ভলিবল সারাবিশ্বে অন্যান্য জনপ্রিয় খেলার মত একটি জনপ্রিয় খেলা। আমাদের দেশেও মাঝেমধ্যে গ্রামে বা শহরে ভলিবল খেলা খেলতে দেখা যায়। ভলিবল মূলত একটি ইনডোর খেলা। কবে বাংলাদেশে খোলা মাঠে খেলতে দেখা যায়।
ভলিবল খেলার নিয়ম কানুন আমাদের দেশের অনেক মানুষই জানে না। খুব বেশি প্রচলিত নয় বলে দেশের মানুষ বা আমরা এর নিয়ম কানুন সম্পর্কেও খুব বেশি জানাশোনা নেই। তাই আজকে চলুন আমরা ভলিবল খেলার খুঁটিনাটি নিয়ম কানুন সম্পর্কে জেনে নেই।
ভলিবল খেলা বিষয়ক তথ্য
ভলিবল খেলার ইতিহাস
ভলিবল খেলার নিয়ম কানুন সম্পর্কে আগে একটু এই খেলার ইতিহাস সম্পর্কে জানা উচিত। এই খেলা কোথা থেকে এল, কিভাবে উৎপত্তি এবং কিভাবেই বা সারা বিশ্ব ছড়িয়ে পড়ল তা জানা উচিত। ভলিবল একটি দলগত খেলা। খোলা জায়গায় কিংবা জিমন্যাশিয়ামে সকল বয়সের নারী-পুরুষ ভলিবল খেলতে পারে।
এই আনন্দপূর্ণ খেলাটির উদ্ভব ঘটে আমেরিকায়। ১৮৯৫ সালে ম্যাসাচুসেটস হলিউকের ওয়াই.এম.সি.এ কলেজের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক উইলিয়াম জি. মরগ্যান এ খেলা আবিষ্কার করেন। ১৮৯৬ সালে আমেরিকার স্প্রিং ফিল্ড কলেজের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষকরাই এ খেলার ধরন অনেকটা ভলি-এর মতো দেখে এর নাম ভলিবল রাখেন।
১৯৪৭ সালের ২০ এপ্রিল ফ্রান্সের পল শিবার্ড-এর প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশন গঠিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশন গঠিত হয়। তখন থেকে বাংলাদেশে ভলিবল খেলার প্রসার ও জনপ্রিয় করতে এই ফেডারেশন কাজ করে আসছে।
ভলিবল খেলার নিয়মকানুন
১৮৯৭ সালে সর্বপ্রথম ভলিবল খেলার নিয়ম কানুন তৈরী করা হয়। কিন্তু ১৮৯৭ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন নিয়মরীতি তৈরী করে এবং সেই অনুযায়ী দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা শুরু করে। ভলিবল খেলার কয়েকটি অনুষঙ্গ হলো–
- খেলার কোর্ট
- নেট
- বল
মাঠ
খেলার কোর্ট খেলার কোর্ট হবে একটি আয়তক্ষেত্র যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের মাপ যথাক্রমে ১৮ মিটার x ৯ মিটার। কোর্টের মেঝে থেকে ৭ মিটার উচ্চতার মধ্যে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।
বাউন্ডারি লাইন কোর্টের চতুর্দিকের সীমানা ৫ সেন্টিমিটার চওড়া বাউন্ডারি লাইন যারা চিহ্নিত করতে হবে। বাউন্ডারি লাইন থেকে চারদিকে ২ মিটার বিস্তৃত স্থান প্রতিবন্ধকতা মুক্ত থাকতে হবে।
সেন্টার লাইন কোর্টের দুই পার্শ্বরেখাকে সমান দুভাগে ভাগ করে একটি রেখা টেনে দু’দিকে যুক্ত করতে হবে। এই রেখাটি ভলিবল নেটের সরাসরি নিচে হবে এবং দুভাগে বিভক্ত করবে। এ্যাটাক এরিয়া মধ্য লাইনের সমান্তরালে মধ্য লাইন থেকে ৩ মি. দূরে একটি লাইন টানতে হবে যার দু’প্রান্ত দুই পার্শ্বের লাইনের সাথে গিয়ে মিশবে।
মধ্য লাইন বা মধ্যরেখা দ্বারা বিভক্ত দু’টি কোর্টে ২টি অ্যাটাক এরিয়া তৈরি হবে, এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে যথাক্রমে ৯ মিটার × ৩ মিটার। সার্ভিস এরিয়া ব্যাক লাইনের পিছনে পুরো জায়গা এবং ব্যাক লাইন থেকে ২০ সে:মি: ফাঁক রেখে ১৫ সে:মি: দাগ দিতে হবে। এর ভিতরের জায়গাকে সার্ভিস এরিয়া বলে।
যদি ইনডোর কোর্ট হয় তাহলে কোর্টের তাপমাত্রা ১০° সেলসিয়াস অথবা ৫০° ফারেনহাইটের নিচে হবে না।
আরো পড়ুন: ক্রিকেট খেলার নিয়ম কানুন, ইতিহাস, বিশ্বকাপ, রেকর্ড বিষয়ক যাবতীয় তথ্য
নেট
মাপ ও গঠন : নেটের দৈর্ঘ্য ৯.৫ মিটার এবং প্রস্থ ১ মিটার হবে। নেটের প্রতিটি ঘর ১০ সেন্টিমিটার বর্গাকার হবে। নেটের উপরের প্রান্তদেশ ৫ সেন্টিমিটার চওড়া সাদা ক্যানভাস কাপড় দ্বারা দু ভাঁজ করে মোড়া থাকবে।
এই ক্যানভাসের মধ্য দিয়ে নমনীয় তার বা রশি ঢুকিয়ে নেটের উপরের প্রান্তদেশ সোজা টানা অবস্থায় রাখতে হবে। নেটের উচ্চতা : নেটের মাঝামাঝি জায়গায় ভূমি থেকে শীর্ষদেশের উচ্চতা পুরুষদের জন্য ২.৪৩ মিটার, মহিলাদের জন্য ২.২৪ মিটার হবে।
সাইড মার্কার ও অ্যান্টেনা : সাইড লাইন ও সেন্টার লাইনের সংযোগস্থলে ৫ সেন্টিমিটার চওড়া একটি সাদা ফিতা নেটের সাথে লম্বভাবে ঝুলানো থাকবে যা প্রয়োজনে সরানো যায়। ফাইবার গ্লাস বা অনুরূপ কোনো বস্তু দিয়ে তৈরি ২টি অ্যান্টেনা পাশের সাদা ফিতার উপরে লম্বভাবে দুই দিকে বেঁধে দিতে হবে।
বল
বল গোলাকার ও নরম চামড়া দিয়ে তৈরি হবে। ভিতরে নরম ব্লাডার থাকবে। বলের পরিধি ৬৭ সে:মি: হবে।
ভলিবল খেলতে প্রয়োজনীয় খেলোয়াড় সংখ্যা ও সরঞ্জাম
প্রতি দল ১২ জন খেলোয়াড় নিয়ে গঠিত হবে। খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে একজন ক্যাপটেন নিয়োজিত থাকবে। তার বুকের বাম পার্শ্বে একটি প্রতীক চিহ্ন বা ফিতা লাগাতে হবে।
খেলোয়াড়দের সাজ-সরঞ্জাম জার্সি, শর্টস এবং হিল ছাড়া হালকা নমনীয় জুতা হচ্ছে খেলার পোশাক। সকল খেলোয়াড়ের একই রঙের পোশাক থাকবে। জার্সির সামনে ও পিছনে জার্সি থেকে ভিন্ন রঙের একই নম্বর হবে।
ভলিবল খেলোয়াড়দের অবস্থানের নিয়ম
কোর্টে ৬ জন খেলোয়াড় অবস্থান নেবে। ৩ জন থাকবে অ্যাটাক এরিয়ায়, অপর ৩ জন পিছনের কোর্টে। খেলা শুরুর আগে খেলোয়াড়দের অবস্থান ও রোটেশন সম্পর্কে আম্পায়ারকে তথ্য দিতে হবে যাতে এই রোটেশন গেম বা সেট সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত বজায় থাকে। তবে প্রতি সেট শুরুর আগে রোটেশন অর্ডার পরিবর্তন করা যায়।
আরো পড়ুন: ফুটবল খেলার নিয়ম, ইতিহাস, বিশ্বকাপ ও রেকর্ড বিষয়ক যাবতীয় তথ্য
ভলিবল খেলার নিয়মকানুন
খেলার প্রস্তুতি ও টস: কোর্টে খেলোয়াড় প্রবেশের পূর্বে রেফারি দুই অধিনায়কের উপস্থিতিতে টস করবেন এবং টসে জয়ী অধিনায়ক সার্ভিস বা কোর্ট পছন্দ করবে। এরপর খেলোয়াড়েরা ৩ মিনিট ওয়ার্ম আপ অনুশীলন করতে পারবে। বদলি খেলোয়াড় ও কোচ রেফারির বিপরীতে নির্দিষ্ট জায়গায় বসবে।
রোটেশন: ৬ জন খেলোয়াড় ঘড়ির কাঁটা যেভাবে ঘোরে সেভাবে রোটেশন করবে। বিপক্ষ দলের সার্ভিস নষ্ট হওয়ার পর যখন অপর দল সার্ভিস করবে তখন এই রোটেশন সম্পন্ন করতে হবে। রোটেশনে ভুল হলে রেফারি প্রয়োজনীয় শাস্তির বিধান করবেন।
টাইম আউট: বল যখন খেলার বাইরে যায় অর্থাৎ ডেড হয় তখন কোচ বা ক্যাপটেনের অনুরোধে রেফারি টাইম আউট দিতে পারেন। প্রতিটি খেলায় একটি দল সর্বাধিক দু’টি টাইম আউট এবং ৬ জন খেলোয়াড় পরিবর্তনের জন্য সাময়িক বিরতি নিতে পারে। টাইম আউটের সময় খেলোয়াড়েরা পার্শ্ব রেখার কাছাকাছি আসতে পারবে কিন্তু কোর্টের বাইরে যেতে পারবে না।
খেলোয়াড় বদল: ৬ জন খেলোয়াড় কোর্টে খেলবে এবং অতিরিক্ত ৬ জন খেলোয়াড় কোচসহ নির্দিষ্ট জায়গায় বসবে। এই অতিরিক্ত খেলোয়াড় কোচ কিংবা ক্যাপটেনের অনুরোধে কোর্টের খেলোয়াড়দের সাথে বদল করা যাবে।
খেলা পরিচালনা: একজন রেফারি, একজন আম্পায়ার, একজন স্কোরার ও দু’জন লাইন জাজ দ্বারা খেলা পরিচালনা করা হয়। কোর্টে খেলা শুরুর সময় থেকে সমাপ্তি পর্যন্ত রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। রেফারি নেটের যে কোনো এক প্রান্তে উঁচু জায়গায় অবস্থান করবেন যাতে নেটের কমপক্ষে ৫০ সেন্টিমিটার উপর থেকে কোর্টের সব জায়গায় খেলা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
কোর্ট বদল: যদি চূড়ান্ত সেট না হয় তাহলে প্রতি সেট শেষ হওয়ার পর উভয় দল কোর্ট বদল করবে। চূড়ান্ত সেটে কোনো দল ৮ পয়েন্ট অর্জন করলে উভয় দল রেফারির সংকেত পেয়ে কোর্ট বদল করবে।
খেলার ফলাফল: যে দল সার্ভিস করবে সেই দল যদি বলটির র্যালির সমাপ্তিতে জিততে পারে তবে একটি পয়েন্ট সংগৃহীত হবে। আর যদি ঐ র্যালিতে হেরে যায় তবে বিপক্ষ দল সার্ভিস ও পয়েন্ট পাবে। যে দল প্রথম ২৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করবে সে দল ঐ সেটে জয়ী হবে।
তবে ঐ দলকে বিপক্ষ দল থেকে কমপক্ষে ২ পয়েন্ট বেশি থাকতে হবে। যদি উভয় দলের পয়েন্ট সমান হয় তাহলে এই ২ পয়েন্টের ব্যবধান না হওয়া পর্যন্ত খেলা চলতে থাকবে। ৫ সেটের প্রতিযোগিতায় যে দল ৩ সেটে জয়ী হবে সে দল প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করবে। চূড়ান্ত সেট ১৫ পয়েন্টে সম্পন্ন হয়।
সার্ভিস: পিছনের কোর্টের রোটেশন অনুযায়ী সর্বডানের খেলোয়াড় সার্ভিস করবে। সার্ভিস এরিয়ার মধ্যে দাঁড়িয়ে বল হাত থেকে শূন্যে ছেড়ে দিয়ে আঘাত করে বিপক্ষ কোর্টে প্রেরণ করতে হবে। তবে রেফারি সার্ভিসের জন্য সংকেত দেওয়ার পরই কেবলমাত্র সার্ভিস করা যাবে।
সার্ভিসের বল নেটের নিচ দিয়ে গেলে, নেট স্পর্শ করলে, নেটের অ্যান্টেনা ছুঁয়ে গেলে কিংবা বিপক্ষ কোর্টের বাইরে পড়লে সার্ভিসে ত্রুটি হবে এবং বিপক্ষ দল সার্ভিস করবে।
বল খেলা: সার্ভিসের বা তার পরের কোনো বল কোর্টে আনার পর সে দল সর্বাধিক ৩ বার বলটি খেলতে পারবে এবং ৩ বার স্পর্শ করার পর বলটি বিপক্ষ কোর্টে প্রেরণ করতে হবে। বল অন্য সময় শরীরে স্পর্শ করলে একবার খেলা হয়েছে বলে ধরা হবে। খেলার সময় বল চেপে ধরে মারা, জোর করে বল উপরে তোলা, ঠেলে দেওয়া বা হাত দিয়ে টেনে আনাকে হোল্ডিং বলে ধরা হবে।
ব্লক: বিপক্ষের ম্যাশ করা বা চাপ মারার বল কোর্টের সামনের সারির এক বা একাধিক খেলোয়াড় প্রতিহত করার জন্য লাফিয়ে উঠে হাত দিয়ে ব্লক করতে পারে। ব্লকের পর বল যে কোর্টে যাবে সে পক্ষ ৩ বার বলটি খেলতে পারবে। পিছনের সারির খেলোয়াড় ব্লকে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
নেটের বল: কেবলমাত্র সার্ভিস বা ছাড়া অন্য সময় কা নেটে লাগতে পারে। নেটে লাগা বল ৩ বার খেলা যাবে। তবে সজোরে নেটে লেগে বল কোনো খেলোয়াড়ের শরীর স্পর্শ করলে একবার খেলা হয়েছে বলে ধরা হয়।
বিপক্ষ কোর্ট থেকে বল নেটের উপর নিজ কোর্টে না আসা পর্যন্ত নেটের উপর যে বল থাকে তা খেলা যাবে না। তবে স্পর্শ করার বা চাপ মারার পর গতির কারণে হাত নেটের উপর দিয়ে বিপক্ষ কোর্টে যেতে পারে। পিছনের সারির খেলোয়াড় নেটে গিয়ে চাপ মারতে পারবে না।
সেন্টার লাইন পার হওয়া: খেলা চলাকালে কোনো খেলোয়াড়ের শরীরের কোনো অংশ বা পা সেন্টার লাইন পার হয়ে বিপক্ষ কোর্টে স্পর্শ করতে পারবে না বা কাউকে বাধার সৃষ্টি করতে পারবে না।
আরো পড়ুন: দাবা খেলার নিয়ম, ইতিহাস, কলাকৌশল ও ভালো খেলতে করণীয়
ভলিবল খেলার কলাকৌশল
ভালো করে ভলিবল খেলতে হলে বেশকিছু কলাকৌশল অবলম্বন করতে হয়৷ কৌশল ছাড়া শুধুমাত্র গায়ের জোরে ভলিবলে ভালো খেলা যায় না।
নিচে ভলিবল খেলার কিছু কৌশল আলোচনা করা হলো–
সার্ভিস
এক হাতে বল শূন্যে তুলে অপর হাত খোলা বা মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় জোরে আঘাত করে বিপক্ষের কোর্টে প্রেরণ করাকে সার্ভিস বলে। যদি সার্ভিস করা বল নেট বা অ্যান্টেনা স্পর্শ না করে, নেটের নিচ দিয়ে না যায় কিংবা বিপক্ষ কোর্টের বাইরে না পড়ে তাহলে সার্ভিস সঠিক বলে গণ্য হবে। সার্ভিস সাধারণত দুই প্রকার- ১. আন্ডার হ্যান্ড সার্ভিস, ২. টেনিস সার্ভিস।
আভার হ্যান্ড সার্ভিস
বিপক্ষ কোর্টের দিকে মুখ করে সার্ভিস এরিয়াতে এক পা সামনে ও আরেক পা পিছনে রেখে দাঁড়াতে হবে। দুই পায়ের মাঝে কিছুটা ফাঁক থাকবে। দুই হাঁটু সামান্য ভেঙ্গে পিছনের পায়ে দেহের ওজন রেখে দাঁড়াতে হবে। বাম হাতের ভালুতে বল রেখে ডান হাতকে সোজা পিছনের দিকে নিতে হবে।
বাম হাতের বল শূন্যে তোলার পর ডান হাত পিছন দিক থেকে সামনে এনে সজোরে বলে আঘাত করতে হবে। বিপক্ষ কোর্টের দিকে মুখ না করে কোর্টের পার্শ্ব রেখার দিকে মুখ করে হাতের এক পাশ দিয়ে আঘাত করেও সার্ভিস করা যেতে পারে।
টেনিস সার্ভিস
সার্ভিস এরিয়ায় পা দুটোকে আড়াআড়ি করে দু পায়ের উপর শরীরের ওজন রেখে দাঁড়াতে হবে। ডান হাতে সার্ভিস করা হলে বাম পা’কে সামনে নিতে হবে।
হাঁটু দুটি সামান্য ভেঙ্গে বাম হাতের তালুতে রাখা বল মাথার উপর প্রায় ১ মিটার উঁচুতে ছুড়ে দিতে হবে এবং কাটি নিচে নামার সাথে সাথে ডান হাত পিছন দিক থেকে কাঁধের উপরে এনে সজোরে আঘাত করতে হবে। সার্ভিসের পর পরই ভারসাম্য রক্ষার জন্য শরীরের ওজন পিছনের পা থেকে সামনের পায়ে নিয়ে আসতে হবে।
রোটেশনে দাঁড়ানো
৬ জন খেলোয়াড়ের ক্রমিক নম্বর যদি ১ থেকে ৬ নম্বর হয় তাহলে সামনের কোর্টে ৩ জন এবং পিছনের কোর্টে ৩ জন দাঁড়াবে। সামনের কোর্টের ৩ জনের অবস্থান হবে- ডান দিকের ২ নম্বর, মধ্যখানে ৩ নম্বর এবং বাম দিকে ৪ নম্বর এবং পিছনের কোর্টে ৫ নম্বর সর্ব বামে, মধ্যখানে ৬ নম্বর এবং সর্ব ডানে ১ নম্বর খেলোয়াড় দাঁড়াবে।
বিপক্ষ দলে সার্ভিস হারালে এই দল সার্ভিস করবে। তখন রোটেশন করতে হবে নিয়মানুযায়ী ১ নম্বর খেলোয়াড় পিছনের কোর্টের ৬ নম্বর খেলোয়াড়ের জায়গায় গিয়ে সার্ভিস করবে। এভাবে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের অবস্থান পরিবর্তিত হবে। রোটশন হবে ঘড়ির কাঁটার দিকে অনুযায়ী, সাজানো হবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিক অনুযায়ী।
পাসিং
বল পাসকে সাধারণত দু’ভাগে ভাগ করা যায়- (১) ওভার হেড পাস ও (২) আন্ডার হ্যান্ড পাস।
সেট-আপ (Set-Up)
কোর্টের সম্মুখ সারির কোনো খেলোয়াড় আন্ডার হ্যান্ড পাস বা ডিগিং থেকে প্রাপ্ত বা দুই হাতের প্রসারিত তালু ও আঙ্গুল সহযোগে নেটের কাছাকাছি উপরে উঠিয়ে দেবে এবং ম্যাশকারী দৌড়ে এসে অথবা স্বীয় জায়গায় লাফ দিয়ে উঁচুতে উঠে বা ম্যাশ করবে। সেট-আপ যত সুন্দর হবে ম্যাশও তত নিখুঁত হবে।
আরো পড়ুন: লাইভ খেলা দেখার সফটওয়্যার ও লিংক
ম্যাশিং (Smashing)
স্ম্যাশিং-এর বলটিকে অবশ্যই নেটের উপরে থাকতে হবে। বলকে যেখানে স্যাশ করতে হবে সেখান থেকে ৩-৪ পা পিছনে খেলোয়াড়দের অবস্থান থাকবে। সেখান থেকে দৌড়ে এসে লাফিয়ে উঠে শরীরকে বলের পিছনে নিয়ে আসতে হবে। এজন্য দু’হাঁটু ভাঁজ করে লাফ দিতে হবে যাতে উঁচুতে উঠা যায়।
যে হাতে ম্যাশ করতে হবে সেটা পিছন দিক থেকে ঘুরিয়ে বলের উপর নিতে হবে। শ্যাশ করার পর শরীর সোজা নিচে নেমে আসবে। অনেক সময় বিপক্ষ দলকে ভুল বুঝানোর জন্য বা ম্যাশ না করে হাতের সাহায্যে বিভিন্ন দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।
ব্লকিং(Blocking)
বিপক্ষ দলের ম্যাশকে প্রতিরক্ষা করার জন্য কোর্টের সামনের সারির এক বা একাধিক খেলোয়াড় পরস্পরের হাত পাশাপাশি রেখে লাফিয়ে উঠে ম্যাশ প্রতিরোধ করতে পারে। ব্লক দেওয়ার সময়ে জোড়া পায়ে উপরে লাফিয়ে উঠতে হবে। তবে লক্ষ রাখতে হবে যেন ব্লকিং করার সময়ে হাত নেট স্পর্শ না করে।
সাধারণত উপর্যুক্ত নিয়মগুলো ভালো করে অনুসরণ করলেই ভালো করে ভলিবল খেলা সম্ভব।
অলিম্পিকে ভলিবল যাত্রা কবে থেকে এবং কীভাবে শুরু হয়?
ভলিবল খেলার বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে ১৯৫৭ সালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ইনডোর ভলিবল কে অলিম্পিকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৬৪ সালের টোকিও অলিম্পিকে ভলিবল খেলা আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয়।
ব্রাজিল, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ইতালি ভলিবল অলিম্পিকে সবচেয়ে বেশি পদক জিতেছে। তারা প্রত্যেকেই ৬ টি করে পদক জিতে নিয়েছে। প্রতিটি দেশ তিনটি করে সোনা এবং তিনটি করে সিলভার পদক পেয়েছে। অন্যদিকে অলিম্পিকে মেয়েদের ভলিবল দলে ছয়টি দেশ পদক জিতেছে।
এদের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ইতালি শীর্ষে রয়েছে। দুটি দেশই চারটি করে সোনা এবং দুইটি করে সিলভার পদক পেয়েছে। ১৯৬৪ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে জাপান এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন স্বর্ণপদকের জন্য চারটি ম্যাচ খেলেছে।
জাপান তাদের প্রথম সোনাটা জিতে নেয় তাতে নিজেদের দেশের মাটিতে। জাপান প্রথম সোনা জিতে ১৯৬৪ সালে। এরপর ১৯৬৮ সালে এবং কোন ১৯৭২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন পরপর দুইবার সোনা জিতে। ১৯৭৬ সালে জাপান আবারও স্বর্ণপদক জিতে।
১৯৮০ সালের মস্কো এবং ১৯৮৮ সালে সিওল অলিম্পিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন আবারও স্বর্ণপদক জয়লাভ করে। চীন সর্বপ্রথম স্বর্ণপদক জিতে ১৯৮৪ সালে লস এঞ্জেলস অলিম্পিকে এবং দ্বিতীয় স্বর্ণ জয় লাভ করে ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিকে।
কিউবা বার্সেলোনা ১৯৯২, আটলান্টা ১৯৯৬ এবং সিডনি ২০০০ অলিম্পিক-এ টানা তিনটি স্বর্ণ জিতেছিল। ব্রাজিলের মহিলা ভলিবল দলটি বেইজিং ২০০৮ এবং লন্ডন ২০১২ সালে পরপর দুইবার স্বর্ণপদক জয় লাভ করে। পরপর স্বর্ণজয়ের এটি ছিল তৃতীয়তম ঘটনা।
যুক্তরাষ্ট্র নারী ভলিবল দল ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিকে ব্রাজিলকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জিতে নেয়। আর ১৯৬৪ সালের অলিম্পিকে ভলিবল দলের মাত্র ছয়টি দল খেলেছিল এবং সেটা ওর ১৯৮৮ সালে দ্বিগুণ হয়ে যায়। বর্তমানে ১২ টি দলই ভলিবল অলিম্পিক খেলছে।
আরো পড়ুন: ব্যাডমিন্টন খেলার নিয়ম, কলাকৌশল ও ইতিহাস বিষয়ক যাবতীয় তথ্য
বাংলাদেশে ভলিবল খেলা কবে আসে?
বাংলাদেশে ভলিবল খেলার প্রচলন ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছে তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পাকিস্তানের সূচনালগ্ন থেকেই এদেশের বহু জায়গায় ভলিবল খেলা হতো বলে জানা যায়। ১৯৬৭ সাল থেকে সরকারিভাবে ভলিবল খেলার আয়োজন শুরু হয় এবং ঐ বছর পূর্ব পাকিস্তানের ৪টি বিভাগে বিভাগীয় পর্যায়ে ভলিবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে আর কোন খেলা হয় নি।
১৯৭৩ সালে সরকারি উদ্যোগে জাতীয় ভলিবল ফেডারেশন গঠন করা হয়। ফেডারেশনের উদ্যোগে ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ২৩টি জাতীয় ভলিবল প্রতিযোগিতা (পুরুষ) অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৯ সাল থেকে ১৫টি জাতীয় মহিলা ভলিবল প্রতিযোগিতা হয়।
১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ১৩টি জাতীয় যুব ভলিবল প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। অনেক বিদেশি টিম বাংলাদেশ সফর করে। আর বাংলাদেশ টিমও বিদেশের বেশকিছু প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ১৯৭৮ সালে অষ্টম এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ১৫টি দেশের মধ্যে ১১তম হয়।
১৯৮৪ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে এবং ১৯৮৬ সালের থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ইয়ূথ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে। ১৯৮৯ সালের সিউল, ১৯৯৩ সালের কোরাট (থাইল্যান্ড) এবং ১৯৮০ সালের তুরস্ক এশিয়ান ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দল অংশগ্রহণ করে।
১৯৮৬ সালের ভারতের হায়দারাবাদ এবং মিয়ানমারের ইয়াংগুনে ইন্টারন্যাশনাল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ দল কলকাতা (১৯৮৭), ইসলামাবাদ (১৯৮৯), কলম্বো (১৯৯১), ঢাকা (১৯৯৩), চেন্নাই (১৯৯৫), কাঠমুন্ডু (১৯৯৯), ইসলামাবাদ (২০০৪) এবং কলম্বো (২০০৬) সাউথ এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করে।
১৯৯৯ সালে নেপালের কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত ৮ম সাফ গেমসে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। এছাড়া ২০০৭ সালের কলকাতা ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমস-এ বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে।
বাংলাদেশে একমাত্র বিকেএসপিতেই ভলিবল খেলার সুযোগ রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখানেই ভলিবল খেলা শেখা যায়। ২০১২ সালে ১২ জন প্রশিক্ষণার্থী নিয়ে বিকেএসপিতে ভলিবল ক্রীড়া বিভাগ যাত্রা শুরু করে।
এই পর্যন্ত এই ক্রীড়া বিভাগ থেকে ০৭ জন প্রশিক্ষণার্থী জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছে।
স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্লাব, সংস্থা ও সার্ভিসেস ভলিবল খেলে থাকে। এগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ রাইফেলস, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, অডিট ক্রীড়া সংসদ, আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আনসার ও ভিডিপি প্রভৃতি।
বিচ ভলিবল
বিচ ভলিবল ইনডোর ভলিবলের মতই একটি দলগত খেলা যা দুই বা ততোধিক খেলোয়াড়ের দুটি দল একটি নেট দ্বারা বিভক্ত বালির কোর্টে খেলে। ইনডোর ভলিবলের মতই, খেলার উদ্দেশ্য হল বলটিকে জালের উপর দিয়ে পাঠানো এবং কোর্টের প্রতিপক্ষের পাশে গ্রাউন্ড করা।
১৯২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বিনোদনের উদ্দেশ্যে বীচ ভলিবল খেলা শুরু হয়। বর্তমানে এটি অলিম্পিকেও খেলা হয়ে থাকে। তবে সাধারন বা ইনডোর ভলিবল খেলার সাথে এর নিয়ম-কাননে বেশ কিছু পার্থক্য দেখা যায়।
বিশ্ব সেরা দশ ভলিবল খেলোয়াড়
ভলিবলের নানা দিক তো জানলাম। এবার কি জানতে ইচ্ছে করে না ভলিবলে সেরা খেলোয়াড় কে। ক্রিকেট ফুটবলের মতো ভলিবল বিশ্বসেরা খেলোয়াড় রয়েছে।
১. কার্চ কিরালি: তিনটি অলিম্পিক স্বর্ণপদক, ১৪৮টি বিচ ভলিবল খেতাব এবং ৩ মিলিয়নের বেশি পুরষ্কার উপার্জনের একটি দারুণ রেকর্ড সহ, কার্চ কিরালি বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড়। কিরালি একমাত্র ভলিবল খেলোয়াড় যিনি একজন ক্রীড়াবিদ এবং কোচ হিসেবে প্রতিটি স্তরে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে পরিসংখ্যান হিসাবে, কিরালি সর্বকালের সবচেয়ে পুরস্কৃত ভলিবল খেলোয়াড়।
২. কেরি ওয়ালশ জেনিংস: কেরি ওয়ালশ জেনিংস সফল হওয়ার জন্য এবং ড্রাইভের জন্য ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ভলিবল খেলোয়াড়। তার বর্ণাঢ্য খেলোয়াড় জীবনে জুড়ে তিনবারের অলিম্পিক স্বর্ণপদক বিজয়ী এবং একবারের ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ী হয়েছেন। কেরি ওয়ালশ জেনিংসকে সর্বকালের সবচেয়ে সজ্জিত বিচ ভলিবল খেলোয়াড় বলা হয়। যার ১৩৩ টি জয় এবং ২.৬ মিলিয়নেরও বেশি পুরস্কার জয়ের অর্থ আছে।
৩. মিস্টি মে-ট্রেনার: অলিম্পিকে আধিপত্য বিস্তার করার পর, মিস্টি মে-ট্রেনার এবং কেরি ওয়ালশ জেনিংস সর্বকালের সবচেয়ে প্রতিভাধর বিচ ভলিবল দল হিসেবে তাদের মর্যাদা মজবুত করেছেন। মে-ট্রেনার তার কর্মজীবনে অনেক একক সাফল্যও অর্জন করেছেন: যার মধ্যে ১১২ টি ম্যাচ এবং ১৯ টি টুর্নামেন্ট জয় রয়েছে। এছাড়াও তিনি ২.১ মিলিয়নেরও বেশি অর্থ জিতেছেন।
৪. রেগলা টরেস: কিউবান বংশোদ্ভূত রেগলা টরেসও সেরাদের তালিকা তার স্থান অধিকার করেছেন। তার ক্যারিয়ার জুড়ে তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ৩ টি অলিম্পিক স্বর্ণপদক, দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং তিনটি ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল ডি ভলিবল বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছেন৷ তার ২৬ বছর বয়সে, YIVB তাকে এই বিংশ শতাব্দীর সেরা মহিলা খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করেছে৷
৫. গিবা: গিবা বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত প্রাক্তন পেশাদার ভলিবল খেলোয়াড়। ভলিবল খেলার আকাঙ্ক্ষা এবং ড্রাইভের জন্য এই ব্রাজিলিয়ান অ্যাথলেটের ক্যারিয়ারের অনেক অসাধারণ হাইলাইট হয়েছিল। সে ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিক গেমসে স্বর্ণপদক এবং ২০০৮ এবং ২০১২ অলিম্পিক গেমসে রৌপ্য পদক জয়লাভ করে৷
৬. লরেঞ্জো বার্নার্ডি: লরেঞ্জো বার্নার্ডি ভলিবল খেলার জন্য সর্বকালের সেরা ভলিবল খেলোয়াড়দের একজন। তিনি ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে ৫ টি বিশ্ব লীগ শিরোপা, ১৯৯০ এবং ১৯৯৪ সালে দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং নয়টি ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করেন। কিরালির পাশাপাশি, বার্নার্ডি বিংশ শতাব্দীর সেরা পুরুষ খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।
৭. ল্যাং পিং: তিনি ১৯৮৪ সালের অলিম্পিক গেমসে চীনা মহিলা দলকে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন এবং চীনের সাথে একটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং দুটি বিশ্বকাপ সোনা জিতেছিলেন। ল্যাং পিং একজন প্রশিক্ষক হিসেবেও সাফল্য পেয়েছেন, যার ফলে চীনকে ১৯৯৬ সালে রৌপ্য পদক এবং ২০১৬ সালের অলিম্পিক গেমসে স্বর্ণপদক জেতে।
৮. হুগো কন্টে: হুগো কন্টে তার দুই দশকের কর্মজীবনে সারা বিশ্বের ভলিবল কোর্টে আর্জেন্টিনার জন্য গর্বের প্রতীক ছিলেন। তিনি ১৯৮৮ সালে অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক, ১৯৮২ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ব্রোঞ্জ পদক এবং এমনকি একটি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপাও জিতে নেন।
৯. রেনান ডাল জট্টো: রেনান ডাল জোট্টো ব্রাজিল থেকে বেরিয়ে আসা সেরা ইনডোর ভলিবল খেলোয়াড়দের একজন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের রৌপ্য পদক, একটি প্যান আমেরিকান গেমস স্বর্ণপদক, এবং একটি অলিম্পিক রৌপ্য পদক জয়সহ তিনি ভলিবলের সবচেয়ে সম্মানিত নামগুলির মধ্যে একটি রয়ে গেছেন।
১০. শিনিজিন স্মিথ: শিনজিন স্মিথের ক্যারিয়ারে অবিশ্বাস্য ১৩৯ টি জয়, ৪১৬ টি ক্যারিয়ার টুর্নামেন্ট এবং ১.৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি উপার্জনের আছে।
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে শুধু ভলিবল খেলার নিয়মকানুনই নয় সেই সাথে ভলিবলের ইতিহাস, যাত্রা, অলিম্পিকে ভলিবল এবং ভলিবল খেলার বেশকিছু বিখ্যাত খেলোয়াড় সম্পর্কেও জেনেছেন। অনান্য খেলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
আর্টিকেলটি লিখেছেন: রাকিব খান
সূচীপত্র