পাইলস এর চিকিৎসা সমূহ

পাইলস চিকিৎসার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সেই সম্পর্কে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের  আলোচনা পাইলস এর চিকিৎসা সমূহ ৷ আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরেছি।

পাইলস এর চিকিৎসা সমূহ

পাইলস এর চিকিৎসা

ইনজেকশন এবং ইনফ্রারেড চিকিৎসা– যে পাইলস মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসেনা সেসব ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা করা যেতে পারে। এই চিকিৎসা সম্পূর্ণ ব্যাথা মুক্ত।

ব্যান্ড লাইগেশন: এটি  একটি কার্যকরী চিকিৎসা। ব্যান্ড লাইগেশনের মাধ্যমে পাইলসের উপরে একটি ব্যান্ড পড়িয়ে দেয়া হয়, এর ফলে পাইলসের রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে পাইলস ও ব্যান্ড ঝরে পড়ে যায়। ১-২ সপ্তাহের মধ্যে ঘা শুকিয়ে যায়। এই চিকিৎসার পর কিছু ক্ষেত্রে রক্ত যেতে পারে ও মলদ্বারে অস্বস্তিও হতে পারে। 

টি এইচ ডি অপারেশন– এটি পাইলসের অত্যাধুনিক অপারেশন।এই অপারেশনে পাইলস কাঁটা হয়না, একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাইলসে রক্ত সরবরাহকারি ধমনী বন্ধ করে দেয়া হয় ও মলদ্বারের যে অংশ নিচে নেমে আসে সে অংশকে তার স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এই অপারেশনে ব্যাথা কম থাকে, সিজ বাথ বা ড্রেসিং দরকার হয়না।

লংগো অপারেশন: 

এই পদ্ধতিতে একটি বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ পাইলস কেটে নিয়ে আসা হয়। এই অপারেশনের পর রক্তপাত বা পাইলস বের হয়ে আসে না। অপারেশনের ৩-৪ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক কাজ করা যায়। 

পাইলস এর লক্ষণ সমূহ

পাইলস এর অপারেশন

সাধারণত ৩ ধরনের অপারেশন করা হয়ে থাকে—

১. হেমোরয়েডেকটোমি: এই অপারেশনের মাধ্যমে পাইলস এর গোটাগুলো কেটে অপসারণ করা হয়। 

২. স্টেপলড হেমোরয়েডোপেক্সি: এই পদ্ধতিতে সার্জারির মাধ্যমে পাইলস এর গোটাগুলো পুনরায় পায়ুপথের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।

৩. হেমোরয়েডাল আর্টারি লাইগেশন: এক্ষেত্রে পাইলস এর গোটাগুলোর রক্ত সরবরাহ অপারেশনের মাধ্যমে বন্ধ করে দেয়া হয়, যাতে গোটাগুলো শুকিয়ে যায়।

এসব অপারেশনের জন্য সাধারণত এনেসথেসিয়া বা চেতনানাশক ব্যবহার করে রোগীকে অজ্ঞান করা হয় এবং সার্জারির পর দুই-একদিন হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন হতে পারে।

পাইলস এর ব্যাথা কমানোর উপায়

পাইলস এর ব্যথা উপশম করতে প্যারাসিটামল ঔষধ খাওয়া যেতে পারে। এই ব্যথায় কার্যকরী অন্যান্য ঔষধ ও মলম পাওয়া যায়, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। ঘরোয়া পদ্ধতিতে অর্শ রোগের ব্যথা কমানোর ৪টি উপায় নিচে তুলে ধরা হলো—

১. ব্যথার জায়গাটি কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যায়। ছোট বাচ্চাদের গোসল করানো হয় এমন আকারের একটি বোলে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেখানে বসতে পারেন। দিনে ৩ বার পর্যন্ত এটি করা যায়। অন্য সময়ে কোথাও বসতে গেলে একটি বালিশ ব্যবহার করে সেটার ওপর বসা যেতে পারে।

২. একটা প্যাকেটে কিছু বরফ নিয়ে সেটা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে পায়ুপথে গোটাগুলোর ওপরে লাগানো যায়। এতে আরাম পাওয়া যাবে।

৩. বিছানায় শুয়ে পা উঁচু করে রাখলে পাইলস এর গোটাগুলোতে রক্ত চলাচল সহজ হবে ও ব্যথা উপশম হবে। শোবার সময় পায়ের নিচে বালিশ দিতে পারেন। এছাড়া খাটের পায়ার নিচে কোন কিছু দিয়ে খাটের এক পাশ উঁচু করে সেদিকে পা দেওয়া যেতে পারে।

৪. পায়ুপথ সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখতে হবে। মলত্যাগের পর জোরে ঘষাঘষি না করে আলতোভাবে জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। টয়লেট পেপার হালকা ভিজিয়ে তারপর সেটা দিয়ে মুছতে পারেন।

পরিশেষে আশা করা যায় যে পাইলস এর চিকিৎসা সমূহ বিষয়টি সুন্দরভাবে বুঝতে পারছেন। এছাড়া বুঝতে সমস্যা হলে  নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কমেন্ট করে সমস্যাটি জানানোর অনুরোধ রইলো। আর যদি এটি ভালো ভাবে বুঝে থাকেন তা হলেও মন্তব্য করতে পারেন।

Leave a Comment