আজ আমাদের আলোচনার বিষয় হল অব্যয় পদ কাকে বলে? অব্যয় পদ কত প্রকার? অব্যয় পদ চেনার উপায় । niyoti.com ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন প্রশ্নের উক্তর খুঁজে পাবেন, যা জেনে অনেক উপকৃত হতে পারেন। আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরেছি। আশা করছি এটি আপনাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে।
অব্যয় পদ
ইংরেজিতে অব্যয় পদ কে ‘Adverb’ বলা হয়। বাংলা ভাষায় উদাহরণ হিসাবে ‘খুব’, ‘সর্বদা’, ‘আগে’, ‘পরে’, ‘কিভাবে’ ইত্যাদি পদ অব্যয় পদের উদাহরণ। এগুলো কোনো নাম, ক্রিয়া, বিশেষণ বা সর্বনামের মতো না যে কোনো পদার্থ বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়।
অব্যয় পদ কাকে বলে? উত্তর: যে সকল শব্দ বাক্যে ব্যবহৃত না হলেও লিঙ্গ, বচন বিভক্তিভেদে রূপান্তরিত হয় না, অর্থাৎ যাদের মূলরূপের পরিবর্তন হয় না, তাদের বলা হয় অব্যয় পদ। যেমন- ও, বরং, হ্যাঁ, না, তবে, নতুবা, তথাপি, আর, নচেৎ ইত্যাদি।
অব্যয় পদের সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা হলো: যে পদের দ্বারা কোন অবস্থাতেই কোনরকম পরিবর্তন হয় না তাদেরকে বলে অব্যয় পদ।
অব্যয় পদ এর উদাহরণ
বাংলা অব্যয় শব্দ – আর, আবার, ও, হ্যাঁ, না ইত্যাদি। তৎসম অব্যয় শব্দ – এবং, সুতরাং, যদি, যথা, সদা, সহসা, হঠাৎ, অর্থাৎ, দৈবাৎ, বরং, পুনশ্চ, আপাতত, বস্তুত ইত্যাদি। বিদেশি অব্যয় শব্দ – আলবাত, বহুত, খুব, শাবাশ, খাসা, মাইরি, মারহাবা ইত্যাদি।
নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:
- খুব: সে খুব ভালো পড়ছে।
- সর্বদা: সর্বদা সত্য বলতে হয়।
- আগে: তিনি আগে ঢাকায় ছিলেন।
- পরে: তিনি পরে কথা বলবে।
- কিভাবে: আপনি কিভাবে আছেন?
- না: আমি তা করতে চাই না।
- খুব সময় নেই: আমাদের খুব সময় নেই।
- কিন্তু: তিনি অতিরিক্ত কাজ করে, কিন্তু সে সেইটা সম্পন্ন করে না।
- পুনঃ: তিনি পুনঃ কল করবেন।
- এখন: এখন কি করছ?
- হালাকি: তার চিত্ত হালাকি হয়ে গেছে।
- পূর্বে: পূর্বে আমরা সেখানে ছিলাম।
- অনেক: সে অনেক কিছু জানে।
- আর: তিনি আর কোনো কাজ করতে চাই না।
- সেখানে: আমরা সেখানে বসে আছি।
- পার্শ্ববর্তী: তার পার্শ্ববর্তী বাড়ি খুব সুন্দর।
- প্রায়: সে প্রায় পাঁচশত টাকা টাকার পার।
পরিশেষে আশা করা যায় যে অব্যয় পদ কাকে বলে? বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝতে পারছেন। এছাড়া বুঝতে সমস্যা হলে নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কমেন্ট করে সমস্যাটি জানানোর অনুরোধ রইলো। আর যদি এটি ভালো ভাবে বুঝে থাকেন তা হলেও মন্তব্য করতে পারেন।
পদ কাকে বলে? পদ কয় প্রকার? পদ সম্পর্কে বিস্তারিত
অব্যয় পদের প্রকার
বাংলা ভাষায় অব্যয় পদের প্রকার নিম্নরূপঃ
- ১।সংযোজক অব্যয়- ও, এবং, নতুবা ইত্যাদি।
- ২।বিযোজক – অথবা, বা, কিংবা ইত্যাদি।
- ৩।সঙ্কোচক – কিন্তু, তথাপি, এবং ইত্যাদি।
- ৪।বিস্ময়সূচক – বাঃ, সাবাশ, মরি ইত্যাদি।
- ৫।সম্বোধনসূচক – ওগো, ওহে, রে ইত্যাদি।
- ৬।প্রশ্নসূচক – কেমন, কোথায়, কি, ইত্যাদি।
- ৭।অনুকার – ছল্ ছল্, কল্ কল্, ঝম্ ঝম্ ইত্যাদি।
- ৮।নিত্য সম্বন্ধীয় – বটে-কিন্তু, যদিও-তথাপি, বরং-তবু ইত্যাদি।
পরিশেষে আশা করা যায় যে অব্যয় পদ কত প্রকার? বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝতে পারছেন। এছাড়া বুঝতে সমস্যা হলে নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কমেন্ট করে সমস্যাটি জানানোর অনুরোধ রইলো। আর যদি এটি ভালো ভাবে বুঝে থাকেন তা হলেও মন্তব্য করতে পারেন।
অব্যয় পদ চেনার উপায়
অব্যয় পদ চেনার জন্য কিছু উপায় আছে, সেগুলো হলঃ
১. অব্যয়পদ হলে এটি কোন বিন্দুতে স্থানান্তর করা যায় না। যেমনঃ সে খুব ভাল করেছে।
২: সংযোগ, বিয়োগ, বিকল্প, তুলনা, আবেগ, মনোভাব, পদে পদে ও বাক্যে বাক্যে সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি কাজ করলে সেটি অব্যয়পদ হবে।
৩: সমস্ত উপসর্গ ও অনুসর্গ অব্যয় পদের অন্তর্ভুক্ত।
৪: কিছু কিছু অব্যয় পদে বিভক্তি যুক্ত থাকতে দেখা যায় কিন্তু অব্যয় পদের বিভক্তি ইচ্ছে মতো বদলানো যায় না। হয় শূন্য বিভক্তি থাকে নতুবা একটি নির্দিষ্ট বিভক্তিই থাকে।
৫. একটি প্রবাদ বা বাক্য যদি অব্যয় পদ ছাড়া সম্পূর্ণ থাকে তাহলে অব্যয়পদ হতে পারে। যেমনঃ সে অনেক দূর যায়।
৬. এটি বাক্যের অন্য কোন অংশের জন্য কাজ করতে পারে। যেমনঃ সে সুন্দরভাবে গান গায়। (সুন্দরভাবে এখানে ক্রিয়াবিশেষণ হিসেবে কাজ করছে)
৭. যদি কোন শব্দ কোন বাক্যে ব্যবহৃত হয় এবং তার আগে কোন শব্দের মান পরিবর্তন না হয়, তাহলে সেটি অব্যয়পদ হতে পারে। যেমনঃ তার আসল নাম মুহাম্মদ।
বাংলা ভাষায় তিন ধরনের অব্যয় শব্দ আছে-
বাংলা অব্যয় শব্দ : আর, আবার, ও, হাঁ, না
তৎসম অব্যয় শব্দ : যদি, যথা, সদা, সহসা, হঠাৎ, অর্থাৎ, দৈবাৎ, বরং, পুনশ্চ, আপাতত, বস্তুত ইত্যাদি।
বিদেশি অব্যয় শব্দ : আলবত, বহুত, খুব, শাবাশ, খাসা, মাইরি, মারহাবা। (মনে রাখার টেকনিক – মামাকে আশা খুব খাওয়ায়)
সূচীপত্র