প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আলোচনায় আপনাকে স্বাগতম। আমাদের সকলের জন্য উপসর্গ কাকে বলে এ বিষয়টি জানা আবশ্যক। আপনি যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে খুব সহজেই আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন। আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরেছি। আশা করছি এটি আপনাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে। তাই অবশ্যই আর্টিকেল (উপসর্গ কাকে বলে) টি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
উপসর্গ
উপসর্গ হলো একটি প্রয়োজনীয় বাংলা ভাষার অংশ যা পুরো শব্দের প্রথমে যুক্ত হয় এবং সেটির মাধ্যমে শব্দের অর্থ পরিবর্তন হয়। উপসর্গ শব্দগুলি ব্যবহার করে নতুন শব্দ তৈরি করা হয়, যেমন অ-চেতন, বি-বহুল, উপ-কমলা ইত্যাদি।
উপসর্গ কাকে বলে? উত্তর: যে সকল অব্যয়সূচক শব্দাংশ শব্দ বা ধাতুর পূর্বে বসে, শব্দ বা ধাতুটির অর্থের পরিবর্তন ঘটায় বা বিভিন্ন অর্থবোধক শব্দ সৃষ্টিতে সাহায্য করে অথচ নিজে কোন অর্থ প্রকাশ করতে পারে না তাকে বলা হয় উপসর্গ ।
উপসর্গের সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা হলো: যেসব বর্ণ বা বর্ণের সমষ্টি ধাতু এবং শব্দের আগে বসে সাধিত শব্দের অর্থের পরিবর্তন, সম্প্রসারণ কিংবা সংকোচন ঘটায়, তাদের বলা হয় উপসর্গ। যেমন: প্র, পরা, পরি, নির ইত্যাদি।
সমাস কাকে বলে ও সমাস কত প্রকার?
উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা
শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হয়: উপসর্গের মাধ্যমে যেহেতু নতুন নতুন শব্দ সৃষ্টি হয়, ফলে ভাষার শব্দসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ভাষার শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হয়।
ব্যঞ্জনা বাড়ে: উপসর্গের ব্যবহারে শব্দের ভাব-ব্যঞ্জনা অনেক গুণ বেড়ে যায়। যেমন: ‘জয়’ বললে শব্দটির যতটা ভাব প্রকাশিত হয়, পক্ষান্তরে ‘বিজয়’ বললে শব্দটির আবেদন অনেকটাই বেড়ে যায়।
প্রকাশক্ষমতা বাড়ে: উপসর্গের ব্যবহারে ভাষার প্রকাশ ক্ষমতা বেড়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্ভবত এ কারণেই উপসর্গের তুলনা করেছেন মাছের পাখনার সঙ্গে। কারণ, পাখনার সাহায্যে মাছ যেমন ডান-বাঁয়ে বা সামনে-পেছনে চলার জন্য বিশেষ গতি লাভ করে, ঠিক তেমনি উপসর্গের মাধ্যমে শব্দ তার ব্যবহারিক ক্ষেত্রের বিস্তৃতি ঘটিয়ে থাকে।
অর্থের সম্প্রসারণ ঘটে: নির্দিষ্ট কোনো শব্দের আগে উপসর্গ যোগ করলে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট শব্দটির অর্থের সম্প্রসারণ ঘটে। ফলে শব্দটির প্রচলিত অর্থের আবেদনে যোগ হয় ভিন্ন মাত্রা। যেমন: ‘তাপ’ থেকে হয় ‘প্রতাপ’ কিংবা পরিতাপ ইত্যাদি।
পরিভাষা সৃষ্টিতে: অনেক সময় উপসর্গের মাধ্যমে পরিভাষা ও প্রণয়ন করা হয়। যেমন: Conductor–পরিবাহী, Requisition–অধিগ্রহণ ইত্যাদি উপসর্গের উপযুক্ত গুণাবলি বিবেচনা করে অনেক বৈয়াকরণিক মনে করেন, ‘উপসর্গ কেবল প্রয়োজনীয় নয়, ভাষার পক্ষে পরিহার্য।’
পরিশেষে আশা করা যায় যে উপসর্গ কাকে বলে বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝতে পারছেন। এছাড়া বুঝতে সমস্যা হলে নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কমেন্ট করে সমস্যাটি জানানোর অনুরোধ রইলো। আর যদি এটি ভালো ভাবে বুঝে থাকেন তা হলেও মন্তব্য করতে পারেন।