বিন্দু কাকে বলে? বিন্দুর প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য

যার শুধু অবস্থান আছে কিন্তু দৈর্ঘ্য,প্রস্থ ও বেধ বা উচ্চতা কিছুই নেই তাকে বিন্দু বলে। বিন্দুকে শূণ্য মাত্রার সত্তা ধরা হয়। একটি বিন্দু হল জ্যামিতির সবচেয়ে মৌলিক বস্তু। এটি একটি বিন্দু দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয় এবং একটি বড় অক্ষর দ্বারা নামকরণ করা হয়। একটি বিন্দু শুধুমাত্র অবস্থান প্রতিনিধিত্ব করে; এটির শূন্য আকার রয়েছে (অর্থাৎ শূন্য দৈর্ঘ্য, শূন্য প্রস্থ এবং শূন্য উচ্চতা)।


একটি বিন্দু একটি সমতল বা কাগজের একটি টুকরা । একটি বিন্দুর কোনো দৈর্ঘ্য, প্রস্থ বা উচ্চতা নেই। এটি একটি সমতলে অবস্থান বা অবস্থান নির্ধারণ করে।

বিন্দু কাকে বলে

প্রকারভেদঃ

জ্যামিতিতে বিভিন্ন ধরণের বিন্দু রয়েছে, যেমন—

  1. সমরেখ বিন্দু
  2. অসমরেখ “
  3. একতালীয় “
  4. সমবর্তী “
  5. কৌণিক “
  6. প্রান্ত “
  7. ফোকাস “
  8. প্রসঙ্গ “
  9. শীর্ষ “

সমরেখ বিন্দু কাকে বলে ?
যদি তিন বা ততোধিক বিন্দু একই সরলরেখায় থাকে তবে বিন্দুগুলিকে সমরেখবিন্দু বলে।

অসমরেখ বিন্দু কাকে বলে?
যদি বিন্দুগুলির একই রেখায় না থাকে তবে সেই বিন্দুগুলিকে অসমরেখবিন্দু বলা হয়।

একতলীয় বিন্দু কাকে বলে?
বিন্দুগুলি যদি একই সমতলে থাকে তবে সেগুলিকে একতলীয়বিন্দু বলা হয়।

সমবর্তী বিন্দু কাকে বলে?
যদি দুই বা ততোধিক সরলরেখা একটি বিন্দুতে মিলিত হয়, সেই বিন্দুকে সমবর্তীবিন্দু বলে।

কৌণিক বিন্দু কাকে বলে?
কোনো কোণে যে বিন্দু উত্‍পন্ন হয় তাকে কৌণিকবিন্দু বলে।

প্রান্ত বিন্দু কাকে বলে?
একটি লেখা অনেক বিন্দু দিয়ে তৈরি এখন আমরা জানি প্রান্ত মানে শেষ তাহলে কোন রেখার শেষে যে বিন্দুটি থাকে তাকে ওই রেখার প্রান্তবিন্দু বলে।

ফোকাস বিন্দু কাকে বলে?
একগুচ্ছ আলোক রশ্মি প্রতিসরিত হওয়ার পর যে বিন্দুতে মিলিত হয় অথবা মিলিত হচ্ছে বলে মনে হয়, তাকে ফোকাসবিন্দু বলে।

প্রসঙ্গ বিন্দু কাকে বলে?
এ মহাবিশ্বের কোনো কিছুর অবস্থান নির্দেশ করার জন্য একটি বিন্দুকে স্থির করে নিতে হয়। এই বিন্দুকে প্রসঙ্গবিন্দু বা মূলবিন্দু বলা হয়

শীর্ষবিন্দু কাকে বলে?
যে তিনটি বিন্দু জুড়ে ত্রিভুজ তৈরি হয়। প্রতিটি শীর্ষ এক জোড়া বাহুর সংযোগ স্থলকে শীর্ষবিন্দু বলে।একটি ত্রিভুজে তিনটি বাহু আছে । যে কোনো দুটি বাহুর সংযোগ বিন্দুকে ত্রিভুজের শীর্ষবিন্দু বলা হয় । একটি ত্রিভুজের শীর্ষবিন্দু তিনটি ।

অন্যান্য ব্যবহারঃ

ফুল স্টপ হল যা একটি অনুচ্ছেদ থেকে অন্য অনুচ্ছেদকে আলাদা করে।
অন্য কথায়, এই ধরনের পয়েন্ট হল একটি যেটি একটি বাক্যকে আরেকটি থেকে আলাদা করার জন্য দায়ী যা একটি নতুন অনুচ্ছেদ শুরু করে। অতএব, বাক্যগুলি বিভিন্ন লাইন বা লাইনে যায়।

এই ক্ষেত্রে, সেই দ্বিতীয় লাইনটি অবশ্যই একটি বড় মার্জিন দিয়ে শুরু করতে হবে, অর্থাৎ ইন্ডেন্টেড।
বিন্দু এবং পৃথক আমেরিকার কিছু দেশে “পয়েন্ট এপার্ট” হিসাবে পরিচিত। আবার, সবচেয়ে আদর্শ হল যে আমরা প্রথম নামটি বেছে নিই।

চুড়ান্ত বিন্দুঃ

চূড়ান্ত বিন্দু হল এমন একটি যা একটি পাঠ্যের অধ্যায় বা এমনকি একটি সম্পূর্ণ কাজকে বন্ধ করে দেয়।
এই ধরনের পয়েন্ট হল, মূলত, যেটি একটি বইয়ের বিভাগগুলিকে বিভক্ত করে বা এটি সম্পূর্ণভাবে শেষ করে। অতএব, পরে কোন বাক্য বা অনুচ্ছেদ করা উচিত নয়।

পূর্ববর্তী প্রকারের মতো, এন্ডপয়েন্টেরও একটি দ্বিতীয় নাম রয়েছে: “ফুল স্টপ”। এটা স্পষ্ট যে এটি বলা হয় কারণ অন্যদের মাঝখানে একটি “y” আছে, এবং লোকেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্বাস করে যে এই ক্ষেত্রে এটি ঠিক ততটাই বৈধ।

তবে, তা নয়। “ফুল স্টপ” বলা সম্পূর্ণ ভুল। অন্যান্য পয়েন্টগুলিতে এটি একটি নাম চয়ন করা সহজ ছিল, তবে এখানে এটি ঐচ্ছিক নয় । আমাদের এটাকে বলা এড়ানো উচিত

অন্ধ বিন্দুঃ

যে বিন্দুতে রেটিনা ও অপটিক নার্ভ মিলিত হয় এবং যেখানে বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না, তাকে ব্লাইণ্ড স্পট বা অন্ধবিন্দু বলে। অন্ধবিন্দু(Blind spot) হল চোখের দৃষ্টিপটের মাঝামাঝি অবস্থিত একটি ক্ষুদ্র অংশ যা আমরা আসলে দেখতে পাইনা কিন্তু চোখের অনবরত সামান্য নড়া চড়ার (মাইক্রো-স্যাক্ক্যাড) জন্য ক্ষণিক আগের সেই অংশটির ও তার আশেপাশের দৃশ্য দিয়ে মনের মধ্যে ভরাট করে নিই তাই এর অস্তিত্ব টের পাই না।

অন্য চোখের শারীরবৃত্তীয় অন্ধবিন্দু: শারীরস্থানিক অন্ধবিন্দু বা অপটিক ডিস্ক হল চক্ষুগোলকের সঙ্গে চক্ষুস্নায়ুর সংযোগস্থল, যেখান থেকে গ্যাংলিয়ন কোষ স্নায়ুতন্তুগুলো চোখ থেকে বের হয়ে চক্ষু স্নায়ু গঠন করে। এখানে আলোক সংবেদী রড ও কোণ কোষগুলি নেই তাই এখানে রেটিনা কোন আলোক চিত্র গঠন করে না তাই এই বিশেষ অন্ধবিন্দুটি একটি শারীরবৃত্তীয় অন্ধবিন্দু। শারীরস্থানিক অন্ধবিন্দু চক্ষুগোলকের ফোভিয়ার কাছকাছি, একই তলে কিন্তু একটু নাকের দিকে অবস্থিত।

পীত বিন্দুঃ

চোখের রেটিনাতে পেছনের দিকে অবস্থিত একটি স্থান যেখানে সকল স্নায়ুর কোষ সংযুক্ত বা বেরি মস্তিষ্কে যায়। ঐ স্থানের অতি ক্ষুদ্রতম স্থানে আলোক সংবেদী কোষ থাকেনা তাই এখানে দর্শন সেন্স সৃষ্টি হয়না এই সংকির্ণ স্থানকে পিতবিন্দু বলে। রেটিনার যে অংশটিতে অধিক পরিমাণে কোন কোষ থাকায় কোনাে বস্তুর সুস্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠিত হয়, তাকে পীতবিন্দু বা ইয়ােলাে স্পট বা ফোভিয়া সেন্ট্রালিস বলে।

অন্ধ এবং পীত বিন্দুর পার্থক্যঃ

চোখের রেটিনাতে পেছনের দিকে অবস্থিত একটি স্থান যেখানে সকল স্নায়ুর কোষ সংযুক্ত বা বেরি মস্তিষ্কে যায়। অন্ধ বিন্দুর ও পীত বিন্দুর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। রেটিনা ও অপটিক স্নায়ুর সংযোগ স্থলে অন্ধবিন্দু অবস্থিত। অন্যদিকে অতি ক্ষুদ্রতম স্থানে আলোক সংবেদী কোষ থাকেনা তাই এখানে দর্শন সেন্স সৃষ্টি হয়না এই সংকির্ণ স্থানকে পিতবিন্দু বলে।

২। অন্ধ বিন্দুতে রড কোষ ও কোণ কোষ কোনটিই থাকে না। অন্যদিকে পীত বিন্দুতে কেবল কোণ কোষ অবস্থিত ।

৩। অন্ধবিন্দু বর্ণহীন। অন্যদিকে পীতবিন্দু পীত বর্ণের হয়।

৪। অন্ধ বিন্দুতে বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না। অন্যদিকে পীত বিন্দুতে বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয় ।

বিন্দুর বৈশিষ্ট্যঃ

  • বিন্দু হলো জ্যামিতির মৌলিক উপাদান।
  • বিন্দুর কেবল অবস্থান আছে।
  • বিন্দুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা বা বেধ বলতে কিছুই নেই।
  • বিন্দুর একটি বৈশিষ্ট্য হলো বিন্দুর কোনো মাত্রা নেই অর্থাৎ, বিন্দুর মাত্রা শুণ্য।
  • দ্বি-মাত্রিক জ্যামিতি বা সমতল জ্যামিতি  এবং ত্রি-মাত্রিক জ্যামিতি বা ঘন জ্যামিতি উভয় জ্যামিতিতে বিন্দুর অবস্থান আছে।
  • দ্বি-মাত্রিক জ্যামিতিতে বিন্দুর স্থানাঙ্ককে (x,y) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
  • ত্রি-মাত্রিক জ্যামিতিতে বিন্দুর স্থানাঙ্ককে (x,y,z) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
  • বিন্দুর চলার পথ হলো রেখা।
  • বিন্দুর চলার পথ সোজা হলে সরলরেখা হয়।
  • বিন্দুর চলার পথ বাঁকা হলে বক্ররেখা হয়।

বিন্দুর মাত্রা

জ্যামিতিতে বিন্দুর কেবল অবস্থান আছে। অবস্থান ছাড়া এর আর কোন কিছুই নেই অর্থাৎ বিন্দুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং বেধ বা উচ্চতা বলতে কিছুই নেই। আবার এর কোনো পরিসীমা বা পরিধি, ক্ষেত্রফল বা আয়তন তাও নেই। অর্থাৎ বিন্দুর কোনো মাত্রা নেই। তাই বিন্দুর মাত্রা শুণ্য। সুতরাং, বিন্দু শুণ্য-মাত্রিক জ্যামিতির অন্তর্গত।

একটি সমতলে অবস্থিত দুইটি ভিন্ন বিন্দু স্কেল দ্বারা পরস্পর যোগ করলে একটি সরলরেখা পাওয়া যায়।

ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতে বিন্দু

ইউক্লিডীয় জ্যামিতির কাঠামোর মধ্যে, সবচেয়ে মৌলিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্লিড মূলত বিন্দু টিকে “যেটির কোন অংশ নেই” হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। দ্বি-মাত্রিক ইউক্লিডীয় স্থানে, একটি বিন্দুকে সংখ্যার একটি ক্রমযুক্ত জোড়া (x, y) দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়, যেখানে প্রথম সংখ্যাটি প্রচলিতভাবে অনুভূমিককে প্রতিনিধিত্ব করে এবং প্রায়শই x দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং দ্বিতীয় সংখ্যাটি প্রচলিতভাবে উল্লম্বকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং প্রায়শই চিহ্নিত করা হয়। y দ্বারা এই ধারণাটি সহজেই ত্রিমাত্রিক ইউক্লিডীয় স্থানের সাধারণীকরণ করা হয়, যেখানে একটি বিন্দুকে একটি ক্রমানুসারে ট্রিপলেট (x, y, z) দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়।


ইউক্লিডীয় জ্যামিতির মধ্যে অনেক নির্মাণ বিন্দুর একটি অসীম সংগ্রহ নিয়ে গঠিত যা নির্দিষ্ট স্বতঃসিদ্ধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অনুরূপ নির্মাণ বিদ্যমান যা সমতল, লাইন বিভাগ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত ধারণাকে সংজ্ঞায়িত করে। শুধুমাত্র একটি একক বিন্দু নিয়ে গঠিত একটি রেখা খণ্ডকে অধঃপতন রেখা খণ্ড বলে।

সমরেখতা বিন্দু এবং অসমরেখতা বিন্দুর পার্থক্যঃ

সমরেখতা (collinearity) এবং অসমরেখতা (non-collinearity), জ্যামিতি ও স্থানাঙ্ক জ্যামিতির (coordinate geometry) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।


দুই বা ততোধিক বিন্দু যদি একই রেখার ওপর অবস্থিত হয়, তাহলে ঐ বিন্দুগুলোকে সমরেখ বা collinear বলে, আর যদি তারা একই রেখায় অবস্থিত না হয় তাহলে তাদেরকে অসমরেখ বা non-collinear বলে।


উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে একটা ত্রিভুজের তিনটে শীর্ষবিন্দু থাকে। ঐ তিনটে বিন্দু অসমরেখ ।

যদি কোনো তিনটে বিন্দু সমরেখ হয়, তাহলে ত্রিভুজ আঁকা যাবে না । তিনটে বিন্দু সমরেখ কিনা সেটা নির্ণয় করার একটি সূত্র আছে।

ধরা যাক্, তিনটে বিন্দু A, B এবং C র স্থানাঙ্ক যথাক্রমে (x1,y1),(x2,y2),(x3,y3) যদি x1(y2−y3)+x2(y3−y1)+x3(y1−y2)=0 হয়, তাহলে তিনটে বিন্দু A(x1,y1),B(x2,y2),C(x3,y3) সমরেখ হবে, অন্যথায় তারা অসমরেখ।

আরো পড়ুন ;- তরঙ্গ কাকে বলে? তরঙ্গের প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য সমূহ উদাহরণ সহ

বিন্দু সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

বিন্দুর চলার পথকে কি বলে ?

বিন্দুর চলার পথকে রেখা বলে। এই রেখাটি সোজা চলাচল করতে পারে।

আবার আঁকাবাঁকাও চলতে পারে।

যদি রেখাটি দিক পরিবর্তন না করে সোজাসুজি চলাচল করে তবে একে সরলরেখা় বলে।

আর যদি দিক পরিবর্তন করে আঁকাবাঁকা চলতে থাকে তবে একে বক্ররেখা বলে।

সন্ধি বিন্দু কী?

একটি ফাংশনের একটি বিন্দুতে দ্বিতীয় অন্তরজ চিহ্ন পরিবর্তন করলে সেটাকে আনতিবিন্দু বলা হয়।

একটি আনতি বিন্দুতে y = x3 এর x = 0 এর জন্য দ্বিতীয় অন্তরজ শূন্য, হতে পারে বা এটা আনতিবিন্দু x = 0 তে y = x1/3 এর অস্তিত্ব প্রকাশে ব্যর্থ হতে পারে।

একটি আনতি মুহূর্তে, একটি উত্তল ফাংশন ফাংশন অবতল ফাংশনে রূপ নিতে পারে।

Leave a Comment