ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে শিখবো – ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

আপনিও অবশই ঘরে বসে ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করার উদ্দেশ্যে ফ্রিল্যান্সিং করার কথা ভাবছেন। এক্ষেত্রে, “ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব” এবং “কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো” এই দুটি প্রশ্ন আপনার মনে অবশই ঘর করে বসেছে।
তবে চিন্তা করবেননা, এই ধরণের প্রশ্ন থাকাটা স্বাভাবিক এবং জরুরি।

কেননা, বর্তমানে কোনো স্কুল বা কলেজে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়না।
আর যার ফলে, এই freelancing এর বিষয়টা প্রথম অবস্থায় আমাদের কিছুটা অন্যরকম অবশই মনে হয়ে থাকে।
তবে চিন্তা করবেননা, আজকে, freelancing নিয়ে আমি আপনাদের অনেক কিছু পরিষ্কার করে বলবো।

 

অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব ?

Google search
YouTube
Udemy
lynda.com
khanacademy.org
অনলাইনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রশিক্ষণ ও কাজ শিখার বিভিন্ন প্লাটফর্ম রয়েছে।

  1. আপনারা অনেক সহজেই Google search করে প্রচুর ওয়েবসাইট খুঁজে পাবেন যেখানে freelancing এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ রয়েছে।
  2. YouTube হলো এমন একটি জনপ্রিয় platform, যেখানে ফ্রীতেই যেকোনো বিষয়ে ভিডিওর মাধ্যমে জেনে নেওয়া সম্ভব। তাই, YouTube এর মাধমেও freelancing এর বিষয়ে সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান পেয়ে যাবেন।
  3. Udemy হলো এমন একটি জনপ্রিয় online website যেখানে যেকোনো professional course আপনারা পেয়ে যাবেন। হে, কিছু টাকা আপনার অবশই দিতে হবে। তবে, professional ভাবে freelancing শেখার জন্য Udemy video courses কিন্তু সেরা।
  4. Lynda.com হলো একটি জনপ্রিয় online platform, যেখানে ভিডিওর মাধ্যমে freelancing সহ অন্যান্য অনেক ধরণের courses করে নিতে পারবেন। এখানে আপনারা ১ মাসের জন্য ফ্রি এক্সেস পাবেন।
  5. Khanacademy হলো জনপ্রিয় online platform যেখানে আপনারা freelancing এর সাথে জড়িত tutorials পাবেন।

তাহলে বুঝলেন তো, Freelancing শেখার জন্য আপনার কোন online platform গুলো ব্যবহার করা দরকার।তবে, আপনারা চাইলে local institute থেকেও freelancing এর training নিতে পারবেন।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করব

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার মুলমন্ত্র হলো মেধা বা দক্ষতা। থাকতে হবে ধৈর্য্য। বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হলো ইংরেজি না জানা বা কম জানা। গার্টনারের জরিপে দেখা গেছে, দেশের তরুণেরা আউটসোর্সিংয়ে পিছিয়ে থাকার পেছনে ইংরেজিদুর্বলতা দায়ী। আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটি অনেকে বুঝতে চান না।

যেহেতু বিদেশী বায়ারেরসাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয় সে জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। নতুবা কোনভাবেই আপনি আপনার বায়ারেররিকোয়ারমেন্ট যেমন বুঝতে পারবেন না তেমনি কোন সমস্যাও তাকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন না। ইংরেজিতে দূর্বলরা উপরের কথাপড়ে হয়ত ভড়কে যেতে পারেন, তবে তাদের জন্য বলতে পারি যে আপনাকে কিন্তু ইংরেজিতে পন্ডিত হতে হবে এমনটি নয়।

ভাববিনিময় এবং ব্যবসায়িক কাজগুলোর জন্য সাধারণত যে ইংরেজি ব্যবহৃত হয় সেটি জানলেই চলবে। যারা ইংরেজিতে দূর্বল তাদেরএটি দূর করতে খুব বেশি যে সময় লাগবে এমনটি নয়, ২ থেকে ৩ মাস একটু চেষ্টা করলেই এ ধরনের ইংরেজি রপ্ত করা সম্ভব। এছাড়াপ্রয়োজনীয়ভাবে সংশ্লিষ্ঠ কাজের পাশাপাশি ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।

কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডেডলাইনেরদিকে নজর রাখা জরুরী। পারলে ডেডলাইনের আগে ভাগেই কাজটি শেষ করে বায়ারের কাছে জমা দেওয়া ভালো। এছাড়া ভালোরেটিং পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা রাখতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পরিমাণ কাজ করার মানসিকতা তৈরিকরতে হবে। আর হ্যাঁ, দ্রুত কাজের জন্য অবশ্যই অপেক্ষাকৃত ভালোমানের কম্পিউটার ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট থাকতে হবে। আরকাজের ধরন অনুযায়ি স্ক্যানার, ডিজিটাল ক্যামেরা বা অন্য কোনো যন্ত্রেরও প্রয়োজন পড়তে পারে।

দক্ষতা অনুযায়ি কাজ বেছে নেওয়াঃ

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতার পিছনে প্রথমে যে কাজটি কাজ করে সেটি হলো নিজের দক্ষতা বা পছন্দের বিষয় অনুসারে কাজ খুঁজে বেরকরা। একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রথম কাজ হলো তিনি কি করবেন সেটি আগে নির্ধারণ করা। বিষয় নির্ধারণ করে সেক্ষেত্রে নিজেকে যেবিষয়ে আন্তর্জাতিকমানের হিসেবে গড়ে তুলেছেন বা তুলতে পারার মতো মনোবল আছে সেটি প্রাধাণ্য দেয়া উচিত।

কারণ তাকেআন্তর্জাতিক মার্কেটে অভিজ্ঞদের সাথে বিড করে কাজ পেতে হবে। অভিজ্ঞ নন, সে বিষয়ে নিয়ে কাজ করতে যাওয়া মানেইবোকামির পরিচয়।

প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ নেয়াঃ

সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট কিংবা কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট যাই হোক না কেনো সে বিষয়ে যথেষ্ঠ জ্ঞান থাকতে হবে। বিষয়টি সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে প্রশিক্ষণ নেয়া যেতে পারে। সম্প্রতি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ফ্রিল্যান্সার.কম আয়োজিত সার্চইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ও কন্টেন্ট রাইটিং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী বাংলাদেশি সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান ডেভসটিম লিমিটেডফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

৩ মাস মেয়াদী এসব প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বিভিন্নধারণা পেতে রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টারের ১২ তলায় অবস্থিত ডেভসটিম অফিস ঘুরে আসতে পারেন। এছাড়া বেসিসসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ফ্রিল্যান্সার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিডি জবস, ড্যাফোডিল ইনস্টেকটিউনসউট অব আইটি।

মার্কেটপ্লেস নির্বাচনঃ

ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে মার্কেটপ্লেস বলতে বোঝায় যেখান থেকে ফ্রিল্যান্স কাজ পাওয়া যায় বা দেয়া যায়। যারা এসব সাইটে কাজ দেয়তাদের বলা হয় বায়ার বা ক্লায়েন্ট। আর যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদের বলা হয় কোডার বা প্রোভাইডার। কোডার একটিকাজের জন্য বা প্রজেক্টের জন্য বিড বা আবেদন করে। কত দিনের মধ্যে প্রজেক্ট জমা দিতে হবে, কত টাকায় তা সম্পন্ন করতে হবেসব বিষয় পরিস্কার উল্লেখ থাকে। কোডাররা আবেদন করার পর ক্লায়েন্ট যাকে ইচ্ছা তাকে কাজটির জন্য নির্বাচন করতে পারে।

ক্লায়েন্ট সাধারণত কোডারের পূর্ব অভিজ্ঞতা, বিড করার সময় কোডারের মন্তব্য ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। কোডার নির্বাচিত হবার পর ক্লায়েন্ট কাজের টাকা সাইটগুলোতে জমা করে দেয়। কোডার কাজ শেষ করার সাথে সাথে টাকাপাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়ে যান। যে সাইটির মাধ্যমে কাজটি পাওয়া গেছে সে সাইটটি নির্দিষ্ট কমিশন রেখে বাকি টাকা কোডারেরঅ্যাকাউন্টে জমা করে দেয়। আর এসব কাজে মাধ্যম হিসেবে কাজ করে মার্কেটপ্লেস।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক সাইট রয়েছে। এধরণের জনপ্রিয় কিছু সাইট হলো- ওডেস্ক.কম, ফ্রিল্যান্সার.কম, স্কিপ্টল্যান্সার.কম, রেন্ট-এ-কোডার.কম, ইল্যান্স.কম, জুমলাল্যান্সার.কম, গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার.কম। এসব সাইটে বিনামুল্যে নিবন্ধণ করে শুরু করা যেতে পারে ফ্রিল্যান্সিং কাজ। নিবন্ধনেরআগে অবশ্যই সাইটটির বিভিন্ন নিয়মাবলি, কাজ পাবার যোগ্যতা, পেমেন্ট মেথড বা বিভিন্ন চার্জ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতেহবে।

আবেদনের প্রস্তুতিঃ

মার্কেট প্লেসে নিবন্ধনের পরপরই ভালো একটা কাভার লেটার তৈরি করা উচিত, যা ক্লায়েন্টের কাছে কাজের আবেদনের সময়লাগবে। সাথে আগে সম্পন্ন করা উল্লেখযোগ্য কাজের লিস্ট বা একটি ভালো পোর্টফলিও তৈরি করা। বায়ার কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে মূলতএই পোর্টফলিও বা কাজের অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিবেচনা করেন। রেজিস্ট্রেশন করার সময় ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদিসঠিকভাবে দিতে হবে।

রেজিষ্ট্রেশনের একটি ধাপে আপনার একটি প্রোফাইল/রিজ্যুম তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি কোন কোনক্ষেত্রে পারদর্শী তা উল্লেখ করবেন। এখানে আপনি আপনার পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা, ওয়েবসাইট লিংক ইত্যাদি দিতে পারেন। মনেরাখতে হবে, আপনার প্রোফাইলটি যত প্রফেশনালি এবং বেশি তথ্য দিয়ে সাজাতে পারবেন আপনার কাজ পাবার সম্ভাবনাও তত বেশিহবে।

তবে কোনো মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে যে বিষয়ে দক্ষতা আছে সেটি ভালোভাবে তুলে ধরা উচিত। কোনো কাজ গ্রহণের আগেসেটির সময়সীমা, বাজেট ও সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। আর ক্লায়েন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যইসতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। পারলে সেই ক্লায়েন্টের পূর্বের কোনো রিভিউ দেখে নেয়া। কারণ অনেক সময় ক্লায়েন্ট প্রতারক হলেকাজটি করিয়ে প্রতারণা করতে পারেন।

কোনটা শিখব?

কাজ শেখার কথা বললেই প্রথমেই আসে আপনি কোন কাজটা শিখবেন? এবং এটা নিয়ে অনেকেই আমাকে মেইল/এফবি এবং টিউনে টিউমেন্ট করেন। কাজের ক্ষেত্রে আমি প্রথমেই রিটিউমেন্ট করবো, আপনি যদি আগে কোন কাজ জেনে থাকেন সেই কাজটাই নতুন করে শিখুন।

আর নতুনরা আপনাদের যেটার প্রতি আগ্রহ অনুভব করবেন, যেমন আপনার ছোটকাল থেকে আঁকাআঁকির অভ্যাস সেক্ষেত্রে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন শুরু করুন। আর যারা ম্যাথে ভালো করেছেন, তারা ওয়েব ডিজাইন শুরু করতে পারেন। তাছাড়া যাদের এই দুটিতেই দুর্বল তারা এসইও করতে পারেন। আর যাই শিখবেন এডভান্স শিখুন। কারণ আমি আগেই বলেছি, ফ্রিল্যান্সিং এ বেসিক লেভেলের কোন কাজ দিয়ে আপনি কিছু করতে পারবেন না। তাই যে কাজটা আগে শিখেছেন সেটাই নতুন করে আবার শুরু করুন এবং বার বার প্রাকটিস করুন।

আপনার কাজের সাথে রিলেটেড বিভিন্ন আর্টিকেল পড়ুন। যারা প্রফেশনালী ঐ কাজগুলো করেন, তাদের কাজের স্যাম্পল দেখুন। আপনি সে রকম আরেকটি তৈরী করার চেষ্টা করুন। এভাবে ভালোভাবে কাজ শেখার পর অন্তত দুমাস সময় নিন, সব ধরনের জটিল জটিল কাজগুলো প্রাকটিস করে আয়ত্ত করার।

রম্বস কাকে বলে? রম্বসের সূত্র ও বৈশিষ্ট্য

ফ্রিল্যান্সিং

Leave a Comment