টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড ও টিন সার্টিফিকেট যাচাই করার নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট কি?

টিন বা টিআইএন (TIN) এর পূর্ণরূপ হলো ট্যাক্সপেয়ার আইডেনটিফিকেশন নাম্বার (Taxpayer Identification Number)। এটি একটি বিশেষ নাম্বার যার সাহায্যে বাংলাদেশে করদাতাদের শনাক্ত করা হয়। টিন সার্টিফিকেট মূলত এই করদাতাদের শনাক্ত করার জন্য ব্যাবহার করা হয়। একটি নাম্বার থাকে। এই নাম্বার করদাতা শনাক্ত করে থাকে। এটিই করা দাতার আইডেন্টিটি বহন করে থাকে। অর্থাৎ টিআইএন বা টিন সার্টিফিকেট একজন করদাতার পরিচয়পত্রের মতোই কাজ করে। বাংলাদেশে টিন নাম্বারটি সাধারণত ১২ ডিজিটের হয়ে থাকে।

টিন সার্টিফিকেট থাকলে কি কর দেওয়া বাধ্যতামূলক?

টিন সার্টিফিকেট বলতে বোঝায় এক্সপেয়ার আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার। ইনকাম ট্যাক্স দিতে গেলে আপনার একটি টিন সার্টিফিকেট দেয়া লাগবে‌। আপনি এই ইনকাম ট্যাক্স টিন সার্টিফিকেট ছাড়া দিতে পারবেন না।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিন সার্টিফিকেট থাকলে কর দিতে হবে।আবার অন্যদিকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিন সার্টিফিকেট থাকলে কর দিতে হবে না।আজকে আমাদের এই পোস্টে তুলে ধরা হয়েছে কাদের জন্য কর দেয়া বাধ্যতামূলক। নিচে থেকে তালিকা দেখে নিনঃ

  • যদি আয় বছরে করদাতার মোট করযোগ্য আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করে তবে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
  • মোটর গাড়ির মালিকানা থাকলে দিতে হবে।
  • মূল্য সংযজোন কর আইন, ১৯৯১ এর অধীন নিবন্ধিত কোন ক্লাবের সদস্যপদ থাকলে।
  • সিটি কর্পোরেশনে অথবা পৌরসভায় ব্যাবসা পরিচালণার জন্য ট্রেড লাইসেন্স থাকলে কর দিতেই হবে।
  • ডাক্তার, আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার পেশায় নিয়োজিত সকল ব্যাক্তিবর্গকে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
  • চেম্বার অব কমার্স এন্ড উন্ডাস্ট্রিজ অথবা কোন ট্রেড এসোসিয়েশনের সদস্য।
  • পৌরসবা, সিটি কর্পরেশন অথবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল পদপ্রার্থী
  • সরকারী, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ঠিকাদারি কাজে টেন্ডারে অংশগ্রহনকারী সকল ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
  • সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারী চাকরীরতদের মূল বেতন ২৫ হাজার টাকা বা তার বেশি হলে রিটার্ন জমা দিতে হবে।

কত টাকা আয় হলে টিন সার্টিফিকেট করতে হবে।

১) যাদের মাসিক আয় ২৫,০০০ টাকা এর বেশি।

২) যাদের বাৎসরিক আয় ৩,০০,০০০ (তিন লক্ষ) টাকার উর্ধ্বে তাদের আয়কর প্রদান করতে হবে।

৩) নারী, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ, সিনিয়র সিটিজেন এদের ক্ষেত্রে ৩,৫০,০০০ টাকার বেশি আয় হলে আয় কর দিতে হবে। 

৪) ৬৫ বছর বয়সের উর্ধ্বে কোন মহিলার বাৎসরিক আয় ৩,৫০,০০০ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকার উর্ধ্বে হলে তাকে আয়কর প্রদান করতে হবে।

এছাড়া আয়কর প্রদান করা ছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয়ের জন্য কর প্রদান করার প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে করদাতাকে টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে নিতে হবে। কর প্রদানের প্রয়োজন ছাড়াও কারো কারো টিন সার্টিফিকেট করতে হতে পারে।

টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজনীয়তা

টিন সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারবেন।  আপনি এই সার্টিফিকেটের মাধ্যমে যেসব কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন তা হলো:

  1. আমদানি করার ক্ষেত্রে আমদানিপত্র রেজিস্ট্রেশন করার জন্য।
  2. সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য।
  3. যেকোন ধরনের বাণিজ্যিক দরপত্রের জন্য।
  4. সিটি কর্পোরেশন অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলে যে কোন জমি বা ভবন রেজিস্ট্রেশনের জন্য।
  5. ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার জন্য।
  6. কোম্পানী রেজিস্ট্রেশনের জন্য এবং কম্পানীর শেয়ার হোল্ডার হওয়ার জন্য টিন সার্টিফিকেট লাগবে।
  7. ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য।
  8. যেকোনো ব্যাবস্যায়িক সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য কিংবা সদস্য পদ নবায়ন করার জন্য।
  9. গাড়ি, জিপ অথবা মাইক্রোবাসের রেজিস্ট্রেশন কিংবা ফিটনেস লাইসেন্সের জন্য।
  10. কোন পেশাদারী কাজের প্র্যাক্টিস এর জন্য লাইসেন্স নিতে হয়। যেমনঃ ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী ইত্যাদি।

টিন সার্টিফিকেট তৈরি করার নিয়ম

আপনারা যারা টিন সার্টিফিকেট খোলার নিয়ম জানতে চান। তাদের জন্য এখানে আমরা কিছু নিয়ম বলে দিয়েছি। যার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন টিন সার্টিফিকেট কিভাবে পাওয়া যায়। তাই নিচের অংশ থেকে জেনে নিন টিন সার্টিফিকেট এর আবেদন কিভাবে করতে হবে।

টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করার নিয়ম

আপনি যদি আপনার জন্য টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিছু কাগজপত্র নিজের কাছে রাখতে হবে। এবং সেই কাগজপত্র দিয়ে আপনাকে পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে। আপনার যা যা লাগবে তা হলো:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র
  • মোবাইল নাম্বার
  • বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা

পরবর্তীতে উল্লেখিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এখন রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তীতে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর। ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ক্যাপচা পূরণ করে একাউন্ট একটিভ করতে হবে। তারপর আপনার ফোন নাম্বার একই ভেরিফিকেশন কোড আসবে। কোড সাবমিট করুন। আপনার রেজিস্টার সম্পূর্ণ হয়ে গেল।

এরপর টিন রেজিস্ট্রেশন এর জন্য ক্লিক করতে হবে।

যে ফ্রম প্রদর্শন করা হবে সেই ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। সব তথ্য ঠিক থাকলে সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন এবং পরবর্তীতে ভিউ অপশনে ক্লিক করে আপনার সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন।

অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট যাচাই করার নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট যাচাই করার জন্য আপনাকে https://vat.gov.bd ওয়েবসাইট লিংকে ভিজিট করতে হবে। 

প্রথম ধাপ:

Vat Registration Service ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন 

সর্বপ্রথম https://vat.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। উক্ত লিংকে প্রবেশ করার পর Sign up মেন্যুতে প্রবেশ করুন। Sign up মেন্যুতে যাওয়ার পর একটি ফরম পাবেন। যাবতীয় তথ্য দিয়ে ফরমটি Sign up করতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ:

TIN Check করতে registration সম্পন্ন করুন

Sign up মেন্যুতে যাওয়ার পর একটি ফরম পাবেন। যাবতীয় তথ্য দিয়ে ফরমটি করুন। User Type অপশনে আপনাকে Resident সিলেক্ট করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে আপনার নাম ও এনআইডি নাম্বার লিখুন। Designation হিসেবে Owner সিলেক্ট করুন।  আপনার মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল আইডি লিখুন। এখানে ইমেইল আইডি অত্যন্ত জরুরী। কারণ ইমেইলের মাধ্যমে আপনাকে আপনার একাউন্টের Username ও একটি অস্থায়ী Password পাঠানো হবে।

তারপর অপশনে গিয়ে একটি প্রশ্ন সিলেক্ট করুন এবং প্রশ্নের উত্তর দিন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

ভবিষ্যতে আপনি যদি একাউন্টের Password ভুলে যান, তাহলে তখন আপনাকে এই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়ে Password টি পুনরুদ্ধার করতে হবে। সর্বশেষ, বাম পাশের বাটনে Cheek ক্লিক করুন। কোনো ভুল না থাকলে Submit করুন।

তৃতীয় ধাপ:

এরপর OTP Verification করুন। আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে একটি OTP আসবে। ২ মিনিটের মধ্যে OTP টি পূরণ করুন এবং Verify বাটনে ক্লিক করুন। পুনরায়  OTP পেতে Resend OTP  বাটনে ক্লিক করুন। সফল ভাবে মোবাইল নাম্বার Verify করার পর ফরমটি Submit করুন। 

চতুর্থ ধাপ:

Login করুন ও PAssword সেট করুন 

Verify করার কিছুক্ষণ পর আপনাকে ইমেইলে একটি Username ও একটি temporary Password পাঠাবে। সেখানে আপনাকে একটি নতুন Password সেট করতে হবে। ইমেইলে পাঠানো temporary Password  টি Old Password  এর জায়গায় বসান। তারপর আপনার পছন্দমতো একটি নতুন Password সেট করুন। Confirm Password এর জায়গায় ঐ নতুন  Password টির পুনরাবৃত্তি করুন। 

পঞ্চম ধাপ:

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন এবং আপনার Username, Password দিয়ে লগইন করুন। তারপর সেখানে একটি ড্যাসবোড ওপেন হবে। GENERAL INFORMATION সেকশনে e-TIN বক্সে আপনার 12 ডিজিটের TIN number লিখুন এবং উপরের Check বাটনে ক্লিক করুন। সেখান থেকে আপনি আপনার যাবতীয় তথ্যাদি যাচাই করে নিতে পারেন। এখানে টিন সার্টিফিকেট সঠিক থাকলে TIN রেজিস্ট্রেশনকারী ব্যক্তির নামসহ যাবতীয় তথ্যাদি দেখতে পাবেন। 

টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করার নিয়ম

আপনারা যারা আপনাদের টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করতে চান। তারা খুব সহজেই কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করতে পারবেন। তাই দেখে নিন আমাদের পোস্ট থেকে কিভাবে টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করতে হয়। তাই দেখে নিন পুরাতন টিন সার্টিফিকেট বের করার নিয়ম।

  • টিন সার্টিফিকেট এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
  • নিজের ইউজার নেইম আর পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করুন।
  • লগিন করার পর আপনি বিভিন্ন অপশন বার দেখতে পারবেন।
  • এডিট/কারেক্ট/ আপডেট অপশন এ সিলেক্ট করুন।
  • আপনি যেই টাইপের তথ্য সংশোধন করতে চান সেটি সিলেক্ট করুন।
  • এরপর আপনার সঠিক তথ্য দিয়ে সাবমিট এ ক্লিক করুন।

এভাবেই আপনার টিন সার্টিফিকেট সংশোধন এর রিকোয়েস্ট সাবমিট করতে হবে। সুনির্দিস্ট সময়ের পর আপনার আপডেট তথ্যটি একই সাইটে পেয়ে যাবেন।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম

এখন আপনি ঘরে বসেই খুব সহজেই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিচে আমরা কতগুলো নিয়ম বলে দিয়েছি যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবেন। মূলত আয়কর অধ্যাদেশ আপনার টিন সার্টিফিকেটটি বন্ধ করার জন্য সুমির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা দেয় নি। তবে প্রচলিত ক্ষেত্রে আমরা টিন বাতিল করার জন্য এই নিয়মগুলো অনুসরণ করে থাকি।

  • আপনি যেই কর অঞ্চলের অধীনে আপনার টিন নাম্বারটি খুলেছেন সেই অঞ্চলের উপকর কমিশনার বরাবর আপনার টিন টি বাতিলের জন্য আবেদন বা দরখাস্ত করতে হবে।
  • দরখাস্থ করার পূর্বে সময়সাপেক্ষ কিছু নিয়ম অত্যাবশক।
  • একজন করদাতা হতে যে পরিমাণ আয় করার প্রয়োজন সেই পরিমাণ আয় যদি আপনার না থাকে তাহলে আপনাকে কমপক্ষে ৩ বছর শূণ্য রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
  • তিন বছর শূণ্য রটার্ন দেয়ার পরেও যদি আপনার সামনে করযোগ্য আয়ের কোন সম্ভাবনা না থাকে তাহলে আপনি তৃতীয় বছরের রিটার্ন জমা দেয়ার সময় আপনার আয়কর ফাইলটি নথিস্থ করার জন্য একটি আবেদন করতে হবে উপকর কমিশনার বরাবর।
  • উপকর কমিশনার যদি আপনার দরখাস্থে সন্তুষ্ট হয় তাহলে আপনার ফাইলটি নথিস্থ করে রাখবেন।
  • পরবর্তীতে যদি আপনার কর দেয়ার মতো আয় হয় তখন সেই ফাইলটি পুনরায় সচল করতে হবে। উল্লেখ্য যে একটি আইডি কার্ড দিয়ে কেবল একটিই টিন একাউন্ট খোলা যায়।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার নিয়ম

আপনারা যারা টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান। তাদের জন্য এখানে কতগুলো নিয়ম দেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন।

  1. প্রথমে আয়কর বিভাগের সাইটে প্রবেশের করুন।
  2. সেখান থেকে লগিন এ ক্লিক করুন।
  3. এরপর আপনার ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে নিজের টিন একাউন্টে প্রবেশ করুন।
  4. সেখানে আপনার টিন সার্টিফিকেটের যাবতীয় সব তথ্য চেক করতে পারবেন।
  5. এছাড়া আপনি চাইলে সেখান থেকে প্রিন্ট বা ডাউনলোড করতে পারবেন একদম সহজেই। এভাবেই আপনি প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন।

টিন নাম্বার দিয়ে টিন সার্টিফিকেট বের করার নিয়ম

আপনার টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করে। নিচের নিয়ম গুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করলে আপনি অবশ্যই আপনার টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন। 

টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে করণীয়

টিন (Taxpayer’s Identification Number)

যেহেতু NID দিয়ে টিন সার্টিফিকেটের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা হয় সুতরাং একজন ব্যক্তি একবারই টিন রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে।

টিন সার্টিফিকেটের অধিকাংশ তথ্য যেমন: নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ থেকে অটোমেটিক আপডেট হয়। সুতরাং এই সকল তথ্য NID সংশোধন না করলে, টিন সার্টিফিকেটেও সংশোধন করা যাবে না।

শুধু মাত্র Father Name, Mother Name, Spouse Name, Gender, E-mail address, Facsimile, Present Address, Permanent Address, Other Address পরিবর্তন করা যাবে।

টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে বা কোন কারণে নতুন করে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার দরকার হলে নিচে ঠিকানায় গিয়ে login করতে পারেন। https://secure.incometax.gov.bd/TINHome

কোন কারণে User Name জানা না থাকলে NBR Helpline: 09611-777111 or 333 তে ফোন করে জেনে নিতে হবে। (অনলাইনে User Name Recovery অপশনটি আপাতত নিরাপত্তার জন্য বন্ধ আছে, তাই Helpline-এ ফোন করে জানা ছাড়া বিকল্প নেই)

টিন সার্টিফিকেট থাকার সুবিধা

আপনি যদি কোন পণ্য আমদানি করতে চান তাহলে সেই আমদানি করার ক্ষেত্রে আমদানিপত্র রেজিস্ট্রেশন করার জন্য এই TIN এর গুরুত্ব অপরিশীম। আপনি যদি কোন বিভাগীয় জেলা শহর অথবা পৌরসভায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার প্রয়োজন পড়বে এটি নবায়িত করার জন্য। আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেরন তাহলে সেই মাল সরবরাহ, চুক্তিনামা অথবা অন্যান্য যেকোনো বাণিজ্যের দরপত্রের জন্য আপনার অবশ্যই টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজনীয়।

আপনার কোন বীমা থাকলে সেই বীমা তালিকাভুক্তকরণ অথবা লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য TIN অপরিহার্য্য। আপনার যদি এক লক্ষ টাকার ওপরে সিটি করপোরেশনভুক্ত অঞ্চলে যেকোনো জমি বা ভবন থেকে থাকে তাহলে তার রেজিস্ট্রেশনের জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে। আপনার যেকোন প্রয়োজনে যদি কোন ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করতে চান তাহলে সেটি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার টিন সার্টিফিকেট থাকা জরুরী। অপরদিকে আপনি যদি কোন কম্পানির মালিক হয়ে থাকেন তাহলে সেটির রেজিস্ট্রেশনের জন্য টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন রয়েছে।

আপনার যদি কোন ঔষধের দোকান বা ব্যবসা থাকে তাহলে সেই ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য টিন একটি অপরিহার্য্য বিষয়। আপনি যদি  কোনো ব্যবসায়িক সমিতির সদস্য হতে চান অথবা সদস্যপদ নবায়ন করতে চান তাহলে সেটি করার জন্য টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন রয়েছে।

আপনি যদি আইএসডি টেলিফোন চালাতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে সেটির  সংযোগের জন্য টিন প্রয়োজনীয়। যারা মুসলমান ধর্মের তাদের জন্য সেই মুসলিম বিবাহ ও তালাকনামা রেজিস্ট্রেশনের জন্য। গাড়ি, জিপ অথবা মাইক্রোবাসের রেজিস্ট্রেশন কিংবা মালিকানা পরিবর্তন ও ফিটনেস লাইসেন্সের জন্য এই টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন অপরিশীম। যদি কোনো ব্যক্তির কমার্শিয়াল ব্যাংক অথবা লিজিং কম্পানি থেকে ঋণ গ্রহণ অথবা ঋণ অনুমোদনের প্রয়োজন হয় তাহলে সেই কাজের জন্যে এই সার্টিফিকেটের প্রয়োজন রয়েছে।

টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কে বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন

কিভাবে টিন সার্টিফিকেট যাচাই করবেন?

নিজে ঘরে বসে টিন সার্টিফিকেট যাচাই করতে https://vat.gov.bd একটি অ্যাকাউন্ট করুন। একাউন্ট তৈরি করা সম্পন্ন হলে আপনি আপনার টিন সার্টিফিকেট নম্বর ব্যাবহার করে সহজেই যাচাই করতে পারবেন। Tin Certificate Verification BD সম্পর্কে বিস্তারিত রয়েছে আমাদের ওয়েব সাইটে।

টিন সার্টিফিকেটের ব্যবহারকারীর আইডি অথবা পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে কি করবো?

যে সকল টিন সার্টিফিকেট ব্যবহারকারীর আইডি বা পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে প্রথমে রাজস্ব বোর্ডের (https://vat.gov.bd) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর password ফিরে পেতে উপরে থাকা মেনু বার থেকে ‘Forgot Password’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর সেখান থেকে পাসওয়ার্ড অথবা ব্যবহারকারীর আইডির যেটি আপনি পুনরুদ্ধার করতে চান তা নির্বাচন করতে হবে। তারপর প্রয়োজন অনুযায়ী মোবাইল নাম্বার ব্যাবহার করে সহজেই টিন সার্টিফিকেট আইডি ও পিন বের করা সম্বভ।

টিন সার্টিফিকেট লগইন করে চেক করা যায় কি?

টিন সার্টিফিকেট ব্যাবহারকারী আপনি টিন সার্টিফিকেট পেজে লগইন করতে আপনাকে একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

একটি এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে কয়টি টিন সার্টিফিকেট তৈরি করা যাবে?

একটি এনআইডি কার্ড দিয়ে শুধুমাত্র একটি টিন সার্টিফিকেটই তৈরি করা যাবে।

টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে কত টাকা খরচ হয়?

বর্তমানে ই-টিন সার্টিফিকেট যে কেউ ঘরে বসেই বিনামূল্যে তৈরি করতে পারবেন। এজন্য কোন ধরনের ফি প্রদান করতে হবে না।

বিদেশী কোন ব্যক্তিকেও কি কর দেওয়ার মত অবস্থায় বা প্রয়োজনে পড়লে বাংলাদেশ থেকেই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে হবে?

হ্যাঁ, বাংলাদেশে অবস্থিত সকল কর দাতাকে বাংলাদেশ থেকেই টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে ব্যবহার করতে হবে।

আশা করি আমাদের পোস্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন টিন সার্টিফিকেট চেক করার নিয়ম। এবং কিভাবে টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে হয়। লেখাটি ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। যাতে বাকিরাও জানতে পারে টিন সার্টিফিকেট যাচাই কিভাবে করতে হয়। এবং টিন সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Comment