মামলা করার নিয়ম, প্রকারভেদ, প্রত্যাহার সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য

মামলা করার নিয়ম ;- আমরা অনেকেই আমাদের অধিকার আদায় বা অন্যকোন কারনে মামলা করতে চাই। সেক্ষেত্রে মামলা করার নিয়মকানুন আমরা অনেকেই জানি না৷ যখন মামলা করতে যাবো তখন দেখা যায় যে, প্রয়োজনীয় কাগজের অভাবে মামলা করতে সময়ক্ষেপণ হয় এবং আমাদের মূল্যবান সময়ের অপচয় ঘটে৷

কিন্তু আগে থেকেই যদি আমরা কিভাবে মামলা করতে হয়, কি কি কাগজপত্র পত্র সেগুলো জেনে রাখি তাহলে আমরা খুব সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে মামলা করতে পারব। আজকে আমরা মামলা করার খুটিনাটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

মামলা বিষয়ক তথ্য সকল তথ্য

মামলা কি?

প্রথমেই আমাদের জানা উচিত মামলা কি। এক কথায় বলতে গেলে কারো নামে থানায় অভিযোগ করাকেই মামলা বলে৷ কারো কোনো কিছু চুরি গেলে বা কোনো গুরুতর অপরাধ ঘটলে থানায় অভিযোগ করে মামলা করতে হয়। যিনি মামলা দায়ের করেন তাকে বলে হয় বাদী।

অপরদিকে যার নামে মামলা হয় তাকে বলা হয় বিবাদী। কোনো অন্যায় ঘটলে যে কেউ বাদী হয়ে মামলা করতে পারে। এছাড়া হত্যার মত গুরুতর অপরাধ ঘটলে কেউ যদি মামলা নাও করে তবে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করতে পারে।

মামলা কেন করা হয়?

থানার সাথে মামলা বিষয়টা সম্পর্কযুক্ত। মামলা করতে হলে থানায় যেতে হয়। তবে থানার কাজ শুধু মামলা নেওয়াই নয়। সাধারনত পুলিশের অবস্থান থাকে থানায়৷ আর পুলিশের প্রধান কাজ হলো জননিরাপত্তা দেওয়া। তবে জিডি, মামলা ইত্যাদি বিষয়েও পুলিশ সহায়তা করে থাকে।

মামলা কেন করা হয়? নানা কারণে অনেক সময়েই আইনের সহায়তা নেয়ার দরকার হয়ে পড়ে। সাধারণ জিডি থেকে শুরু করে মামলা করা, আদালতে আইনের দ্বারস্থ হওয়া লাগে৷ চুরি, হুমকি, মারামারি বা যেকোনো নিরাপত্তাহীনতা দেখলেই যেকোন ব্যক্তি থানায় অভিযোগ বা মামলা করতে পারেন।

নিজে কোন বিপদের সম্মুখীন হলে, বা কোন অপরাধের প্রত্যক্ষদর্শী হলে সরাসরি গিয়ে পুলিশকে জানানো উচিত পরে প্রয়োজন হলে মামলা করা উচিত। আমরা সাধারণত ব্যক্তি বিরোধ, জমিজমা সংক্রান্ত ঝামেলা, অর্থ সংক্রান্ত বিষয় ইত্যাদি নিয়েই মামলা করে থাকি।

আরো পড়ুন: স্ট্যাম্প পেপার লেখার নির্ভুল নিয়ম এবং স্ট্যাম্পের প্রয়োজনীয়তা কী? (A TO Z)

জিডি এবং মামলার মধ্যে পার্থক্য কী?

মামলা এবং জিডিকে একই ভেবে অনেকে ভুল করেন। তবে দুটি বিষয় সম্পূর্ণই আলাদা। জিডি হলো থানায় কোন বিষয় সম্পর্কে অবহিত করে রাখা৷ আর মামলা হলো কোন বিষয়ে আইনি আশ্রয় চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা। সাধারণ ডায়েরি বা জিডি

আইনগতভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রাথমিক এবং সাধারণ একটি বিষয় হচ্ছে জেনারেল ডায়েরি বা জিডি। কোন কিছু হারিয়ে গেলে, আইনগত রেকর্ড সংরক্ষণ বা পুলিশে প্রাথমিক তথ্য জানানোর জন্য করার জন্য সাধারণ ডায়েরি করা হয়। বর্তমানে মোবাইল ফোন হারানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জিডি করা হয়।

কারো ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক কিংবা কোন তথ্য চুরি করা হলেও জিডি করা হয়। অনেক সময় কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ কিংবা মামলা না করে জিডি করা হয়ে থাকে। জিডি সবসময় স্থানীয় থানায়ই করতে হয় কারো বাসা বা অফিস যেখানেই হোক না কেন, যে এলাকায় হারিয়ে গেছে বা ঘটনা যে এলাকায় ঘটেছে, সেখানের থানাতেই জিডি করতে হয়। অন্য কোন থানা জিডি নেয় না।

সাদা কাগজে বরাবর স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাছে সাধারণ ডায়রি প্রসঙ্গে লিখে বিস্তারিত বিবরণ সহ জিডির আবেদন লিখতে হয়। জিডির সময় আবেদনকারীর নাম, ফোন নম্বরসহ বিস্তারিত থাকতে হয়। হারিয়ে যাওয়া জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে যা হারিয়ে গেছে, সেসব জিনিসের বিস্তারিত বিবরণও থাকতে হবে।

জিডি করার সময় এনআইডি, আইডি কার্ড, দলিল ইত্যাদি এবং হারিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা ফটোকপি সংযুক্ত করতে হতে পারে। বর্তমানে অনলাইনে জিডি করার ব্যবস্থা রয়েছে। যাতে করে আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে জিডি করতে পারবেন এবং জিডির সর্বশেষ অবস্থাও জানতে পারবেন।

অপরদিকে মামলা হলো আইনিভাবে বিচারের প্রাথমিক পদক্ষেপ। নানান কারণে একজন ব্যক্তির মামলা দায়েরের প্রয়োজন হতে পারে। মামলা হয় এমন কোনো অপরাধ সংঘটনের পরিপ্রেক্ষিতে যা দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

যেমন- খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, অপহরণ, চুরি ইত্যাদি অপরাধ সংঘটিত হলে। আবার সম্পত্তির মালিকানা ও দখল ইত্যাদি সংক্রান্ত বিরোধ, পারিবারিক বিরোধ, অর্থ সংক্রান্ত বিরোধ বা মানহানির ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি কারণেও মামলা করা যেতে পারে।

প্রতিটি মামলা তার বিচার করার যোগ্যতা সম্পন্ন সর্বনিম্ন আদালতে দায়ের করতে হবে। মামলা থানা অথবা আদালত দুই জায়গায়ই করা যায়।

মামলার প্রকারভেদ কী কী?

মামলাটি কোথায় করা হয়েছে তার উপর অর্থাৎ মামলা করার জায়গার উপর নির্ভর করে মামলা প্রধানত দুই প্রকার৷ একটি হলো জিআর মামলা অপরটি হলো সিআর মামলা। আবার মামলা করার কারনের উপর ভিত্তি করে মামলাও দুই প্রকার। একটি দেওয়ানি মামলা অপরটি ফৌজদারি মামলা।

জেনারেল রেজিস্টার বা জিআর মামলা কী?

একটি মামলা যখন থানায় করা হয়, তখন তাকে বলা হয় জেনারেল রেজিস্টার বা জিআর মামলা বলে। কোনো ধরনের কালবিলম্ব না করে অপরাধের শিকার ব্যক্তি নিজে বা তার পক্ষে কেউ এই মামলা বা এজাহার করতে পারেন।

অনেক এজাহার করবেন তাকে বলা হয় এজাহারকারী বা সংবাদদাতা। আত্মপ্রকাশকারী কর্মকতা কার্যকরী অপরাধ গ্রহণ করে। নিরাপত্তা নিরাপত্তাও পুলিশ করে থাকে।

আরো পড়ুন:  পিএসডিএস, জেডিসি, এসএসএস, জেডিসি, দাখিল সহ সকল পাবলিক বিরোধ রেজাল্ট নিয়ম

সিআর মামলা কী?

যখন মামলাটি আদালতে দায়ের করা হয় তখন তাকে বলা হয় কমপ্লেইন্ট রেজিস্টার বা সিআর মামলা বলে। যদি পুলিশ মামলা গ্রহণ না করে বা গ্রহণ করতে গড়িমসি করে, তখন আদালতেও মামলা দায়ের করা যায়। বাংলায় একে বলে নালিশী মামলাও বলা হয়।

যেই মামলাগুলো থানায় না করে বরং আদালতে করা হয় সেগুলোই সিআর মামলা। এসব মামলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট শুনানি করে মামলা গ্রহণ করেন অথবা প্রত্যাহার করতে পারেন। ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে যদি মামলা সন্দেহজনক মনে হয় তাহলে তিনি মামলা গ্রহণের পর পুলিশকে সে বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ প্রদান করতে পারেন।

ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের দেওয়া তদন্তের ফলাফল বিবেচনা করে নালিশ আমলে নেওয়ার মতো কোন কারণ না পেলে নালিশটি খারিজ করতে পারবেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলা খারিজ করার কারণ লিপিবদ্ধ করতে হবে

দেওয়ানি মামলা কী?

কোন বিষয়ে অধিকারের দাবি করা বা ক্ষতিপূরণের দাবির জন্য যেমন: দেনমোহর, ভরণপোষণ, বিবাহ বিচ্ছেদ/তালাক(ডিভোর্স), পারিবারিক সম্পর্কের পুনরুদ্ধার, দত্তক, উত্তরাধিকার, সন্তানের হেফাজত, টাকা পাওয়ার মামলা, চুক্তির শর্ত মানার মামলা, সম্পত্তি দখল বা অধিকার নিয়ে মামলা, স্থায়ী বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা দলিল সংশোধন, বাতিল করার মামলা জমি-জমা নিয়ে মামলা, নামজারি, নামখারিজ ইত্যাদি কারণে যে মামলা করা হয় তাকে দেওয়ানী মামলা বা Civil Case বলে। যদিও আমাদের দেশের অধিকাংশ দেওয়ানী মামলাই জমিজমা সংক্রান্ত। তবে ইদানীং বিয়ে সংক্রান্ত মামলাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

ফৌজদারি মামলা কী?

ব্যাক্তি, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করে এমন অপরাধযুক্ত কার্যকলাপের জন্য যে মামলা দায়ের হয় তাকে ফৌজদারি মামলা বলে।

চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই,অপহরণ, ধর্ষণ, মানহানি, এসিড নিক্ষেপ, যৌতুক দাবী, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, অবৈধ অস্ত্র সংক্রান্ত অপরাধ, মারপিট বা যে কোন শারীরিক আঘাত, মানব পাচার, হত্যা,আত্নহত্যায় উস্কানি, প্রতারণা, জালিয়াতি, মাদক সংক্রান্ত অপরাধ, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি বিষয়ে ফৌজদারি মামলা (Criminal Case) করা হয়।

এ ছাড়াও আরও অনান্য কারণে ফৌজদারি মামলা করা হতে পারে।

আমলযোগ্য আমল অযোগ্য মামলা

আইন মোতাবেক কিছু অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারবে। এসব ক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে থাকেন। এসব অপরাধে যে মামলা হয় তাকে আমলযোগ্য মামলা বলা হয়।

কিছু অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করতে পারে না। অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে প্রসিকিউিশন ওয়ারেন্ট বা নন-এফআইআর মামলা আদালতে দাখিল করেন। এগুলো আমল অযোগ্য মামলা।

এ ধরনের অপরাধের মামলা কোর্টের নন-জিআর রেজিস্ট্রারভুক্ত হয়ে পরিচালিত হয় বলে এ মামলাকে নন-জিআর মামলা বলা হয়।

দেওয়ানি মামলা করার নিয়ম

একটি দেওয়ানী মামলা কিভাবে শুরু থেকে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চলবে তার যাবতীয় বিষয় বলা আছে দেওয়ানী কার্যবিধিতে। দেওয়ানী কার্যবিধি ১৯০৮ সালে প্রণয়ন করা হয়। জেলা জজ আদালত, অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত, যুগ্ন জেলা জজ আদালত, সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, সহকারী জজ আদালত এই পাঁচ জায়গায় দেওয়ানী মামলা করা হয়।

দেওয়ানি মামলা করার ক্ষেত্রে প্রথমেই যেতে হবে সংশ্লিষ্ট আদালতে। তবে খেয়াল রাখতে হবে আপনার মামলার বিষয়টি নিশ্চিতভাবে ওই আদালতের এখতিয়ারভুক্ত কিনা।

যেমন ২৫ হাজার টাকার অধিক মূল্যের দেওয়ানি মামলা যদি কেউ স্মল কজেস অর্থাৎ ক্ষুদ্র মামলার আদালতে করে তাহলে তা ঐ মামলা ঐ আদালতের এখতিয়ারভুক্ত হয় না। আদালতে যাওয়ার পর মামলার প্রথম ধাপই হলো সেরেস্তাদের কাছে মামলার বিস্তারিত লিখিত বিবরণ দাখিল করা। একে বলা হয়ে থাকে আর জি।

আরজির সাথে যে সকল কাগজাবলির ওপর মামলার ভিত্তি নির্ভর করে সেসব কাগজাবলি প্রদান করতে হয়। এছাড়াও দিতে হয় কোর্ট ফি, প্রসেস ফি, সমন ও ডাকযোগে সমন জারির জন্য প্রয়োজনীয় প্রাপ্তিস্বীকারপত্র ইত্যাদি।

মামলার আরজি বাদী নিজে অথবা তার অবর্তমানে বাদীর আইনজীবী দাখিল করতে পারেন। এক্ষেত্রে মামলার মূল্যমান সঠিক ভাবে নির্ধারিত হয়েছে কি না এবং কোর্ট ফি সঠিক ভাবে দেওয়া হয়েছে কি না তা খেয়াল রাখতে হবে।

কোর্ট ফি, প্রসেস ফি, সমন ইত্যাদি ঠিক না থাকলে অথবা দাখিলকৃত দলিল বা ওকালতনামা অনান্য কাগজপত্ররে মধ্যে কোন গাফিলতি থাকলে সেরেস্তাদার মামলাটি স্থগিত রাখতে পারেন।

এক্ষেত্রে অবশ্যই বাদী বা বাদীর আইনজীবিকে ভুলগুলো শুধরে দেওয়া উচিত। যদি কোন কিছুতে কোন সমস্যা না থাকে তাহলে সেরেস্তাদার মামলাটি আদালতের পেশকারের কাছে পাঠাবেন। এরপর পেশকার আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটি শুরু করবেন।

মামলা যখন আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে তখন আদালত থেকে বিবাদীর ঠিকানায় সমন পাঠানো হবে। এই সমন সরাসরি বা ডাকযোগে পাঠানো হয়। সমন পেলে বিবাদীকে অবশ্যই এর জবাব দিতে হয়।

বিবাদী জবাব দাখিল করার পর দুই পক্ষের মধ্যে আপোষ মিমাংসা এর একটি সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বাদী ও বিবাদী আপোষ করতে না চাইলে মামলার পরবর্তী ধাপ হিসেবে বিচার্য বিষয় গঠন হয়।

বিচার্য বিষয় গঠন হওয়ার পর প্রথমে প্রাথমিক শুনানী হয়। প্রাথমিক শুনানীর পরে হয় চূড়ান্ত শুনানি। সবশেষে রায় ঘোষণা করা হয় ডিগ্রি জারি হয়। তবে এসব হয় চুড়ান্ত শুনানি ও যুক্তি তর্কের পরে।

ফৌজদারি মামলা করার নিয়ম

ফৌজদারি মামলা করতে হলে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে ঘটনাস্থল যেই থানার অধীনে সেই থানাতে। থানায় এফআইআর বা এজাহার দাখিল করতে হবে। নূন্যতম ২৪ ঘন্টা কোনো ব্যাক্তির খোঁজ পাওয়া না গেলে বা সে হারানো গেছে বলে বলে মনে করা হলে থানায় জিডি করা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জিডি থেকেও মামলায় হতে পারে।

মামলা দায়ের করা হলে প্রথমে তা ম্যাজিস্ট্রেট এর সামনে উপস্থাপন করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপনের পরে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হয়।

পুলিশী তদন্ত শেষে ফাইনাল রিপোর্ট/চার্জশীট দাখিল করে। যদি তদন্তে বিবাদী নির্দোষ হয় তাহলে ফাইনাল রিপোর্ট আর দোষী হলে চার্জশীট দেওয়া হয়।

তারপর নারাজী দরখাস্ত অথবা চার্জ শুনানী হয়ে থাকে। তদন্তে বিবাদী নির্দোষ প্রমাণিত হলে তার বিপক্ষেও বাদী নারাজী দরখাস্ত প্রদান করতে পারেন। আবার যদি বিবাদী দোষী প্রমাণিত হলে তবেও বিবাদী নিজে চার্জের শুনানি দাবি করতে পারেন।

শুনানি শেষে যদি বিবাদী নির্দোষ প্রমাণিত হয় তবে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়ে থাকে। আর যদি দোষী প্রমাণিত হয় তবে চার্জশীট গঠন করা হয়।

চার্জশীট গঠনের পরে বিবাদী যদি নিজের দোষ স্বীকার করে তাহলে মামলা ওখানেই শেষ হয়ে যায়৷ দোষীকে যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদান হয়। আর যদি বিবাদী দোষ স্বীকার না করে তবে এরপরে শুরু হয় যুক্তিতর্ক, শুনানী ও স্বাক্ষরগ্রহণের পালা। এই পর্বেই মূলত কাউকে দোষী কিংবা নির্দোষ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

মামলার রায় অনুযায়ী শেষে বিবাদীকে শাস্তি প্রদান অথবা বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য যে বিবাদী যদি গ্রেপ্তার হন তাহলে মামলার রায় হওয়ার আগ অবধি যেকোনো সময় জামিনের জন্য আবেদন করতে পারেন। জামিনের আবেদন যদি গ্রহণ করা হয় তবে তিনি জেলের বাইরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। আর আবেদন গ্রহণ না হলে বিবাদী কে জেলেই অবস্থান করতে হবে।

মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

মামলা করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগে। দেওয়ানী, ফৌজদারি দুই ক্ষেত্রেই লাগে। যা যা লাগে তা হলো:

খুন, আঘাত, আত্নহত্যার চেষ্টার মামলায় ফরেনসিক রিপোর্ট (Forensic Report), ময়না তদন্তের রিপোর্ট লাগে৷ ধর্ষণ, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, মারধরের মামলায় মেডিকেল সার্টিফিকেট লাগবে। মানহানির মামলায় পোস্ট, নিউজ, পোস্টার, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি লাগবে।

যৌতুকের মামলায় কাবিননামা এবং কারাগারে আটক ব্যাক্তিদের মামলার ক্ষেত্রে এজাহার বা নালিশী প্রতিবেদনের নকল, চালান প্রতিবেদন, পুলিশ রিপোর্ট, মেডিকেল সার্টিফিকেট, আগের আদেশের কপি লাগবে।

আবার দেওয়ানী মামলা যেসব কাগজপত্র লাগে তা হলো: জমি কেনার সময়ে যে দলিল সম্পাদিত হয়, মালিকানার ধারাবাহিকতা প্রমাণের জন্য পূর্বের দলিলসমূহ, ১৮৯০ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত ভূমি জরিপের মাধ্যমে যে খতিয়ান প্রস্তুত হয়েছিল।

জেলা ভিত্তিক এই জরিপ সম্পন্ন (১৮৯০-১৯৪০) হয়েছিল বলে এই খাতিয়ান কে ডি.এস.খতিয়ানও বলা হয়, সি.এস.জরিপে (১৮৯০-১৯৪০) তৈরী করা রেকর্ড অর্থাৎ খতিয়ান ও নকশার অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে এ দীর্ঘ সময়ে ভোগ দখলের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন হয় তার হালনাগাদকরণের লক্ষ্যে এ সংশোধন কার্যক্রম গৃহীত হয়, ১৯৫৬ সাল হতে ১৯৬২ সাল এই সমযের পরিসরে একটি সংক্ষিপ্ত জরিপ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়।

এই জরিপেকে এস.এ.জরিপ বলা হয়। এ জরিপে মালিক জামিদারের নাম, জমির বিবরণ সম্বলিত তালিকা প্রণয়ন এবং সকল মালিকের নামে হাতে লেখা খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়, বর্তমানে খতিয়ান হালনাগাদ করার জন্য যে জরিপ চলছে, জমির মালিকানা পরিবর্তনের পর দাবীকারির নামে যে খতিয়ান সম্পাদিত হয়, কাবিননামার ক্ষেত্রে বিবাহ রেজিস্ট্রির দলিল।

মূলত এসব কাগজপত্র হলেই মামলা করা যায়৷ তবে সব মামলায় উপর্যুক্ত সব কাগজ লাগবে না৷ আপনি যেখানে মামলা করবেন তারা আপনাকে প্রয়োজনীয় সাহায্য করবেন।

মামলা চালানোর নিয়ম

দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় ক্ষেত্রেই মামলা চালানোর খরচে সরকারি সহায়তা নানা ধরনের পরামর্শ ও সেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। যাদের বাৎসরিক আয় ১ লক্ষ টাকার বেশি নয় তারাই এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এ সুবিধা ভোগ করতে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের দ্বারস্থ হতে হবে।

দেওয়ানী মামলায় প্রাপ্ত সরকারি সুবিধাসমূহ কী কী?

  • সরকারি সহায়তায় প্যানেল আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে মোকাদ্দমা পরিচালনা
  • লিগ্যাল এইড অফিসারের নিকট থেকে আইনগত পরামর্শ
  • প্যানেল আইনজীবীর নিকট থেকে দলিল-পত্র পরীক্ষা ও দায়েরযোগ্য মামলায় আইনগত সহায়তা
  • দরকারি নকল পাওয়া
  • মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি
  • আইনগত তথ্য সেবা
  • ডি.এন.এ.টেস্টের খরচ

ফৌজদারি মামলায় প্রাপ্ত সরকারি সুবিধাসমূহ কী কী?

  • জেলা লিগ্যাল এইড অফিস হতে আইনগত তথ্য ও পরামর্শ।
  • প্যানেল আইনজীবীর নিকট হতে আইনগত পরামর্শ।
  • সরকারি সহায়তায় ফরিয়াদি/অভিযোগকারী/অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে নিয়োগের মাধ্যমে মামলা পরিচালনা।
  • আসামী হাজিরার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ( যেমন: মেডিকেল সার্টিফিকেট) সংগ্রহ করার বিষয়ে পরামর্শ ও তথ্য প্রাপ্তি।
  • কারাগারের আবেদনকারীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নকল পেতে সহায়তা।
  • ডি.এন.এ. টেস্ট এর খরচ।

কারাগারে আটক ব্যক্তির সরকারি সহায়তা সম্পর্কিত তথ্য

কারাগারে আটক ব্যক্তিও আইনি সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে তাকে আবেদন করতে হয় জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষের নিকট। যেভাবে সহায়তা পেতে পারেন–

যে কোন ধরণের ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত থাকলে সেই ব্যক্তি জেলা কারাগারের মাধ্যমে লিগ্যাল এইড প্যানেল আইনজীবী নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

কারাগার কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম, পিতার নাম, হাজতী নম্বর, মামলার নম্বর এবং কোন আইনের অধীন ও কোন আদালতে মামলা এ সকল যাবতীয় তথ্য লিগ্যাল এইড অফিসে প্রেরণ করবেন।

প্যানেল আইনজীবী লিগ্যাল এইড অফিসের সহায়তায় এজাহার দরখাস্তের অনুলিপি, চালান প্রতিবেদন, পুলিশ রিপোর্ট, মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন।

আটক ব্যক্তির আত্নীয় স্বজন চাইলে মামলার তদবিরকারী হিসাবে লিগ্যাল এইড অফিস ও প্যানেল আইনজীবীর নিকটে যোগাযোগ করেও তার থেকে মামলার তথ্য নিতে পারবেন।

সহায়তা পেতে কী কী লাগবে?

জমি সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে সিএস, এসএ, আরএস রেকর্ডের কাগজপত্র, খাজনার দাখিলা, DCR (Duplicate Carbon Recite), দলিলের কপি (মূল/জাবেদা), নাম খারিজের কাগজ,ভোটার আইডি কার্ড/ জন্ম নিবন্ধন সনদ ইত্যাদি লাগবে।

পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে কাবিন নামা, তালাক নামা, ভোটার আইডি কার্ড/ জন্ম নিবন্ধন সনদ, বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন কার্ড, ২য় বিবাহের কাবিন নামা ইত্যাদি লাগবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে মেডিকেল সার্টিফিকেট, অন্যান্য কাগজপত্র, ভোটার আইডি কার্ড/ জন্ম নিবন্ধন সনদ ইত্যাদি লাগবে।

মামলা প্রত্যাহারের নিয়ম

মামলা করার পর যদি বাদী তার প্রতিপক্ষের সঙ্গে মামলা আপস করে ফেলেন, সেক্ষেত্রে মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। সাধারণত ফৌজদারি কিছু গুরুতর অপরাধ ছাড়া আদালত অধিকাংশ সময় ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলা প্রত্যাহারে সহায়তা দিয়ে থাকে।

তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সমঝোতার ভিত্তিতে মামলা প্রত্যাহার হয়। ফৌজদারি বা দেওয়ানি মামলা দায়ের করবার পর মামলা দায়েরকারী যদি মনে করেন যে তিনি আর মামলাটি পরিচালনা না করে আপোস করবেন সেক্ষেত্রে মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হয়েছে।

প্রচলিত আইনে আপস-অযোগ্য ফৌজদারি মামলাগুলো প্রত্যাহারে আদালত খুব সতর্ক থাকার চেষ্টা করে এবং আপসযোগ্য মামলাগুলোতে সহজেই মামলা প্রত্যাহার করা যায়। আর দেওয়ানি মামলাগুলো প্রত্যাহার করাও খুব বেশি জটিল নয়।

ফৌজদারি কার্যবিধি ও দেওয়ানি মামলার কার্যবিধিতে মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলা আছে। চলুন দেওয়ানি এবং ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।

দেওয়ানী মামলা প্রত্যাহার করার নিয়ম

দেওয়ানি কার্যবিধির ২৩ আদেশের ১ নাম্বার নিয়ম অনুসারে, দেওয়ানি মামলা হওয়ার পর যেকোনো সময়ে বাদী সব বা যেকোনো বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে বা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করতে পারেন।

যেক্ষেত্রে আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোনো পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য মোকদ্দমাটি ব্যর্থ হতে বাধ্য এবং মামলার বিষয়বস্তুর জন্য কিংবা কোনো দাবির অংশের জন্য নতুনভাবে মোকদ্দমা করার জন্য বাদীকে অনুমতি দেয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, সেক্ষেত্রে আদালত উপযুক্ত শর্তে বাদীকে তার মোকদ্দমা প্রত্যাহার করে অথবা তার আংশিক দাবি পরিত্যাগ করার অনুমতি দিতে পারবেন এবং ওই মোকদ্দমার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বা ওই রকম আংশিক দাবি সম্পর্কে পুনরায় মোকদ্দমা করার অনুমতি মঞ্জুর করতে পারেন।

আদালতের উল্লিখিত অনুমতি ছাড়া যেক্ষেত্রে বাদী মোকদ্দমা প্রত্যাহার করেন বা আংশিক দাবি পরিত্যাগ করেন, সেক্ষেত্রে বাদী আদালতের সিদ্ধান্ত অনুসারে মোকদ্দমার খরচার জন্য তিনি দায়ী হবেন এবং ওই বিষয়বস্তু বা আংশিক দাবি সম্পর্কে নতুনভাবে কোনো মোকদ্দমা দায়ের করার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।

এই নিয়মের কোনো বিধান বলে আদালত কয়েকজন বাদীর মধ্যে একজনকে অন্যান্য বাদীর সম্মতি ছাড়া মোকদ্দমা প্রত্যাহার করার অনুমতি দিতে পারেন না।

ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করার নিয়ম

সরকারি কৌশুলি এবং ব্যক্তি নিজে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি কৌঁসুলি বা পাবলিক প্রসিকিউটর আদালতের অনুমতি নিয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত মোকদ্দমায়, সাধারণভাবে যেসব অপরাধে তার বিচার হচ্ছে, তার যেকোনো এক বা একাধিক অপরাধ সম্পর্কে পরিচালনা থেকে সরে যেতে পারেন।

অভিযোগনামা প্রণয়নের আগে সরে গেলে ওই এক বা একাধিক অপরাধ সম্পর্কে আসামির অব্যাহতি হবে এবং অভিযোগ প্রণয়নের পর সরে গেলে অথবা এই আইন অনুসারে কোনো অভিযোগনামা প্রণয়ন করা প্রয়োজন না হলে ওই এক বা একাধিক অপরাধ সম্পর্কে আসামিকে খালাস দিতে হবে।

মামলা পরিচালনা থেকে সরে যাওয়ার উপযুক্ত কারণ সম্পর্কে অভিযোগকারী আদালতকে সন্তুষ্ট করবেন। সন্তুষ্ট হলেই মামলা প্রত্যাহার করা যাবে৷ কেবল সরকারের তরফ থেকে মামলা থেকে সরে যাওয়ার আদেশ আদালত কর্তৃক অনুমতি প্রদানের জন্য যথেষ্ট হয় না।

কার্যবিধির ৪৯৪ ধারার অধীনে মামলা প্রত্যাহারে বেশকিছু বিষয় আদালতের পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো–

  • ১. মামলা প্রত্যাহারের আবেদন কেবল পাবলিক প্রসিকিউটরের তরফ থেকেই করতে হবে। মামলাকারী কিংবা আসামির আবেদন কিংবা সরকারের কোনো আদেশের বলে মামলা প্রত্যাহার করা যাবে না।
  • ২. মামলা প্রত্যাহারের যুক্তিযুক্ত উপযুক্ত কারণ কৌসুলির পক্ষ থেকে আদালতের সামনে ভালো করে ব্যাখ্যা করতে হবে। কেবল সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে আদালত মামলা প্রত্যাহারের আদেশ দিতে পারে না। মামলা প্রত্যাহার সম্পর্কে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গন্য হয়।

তাই, আদালত যদি মামলা প্রত্যাহারের কারণ সম্পর্কে অসন্তুষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে প্রত্যাহারের অনুমতি না দিয়ে মামলা এগিয়ে নেয়ার আদেশ দিতে পারে।

মামলার ভিকটিম বা এজাহারকারী যদি কোন কারণে মনে করে যে, রাষ্ট্রপক্ষ বিনাকারণে তাদের মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে, সেক্ষেত্রে ক্ষেত্রবিশেষে দায়রা জজ আদালত কিংবা হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন দায়ের করতে পারে

ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৮ ধারায় বলা আছে যে, কোন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত ফরিয়াদি যদি ম্যাজিস্ট্রেটের এই বলে সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেন যে, তাকে নালিশ প্রত্যাহারের অনুমতি দেয়ার পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে সেই নালিশ প্রত্যাহারের অনুমতি এবং আসামিকে খালাস দেবেন।

জেনে রাখা উচিত যে, এই ধারাটি শুধু নিষ্পত্তি যোগ্য মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যা ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪৫ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। সেজন্য অভিযোগকারী এই ধারা অনুসারে নালিশ প্রত্যাহার করতে পারেন

তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে, নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলা প্রত্যাহার করা হলে একই বিষয়ে পুনরায় নতুন করে মামলা করা যায় না। তবে যদি একান্তই জরুরিভাবে আবার মামলা চালানোর প্রয়োজন হলে উচ্চতর আদালতে রিভিশন দায়ের করে মামলা চালু করা যায়৷

তবে এক্ষেত্রে আদালতকে যদি সন্তুষ্ট করা যায় তবেই সেক্ষেত্রে আদালত পুনর্বিচার কিংবা পুনর্তদন্তের নির্দেশ ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত দিতে পারেন। হাইকোর্ট বিভাগের সহজাত ক্ষমতার অধীনে এধরনের আদেশ দেয়ার সুযোগ আছে।

পরিশেষে, আর্টিকেলটি পড়ে আশা করি মামলা করার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। কোন ধরনের মামলা করবেন তা আগে জেনে বুঝে মামলা করতে যাওয়া উচিত। যদি আপনি এসব না জানেন তবুও থানায় গেলে পুলিশ বিস্তারিতভাবে আপনাকে যাবতীয় কিছু বুঝিয়ে বলবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ভালো করে পড়লে আশা করি সবকিছু জেনে যাওয়ার কথা। মামলা করতে যাবার আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগে থেকেই সংরক্ষণ বা গুছিয়ে রাখুন। এতে করে আপনার মামলা করার সময় অযথা দৌড়ঝাঁপ এবং সময়ক্ষেপণ বা সময় নষ্ট হবে না।

তবে এমন অনেক কিছু বিষয় থাকে যেগুলো একজন আইন বিশেষজ্ঞ যাকে আমরা আইনজীবী বলে জানি , তিনিই আইনের এসব খুঁটিনাটি বিষয় ভালো করে জানেন। আপনার উচিত হবে একজন আইনজ্ঞ এর পরামর্শ নেওয়া।

লিখেছেন: রাকিব খান

সূচীপত্র

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top