মৌলিক গুণনীয়কের সমাধান
একটি সংখ্যার মৌলিক গুণনীয়কগুলি খুঁজে বের করার সবচেয়ে সহজ অ্যালগরিদম হল মূল সংখ্যাটিকে মৌলিক গুণনীয়ক দ্বারা ভাগ করা চালিয়ে যাওয়া যতক্ষণ না আমরা অবশিষ্টাংশ 1 এর সমান না পাই । উদাহরণ স্বরূপ, আমরা যে সংখ্যাটি 30টি পাই তা প্রাইম ফ্যাক্টরাইজ করে, 30/2 = 15, 15/3 = 5, 5/5 = 1। যেহেতু আমরা বাকিটা পেয়েছি, তাই এটিকে আর ফ্যাক্টরাইজ করা যায় না।
যৌগিক বা কৃত্রিম গুণনীয়কের সংজ্ঞা
যে সব স্বাভাবিক সংখ্যার দু-এর অধিক গুণনীয়ক থাকে, সেই সব সংখ্যাগুলোকে ওই সংখ্যার যৌগিক বা কৃত্রিম গুণনীয়ক বলে।
যেমনঃ 6 সংখ্যাটির গুণনীয়ক হলো, 1, 2, 3 ও 6।
সুতরাং, 6 সংখ্যাটির দু-এর অধিক গুণনীয়ক থাকায় এটি একটি যৌগিক বা কৃত্রিম গুণনীয়কের উদাহরণ।
সাধারণ গুণনীয়ক
কোন সংখ্যা দুই বা তার অধিক প্রদত্ত সংখ্যার উৎপাদক হলে, ঐ সংখ্যাকে প্রদত্ত সংখ্যাগুলোর সাধারণ গুণনীয়ক বলা হয়।
যেমন, ২০= ৫×২×২ ২৫= ৫×৫
এখানে ২০ সংখ্যাটির মৌলিক উৎপাদক হচ্ছে ৫, ২, ২ এবং ২৫ এর মৌলিক উৎপাদক হচ্ছে ৫, ৫।
সুতরাং ২০ ও ২৫ এর সাধারণ উৎপাদক ৫।
গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক ( গ.সা.গু)
দুই বা ততোধিক সংখ্যার বৃহত্তম সাধারণ গুণনীয়কের গরিষ্ঠ সাধারণ বা সংক্ষেপে গ.সা.গু বলে।
গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক হল এমন একটি সংখ্যা যা একটি সমষ্টির সকল গণকে একত্রে আঁকা যায়। সাধারণত, গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক হল সেটার উচ্চতম মান বা সেটার উচ্চতম কম কোনো সংখ্যা না হলেও হতে পারে।
যেমন, একটি সংখ্যার গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক হল সেটার উচ্চতম মান যদি সেটিতে থাকা সমস্ত সংখ্যার থেকে বড় হয়। একটি উদাহরণ দেখা যাক।
একটি সেট আছে { 1, 3, 5, 7, 9 }। এখানে গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক হল 9 যেটি সেটে থাকা সকল সংখ্যার থেকে বড়।
আবার, যদি সেটে কোনো সংখ্যা থাকে যা সেটে থাকা সকল সংখ্যার চেয়ে ছোট হয়, তাহলে গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক হবে সেটির উচ্চতম মান।
দুইটি সংখ্যার অনুপাত ৫:৭ এবং তাদের গ.সা.গু. ৮ হলে, তাদের ল.সা.গু. হবে?
ধরি, সংখ্যা দু’টি হল = 5x and 7x.
এখন, গ.সা.গু মানেই হল দুই বা ততোধিক সংখ্যার যতগুলো সাধারণ উৎপাদক ( common factor) আছে তাদের মধ্যে সবথেকে বড় সাধারণ উৎপাদক৷
এখন, 5x ও 7x এর মধ্যে সাধারণ উৎপাদক আছেই একটি, আর তা হলঃ x. সুতরাং 5x ও 7x এর যতগুলো সাধারণ উৎপাদক আছে, তার মধ্যে সবথেকে বড় উৎপাদকও x. তাই, সংখ্যা দু’টির তথা 5x ও 7x এর গ.সা.গু = x.
প্রশ্নমতে,
x = 8
সুতরাং, সংখ্যা দু’টি হলঃ 5x ও 7x
বা, (5 * 8) ও (7 * 8)
বা, 40 ও 56
এখন, 40 ও 56 এর ল.সা.গু হলঃ 280 (Answer)
জটিল ল.সা.গু. বা গ.সা.গু. কিভাবে করবো? সূত্র থাকলে, জানানো যাবে কি?
এটির আসল উত্তর ছিল: জটিল ল.সা.গু বা গ.সা.গু কিভাবে করবো? সূত্র থাকলে জানানো যাবে?
ল.সা.গু(L.C.M) : – দুই বা ততোধিক সংখ্যা র সাধারণ গুনিতকের মধ্যে ক্ষুদ্রতম গুনিতককে তাদের লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক বা ল. সা. গু. বলা হয়।
লসাগু নির্ণয়ে ৩ টি পদ্ধতি আছে। য থা:-
(১) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি (২) উৎপাদক পদ্ধতি (৩) ইউক্লিড পদ্ধতি। ইউক্লিড পদ্ধতি জনপ্রিয়।
গ.সা.গু.( H. C.F): – দুই বা ততোধিক সংখ্যা র সবচেয়ে বড় সাধারণ গুননীয়ক কে গরিষ্ঠ সাধারণ গুনোণীয়ক বলে।
গসাগু নির্নয় এ দুইটি পদ্ধতি আছে। যথা:-
ক. উৎপাদক পদ্ধতি খ. প্রচলিত ভাগ প্রক্রিয়া।
প্রয়োজনীয় সূত্রাবলী:
***সূত্র ১: দুইটি সংখ্যার গুণফল = ল.সা.গু× গ. সা. গু।
***সূত্র ২: ল.সা.গু= দুইটি সংখ্যার গুণফল ÷ গ.সা. গু।
***সূত্র ৩: গ.সা.গু= দুইটি সংখ্যার গুণফল ÷ ল.সা.গু।
***সূত্র ৪: অপর সংখ্যা টি= ( ল. সা. গু× গ. সা.গু) ÷ একটি সংখ্যা।
***সূত্র ৫: ল .সা.গু= অনুপাত দয়ের গুণফল × গ. সা. গু।
****সূত্র ৬: লঘিষ্ঠ সংখ্যা = (বিভাজ্য সংখ্যা গুলোর ল.সা.গু – যোগফল )।
*** সূত্র ৭: ভগ্নাংশের গ.সা.গু =( লব গুলো র ল.সা.গু)÷( হরগুলোর গসাগু)
***সূত্র ৮: ভগ্নাংশের ল.সা.গু= ( লব গুলোর ল .সা.গু.)÷(হরগুলো র গসাগু)
*** ভগ্নাংশের গুণফল= ভগ্নাংশের ল.সা.গু × ভগ্নাংশের গ.সা.গু।
গুনিতক এবং গুননিয়কঃ
একটি সংখ্যাকে যে কোনো সংখ্যা দ্বারা গুন করলে যে গুনফল পাওয়া যায় সেটাই হলো ঐ সংখ্যার গুনিতক। যেমন: 24×2=48. এখানে 48 হলো 24 এর গুনিতক। আর, একটি সংখ্যাকে যে কোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যায় সেটাই হলো ঐ সংখ্যার গুননিয়ক। যেমন: 24/2=12. এখানে 12 হলো 24 এর গুননিয়ক। [গুণনীয়ক এবং গুনিতক উভয়ই এক বা একাধিক হতে পারে]
গুনিতক এবং গুননিয়ক এর পার্থক্যঃ
মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। দুই বা ততোধিক সংখ্যার সাধারণ গুণিতকগুলির মধ্যে যে গুণিতকটি ক্ষুদ্রতম, তাকে প্রদত্ত সংখ্যাগুলির লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক বলে। অন্যদিকে কয়েকটি সংখ্যার সাধারণ গুণনীয়ক বা উৎপাদকগুলির মধ্যে যেটি গরিষ্ট(বড়ো), তাকে প্রদত্ত সংখ্যাগুলির গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক বলে।
২। ল.সা.গু শব্দের পূর্ণরুপ হল লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক। অন্যদিকে সংখ্যার সাধারণ গুণনীয়কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টিকে তাদের গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক।
৩। লসাগু (গুণিতক) নির্ণয়ের দুটি পদ্ধতি যথা-
(ক) প্রত্যেক রাশি যৌগিক উৎপাদক বিশ্লেষণ এর দ্বারা ।
(খ) সাধারণ উৎপাদক বিশ্লেষণ এর দ্বারা ।
অন্যদিকে গ.সা.গু. নির্ণয় এর দুটি পদ্ধতি আছে। যথা-
(ক) যৌগিক উৎপাদক বিশ্লেষণ এর দ্বারা এবং
(খ) ভাগ পদ্ধতির সাহায্যে।
Visit Product Buy Sell Website
সূচীপত্র